ছাত্র রাজনীতি কিছু প্রস্তাব by প্রফেসর ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অতিসমপ্রতি এক জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করেছে। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে একটি বিরূপ মনোভাব সমাজে রয়েছে। তাই আপাতদৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক নেয়া সিদ্ধান্তটি বেশ জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত বলেই মনে হচ্ছে। আমার কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত এই সিদ্ধান্তটিকে ‘জনপ্রিয় ভুল সিদ্ধান্ত’ বলেই মনে হয়। ছাত্রাবস্থায় ছাত্ররাজনীতির এবং কর্মজীবনে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত একজন ব্যক্তি হিসেবে তাই আমার নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে শেয়ার করে ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করছি।

আমি ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকা অবস্থায়। শুধু যুক্ত ছিলাম বললে পুরোটা বলা হয় না, বরং বলা উচিত ছাত্ররাজনীতিতে আমি অত্যন্ত সক্রিয় ছিলাম এবং একাধিকবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি ও নির্বাচিত হয়েছি। ছাত্ররাজনীতিতে এই সক্রিয়তা সত্ত্বেও আমি স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হই। সুতরাং, ক্যাম্পাসে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলেই একজন শিক্ষার্থীর লেখাপড়া উচ্ছন্নে যাবে কিংবা উচ্ছন্নে যাওয়া শিক্ষার্থীরাই কেবল ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হয়- এ ধরনের বক্তব্যগুলো আমার কাছে অতিসরলীকরণ বলেই মনে হয়। অবশ্য এই রকম অতিসরলীকরণ যারা করেন, তাদেরকে খুব দোষও দেয়া যায় না। গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ছাত্ররাজনীতির নামে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যে ধরনের বখাটেপনা, নিপীড়ন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা দেখে আসছি, তাতে করে ওই ধরনের অতিসরলীকরণে আকৃষ্ট হওয়াটা মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস তো কেবল এই দুই যুগের ইতিহাসই নয়। বরং, এই দুই যুগকে বলা যায় ক্যাম্পাসে ‘গ্রহণযোগ্য ছাত্ররাজনীতির অনুপস্থিতির দুই যুগ’। ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস আরও অনেক বিস্তৃত যেখানে পাওয়া যাবে নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণী; আবার সেই সঙ্গে পাওয়া যাবে অহংকার করার মতো সংগ্রামের ইতিহাসও।

আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হয় ১৯৮৯ সালের ১৬ই অক্টোবর। কলেজে থাকাকালেই ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই ছাত্ররাজনীতিতে স্বেচ্ছায় এবং উৎসাহের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। সেই সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা জাকসুতে নেতৃত্ব দিচ্ছিল তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, আর ক্যাম্পাসের একক বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বছর ঘুরতেই আবার জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হলো এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জাকসু এবং হল সংসদসমূহের প্রায় সকল পদেই জয়ী হয়। এই সময়ে পরপর তিনটি নির্বাচনেই (১৯৯০-৯১, ৯১-৯২, ৯২-৯৩) ছাত্রদল জাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়। যতদূর মনে পরে, সর্বশেষ নির্বাচনে সব মিলিয়ে মোট ১০৬টি পদের মধ্যে ১০৪টিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিজয়ী হয়। এ সবক’টি নির্বাচনেই আমি নিজে অংশগ্রহণ করেছি এবং বিজয়ী হয়েছি। এই বিবরণ দেয়ার কারণ হলো এটা দেখানো যে, ঐ সময়ে ছাত্রদলের যে দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল তা নিছক সন্ত্রাস বা সরকারি ক্ষমতানির্ভর ছিল না। বরং সংগঠনটি সত্যিকার অর্থেই ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এই অতলস্পর্শী জনপ্রিয়তা এরশাদ জামানার মাধামাঝি সময় থেকে শুরু হয় এবং পরে তা বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের আমলে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন হিসেবেও অব্যাহত থাকে।
সরকার সমর্থক একটি ছাত্র সংগঠনের দোর্দণ্ড প্রতাপ থাকা সত্ত্বেও সেই সময়ের অন্তত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিকে গত দুই যুগের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে মোটেও মেলানো যাবে না। স্বীকার করতেই হবে যে, তখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দোকানে বাকি রাখার ঘটনা ছিল, হুমকি-ধামকির ঘটনা ছিল, গ্রুপিং ছিল, হলে পছন্দের সিট বরাদ্দ লাভ নিয়ে বচসা ছিল (তখন সকল শিক্ষার্থীই হলে সিট পেতো এবং গণরুম জাতীয় কিছু ছিল না), প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ছিল, এমনকি কিছুটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও ছিল। কিন্তু, এসব সত্ত্বেও তখন পারস্পরিক সহমর্মিতা ছিল, সহনশীলতা ছিল, যূথবদ্ধতা ছিল। সর্বোপরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়মিত ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া ছিল।

