সিরিয়ায় বাশারের পক্ষে সেনা পাঠাচ্ছে ইরান!

দামেস্কের জোবার এলাকায় বিদ্রোহীদের অবস্থানে সরকারি
বাহিনীর বোমাবর্ষণের পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এএফপি
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পক্ষে লড়াই করতে দেশটিতে সেনা পাঠানোর কথা বিবেচনা করছে ইরান। দামেস্ক অনুরোধ করলেই সেনা পাঠাবে তেহরান। ইরান ইতিমধ্যে সিরিয়া এবং ইরাকে অস্ত্র ও সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিরিয়া সফরের সময় ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। রাশিয়ার পর ইরানই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের সবচেয়ে বড় মিত্র। রাশিয়া ইতিমধ্যে বাশারের পক্ষে সিরিয়ায় অভিযান শুরু করেছে। বিভিন্ন সময় ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে সিরিয়ায় সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জাম পাঠানোর অভিযোগ উঠলেও গতকালের মতো সরাসরি বক্তব্য এর আগে ইরান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কখনোই আসেনি। ইরানের পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আলাদিন বোরোউজার্দি গতকাল বলেন, ‘সিরিয়া যদি সেনা চেয়ে অনুরোধ জানায়, তাহলে আমরা সেই অনুরোধ বিবেচনা করব এবং একটা সিদ্ধান্ত নেব।’ তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইরান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাপারে আন্তরিক। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিরিয়া ও ইরাকে অস্ত্র সরবরাহ করেছি এবং সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছি।’ মস্কোর অভিযানের কথা উল্লেখ করে আলাদিন বোরোউজার্দি বলেন, সিরিয়ায় চলমান ‘সামরিক অভিযান’ দেশটিতে ‘একটি রাজনৈতিক সমাধান ও শান্তি প্রতিষ্ঠার’ প্রতি সমর্থন জানাতেই পরিচালিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শত শত কোটি ডলার ব্যয় করেও দেশটি সিরিয়ায় ব্যর্থ হয়েছে।
সিরিয়ার সামরিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হাজার হাজার ইরানি সেনা যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় সামরিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। তারা তেহরান-সমর্থিত লেবাননের কট্টরপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে এক হয়ে প্রেসিডেন্ট বাশারের শক্তি বৃদ্ধি করবে। হোমস শহরে ফের অভিযান: রাশিয়ার বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে হোমস প্রদেশে গতকাল নতুন করে অভিযান শুরু করেছে বাশার বাহিনী। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, হোমস প্রদেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। টেলিভিশনে দাবি করা হয়, সরকারি বাহিনী ওই এলাকার দুটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, রুশ হামলায় হোমসে ৬ জন বিদ্রোহীসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। রাশিয়া হোমসে অন্তত ১৫টি হামলা চালিয়েছে। মস্কো-ওয়াশিংটন আলোচনা: সিরিয়ার আকাশে নিজেদের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনার পর একটি সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। মার্কিন প্রতিরক্ষাবিষয়ক কর্মকর্তারা জানান, গত বুধবার এ বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এতে দুই পক্ষ অনেকটা কাছাকাছি পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় পুতিন: সিরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে ‘ধ্বংসপ্রবণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল কাজাখস্তান সফরের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। সিরিয়া ইস্যুতে মস্কোর সঙ্গে আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে পুতিন ওই মন্তব্য করেন। এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালেক্সি মেসকভ বলেছেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কুর্দিসহ ‘গঠনমূলক সব পক্ষের’ সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি আছে মস্কো।

No comments

Powered by Blogger.