সুলাওয়েসি দ্বীপের গুহাচিত্র বদলে দেবে ইতিহাস?
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে নতুন আবিষ্কৃত গুহাচিত্রগুলোর একটি। এএফপি |
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে বহু প্রাচীন কিছু গুহাচিত্রের খোঁজ মিলেছে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর মধ্যে একটি গুহাচিত্র কমপক্ষে ৪০ হাজার বছরের পুরোনো। তাঁদের ধারণা, মানুষের শিল্পচর্চার ইতিহাসই বদলে দিতে পারে এ আবিষ্কার। খবর বিবিসির। ইন্দোনেশিয়ায় এ গুহাচিত্রগুলোর আবিষ্কারকে এ জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে যে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের শুরু সম্পর্কে ধারণা মিলবে এসব চিত্রকর্ম থেকে। নতুন এই আবিষ্কারের আগে বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে স্পেন ও দক্ষিণ ফ্রান্সের গুহাচিত্রকেই সবচেয়ে পুরোনো হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সুলাওয়েসির গুহাচিত্রগুলো শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত গবেষকেরা বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারকে বলেছেন, আদিম মানুষ কীভাবে ছবি আঁকার সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে দেবে এই আবিষ্কার। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চিত্রকর্ম সৃষ্টি এবং চিন্তা করতে পারার মতো সক্ষমতাই অন্য প্রাণীদের কাছ থেকে মানুষকে পৃথক করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় গুহাচিত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে,
কালপ্রবাহের কোন পর্যায়ে এবং বিশ্বের ঠিক কোথায় মানুষের এই বিকাশের শুরু হয়েছে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। সুলাওয়েসির ওই গুহার ছাদে কিছু রঙিন নকশার স্তর শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এগুলো মানুষের হাতের ছাপ দিয়ে তৈরি। দেখা যাচ্ছে সেই সময়ের অজানা শিল্পীরা হাতের জোরালো চাপ দিয়ে গুহার দেয়াল এবং ছাদে নকশা তৈরি করতেন। এসব নকশার মধ্যে মানুষের শরীর এবং বন্য প্রাণীর ছবিও রয়েছে। স্পেনের গুহাচিত্রের সঙ্গে সুলাওয়েসির গুহাচিত্রের মিল আছে। দুটির বয়সও কাছাকাছি। সুলাওয়েসি দ্বীপে যেসব গুহাচিত্র পাওয়া গেছে এর কোনোটি ৩৯ হাজার বছর, আবার কোনোটি ৩৫ হাজার ৪০০ বছরের পুরোনো। গুহার ভেতরে ২৭ হাজার বছরের পুরোনো চিত্রকর্মও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বীপের বাসিন্দারা কমপক্ষে ১৩ হাজার বছর ধরে এসব চিত্র এঁকেছেন। তবে সুলাওয়েসির সব গুহাচিত্রের বয়স এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। সুলাওয়েসির গুহাচিত্রের বয়স নিয়ে কাজ করা গবেষক দলের একজন অ্যাডাম ব্রুম্যান বলেন, এশিয়ার অনেক গুহাচিত্র বহু পুরোনো হলেও সেগুলোর বয়স এখনো সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যায়নি।
No comments