বাংলাদেশে রাজনীতি শক্তিশালী করতে মার্কিন বরাদ্দ: কঠোর সমালোচনায় ডনাল্ড ট্রাম্প

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।  শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশি সহায়তা বাবত ভারত, মোজাম্বিক, নেপাল সহ বিভিন্ন দেশকে ইউএসএইড’র মাধ্যমে যে সহায়তা দেয়া হতো তার সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, এসব খাতে ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রের লাভ কি। তা বরং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ব্যয় করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশকে দেয়া ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার বাতিল করে ট্রাম্প সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডজ)। শুক্রবার গভনরর্স ওয়ার্কিং সেশনে বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে দেয়া হয়েছে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার। তা এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে, যার নাম কেউ শোনেনি। তারা পেয়েছে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার। তারা একটি চেক পেয়েছে। আপনারা কল্পনা করতে পারেন? আপনার সামনে একটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান আছে। আপনি এখান থেকে ১০ হাজার, ওখান থেকে ১০ হাজার পান। তারপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার পান। ওই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন দু’জন মানুষ। আমি মনে করি তারা খুব খুশি এবং তারা খুব ধনী। মহৎ হওয়ার জন্য খুব তাড়াতাড়ি তারা একটি ভালো ব্যবসা-বিষয়ক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে চলে আসবেন’। উল্লেখ্য, ডনাল্ড ট্রাম্প শুধু যে বাংলাদেশের সমালোচনা করেছেন এমন নয়। তিনি ভারতে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করার জন্য দুই কোটি ১০ লাখ ডলার তহবিল দেয়া নিয়েও সমালোচনা করেছেন। টানা তৃতীয় দিনের মতো তিনি ভারতের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। প্রশ্ন রাখেন কেন বিদেশে এত বড় অংকের অর্থ খরচ করা হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রেই ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য একই রকম প্রচেষ্টা নেয়া যেতে পারে? তিনি বলেন, ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদির কাছে যাচ্ছে প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ ডলার। আমরা ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দুই কোটি ১০ লাখ ডলার দিচ্ছি। এতে আমাদের কি উপকার হবে? আমারও তো ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য আমাদেরকে কেন দুই কোটি ১০ লাখ ডলার ব্যয় করতে হবে? আমার তো মনে হয় তারা কাউকে নির্বাচিত করার চেষ্টা করছিল। ভারত সরকারকে আমাদের বলতে হবে। কারণ, যখন আমরা শুনতে পাই যে, আমাদের দেশে রাশিয়া প্রায় দুই হাজার ডলার খরচ করে, তখন বিষয়টি একটি ‘বিগ ডিল’। দুই হাজার ডলারে তারা ইন্টারনেটে কিছু বিজ্ঞাপন দেয়। এর পুরোটাই মাইলফলক। এর একদিন আগে এই তহবিলকে একটি ‘কিকব্যাক স্মিম’- বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প।

এরপরই বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। অনলাইন ফক্স নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের একঘণ্টা ২২ মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিও রয়েছে। উল্লেখ্য, ডনাল্ড ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় আসার পরই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল খরচ কমানোর জন্য গঠন করেছেন ডজ। এর প্রধান করা হয়েছে বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ককে। বিভিন্ন দেশে ইউএসএইড’র মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থ খরচ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করে ডজ। উল্লেখ্য, এর আগে ডজ যেসব দেশের জন্য বরাদ্দ বাতিল করে তার মধ্যে ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ১০ লাখ ডলার। নেপালে ফেডারেলিজম এবং জীববৈচিত্র্য বিষয়ক প্রজেক্টে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। দক্ষিণ আফ্রিকায় অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২৫ লাখ ডলার। মালিতে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল এক কোটি ৪০ লাখ ডলার। এমনিতরো বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্সদাতাদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এক্সে ডজ জানিয়েছে এসব বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, মালি, লাইবেরিয়া, মোজাম্বিক, মিশর সহ বিভিন্ন দেশ।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.