ছাত্ররাজনীতির এই যে একটি মোটামুটি গ্রহণযোগ্য অবস্থা তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল, এটি কি করে সম্ভব হয়েছিল? আমার মতে এর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, তখন ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ছিল কেবল নিয়মিত শিক্ষার্থীরা যারা কিনা সকালে ক্লাস করতো, টিউটোরিয়াল পরীক্ষা দিতো, বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতো, সন্ধ্যায় মিছিল করতো আর রাতে পরের দিনের পরীক্ষার জন্য পড়তে বসতো। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ইয়ারড্রপ দিলে তখন সংগঠনে পদ থাকতো না। স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত মোট দুইবারের বেশি ইয়ারড্রপ হলে একজন শিক্ষার্থী সংগঠনে পদ ধরে রাখতে পারতো না এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো না। আমি নিজে একজন জাকসু ভিপিকে দেখেছি নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গেই স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ করে ভিপি থাকা অবস্থাতেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে। ঐ সময়ে প্রথম বর্ষ থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণি পর্যন্ত নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দ্বারা ছাত্র সংগঠনগুলোর কমিটি গঠিত হতো, আদুভাইদের কোনো স্থান ছিল না। আসলে আদুভাই বলে কোনোকিছু তখন ছিলই না। ছাত্র সংগঠনগুলোর কমিটিগুলো গঠিত হতো সংগঠনের কর্মীদের কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, উপর থেকে কোনো কমিটি চাপিয়ে দেয়া হতো না। আর নিয়মিত জাকসু নির্বাচন থাকায় রাজনীতি সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘মারমুখী ক্যাডার’ হওয়ার চেয়ে জনপ্রিয় ছাত্রনেতা হওয়ার চেষ্টা বেশি থাকতো যার সদর্থক প্রভাব ছাত্রনেতাদের আচরণে স্পষ্ট হতো।

এমন ছাত্ররাজনীতি কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে, নাহলে অন্তত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়? আমি মনে করি সেরকম একটা চেষ্টা নেয়া যেতে পারে। আর সেই ধরনের কোনো চেষ্টা যদি থাকে, তাহলে সেই প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য আমি আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে কিছু প্রস্তাবনা রাখতে চাই।
১. সকল ছাত্র সংগঠনকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভ করতে হবে। অননুমোদিতভাবে কোনো ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল হতে পারবে না।
২. কেবলমাত্র নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংগঠনের সদস্য হতে পারবে। এমফিল বা পিএইচডি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্র সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
৩. ছাত্র সংগঠনের কমিটিগুলো নিয়মিত ছাত্রদের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে গঠিত হতে হবে। ক্যাম্পাসের বাইরের কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের দ্বারা কোনো কমিটি চাপিয়ে দেয়া যাবে না। কমিটির আপডেট কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। অন্যথায়, এ ধরনের কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকৃতি পাবে না।
৪. কোনো ছাত্র সংগঠনের কোনো কর্মী সাংগঠনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিক-মানসিকভাবে নিপীড়ন করলে কর্তৃপক্ষ নিপীড়নকারীর বিচারের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে ঐ ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে স্থগিত করার অধিকার সংরক্ষণ করবে।
৫. স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ইয়ারড্রপ দিলে সংগঠনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর পদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঐ শিক্ষার্থীকে কোনো সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।
৬. স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দুই বারের বেশি ইয়ারড্রপ দিলে কোনো শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব থাকবে না এবং সেই ‘ব্যক্তি’ তাৎক্ষণিকভাবে ‘সাবেক শিক্ষার্থী’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তার হলের সিট বাতিল হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ‘সাবেক শিক্ষার্থীকে’ অবশ্যই সাবেক হয়ে যাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে।
৭. নিয়মিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। ছাত্র সংসদসমূহের মেয়াদ হবে এক বছর। বছরান্তে পরবর্তী নির্বাচনের আগেই ছাত্র সংসদ বিলুপ্ত হতে হবে। ছাত্র সংসদের কোনো পদে থাকা অবস্থায় কোনো শিক্ষার্থীর স্নাতকোত্তর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে গেলে, ঐ শিক্ষার্থী ছাত্র সংসদের ঐ পদে আর থাকবেন না।
৮. কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদ নির্বাচনে একজন শিক্ষার্থী দলীয় ভিত্তিতে বা দলনিরপেক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকলেও কোনো প্রার্থী নির্বাচনী পোস্টার/ব্যানার/প্রচারপত্রে জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি ব্যবহার করতে পারবে না।
৯. নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ছাত্রদের মধ্য হতে ৫ জন সিনেট সদস্য মনোনীত করতে হবে।
১০. শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে হল প্রশাসন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবে। এখানে এমনকি নির্বাচিত হল ছাত্র সংসদেরও কোনো ভূমিকা থাকবে না। প্রতিটি শিক্ষার্থীর হলে সিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব নেবে হল প্রশাসন। সকল কক্ষে সমসংখ্যক শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দিতে হবে। বরাদ্দকৃত সিটে শিক্ষার্থীর দখল পাওয়ার বিষয়টি হল প্রশাসন নিশ্চিত করবে।
১১. হল প্রশাসন হলে হলে গণরুম বিলুপ্ত করবে এবং গেস্টরুমগুলোতে সিসিটিভি স্থাপন করবে।
১২. হলের ছাত্র সংসদের সহযোগিতায় হল প্রশাসন ডাইনিংয়ের খাবার মান উন্নত করবে।
১৩. সকল প্রকার র‌্যাগিং এবং নিপীড়নের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করার উদ্যোগ নিতে হবে এবং তদন্ত প্রতিবেদন (যতটুকু প্রকাশযোগ্য) ও শাস্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে নোটিশ দিয়ে সকলকে অবহিত করতে হবে।  
১৪. ক্যাম্পাসে সকল ধরনের সামাজিক- সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক কর্মকাণ্ডকে প্রশাসনিকভাবে উৎসাহিত করতে হবে।
১৫. শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ‘ক্যাম্পাস কমিটি’ গঠন করতে হবে যা ক্যাম্পাসের বিবিধ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ/প্রস্তাব দিবে।
আমি মনে করি, নতুন লব্ধ দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর গুরুতর সংস্কার সাপেক্ষে ছাত্ররাজনীতিকে অনুমোদন দিয়ে আমরা আরেকবার দেখতে পারি। স্বৈরাচারের যুগে ছাত্ররাজনীতি আসলে উপস্থিত ছিল না। সুতরাং, সেই ছাত্ররাজনীতি দিয়ে গোটা ছাত্র রাজনীতিকে বিচার করা অতিসরলীকরণ হয়ে যাবে। স্বৈরাচার-পূর্ব সময়েও যে ছাত্ররাজনীতি খুবই আদর্শিক ছিল তেমন দাবি আমি করিনি। তবে কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্য এক ধরনের ছাত্ররাজনীতির বাস্তব উদাহরণ আমি এই লেখায় দিয়েছি। ৫ই আগস্ট পরবর্তী বাস্তবতায় আমার দেয়া উদাহরণের চেয়েও অনেক ভালো ছাত্ররাজনীতি সংস্কার সাপেক্ষে সম্ভব হতে পারে বলে বিশ্বাস রাখি। এই বিশ্বাস থেকে আমি ছাত্ররাজনীতির পক্ষে। ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে আপনি যতটা শক্তি ব্যয় করবেন, তার চেয়ে অনেক কম শক্তি ব্যয় করে আপনি কিন্তু এখানে গুরুতর সংস্কার সাধন করতে পারবেন। অতএব, আরেকটু ভেবে সিদ্ধান্ত নিন।
লেখক: দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

mzamin

No comments

Powered by Blogger.