প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্পের ব্যবসায় রমরমা

নতুন এক আয়কর বিবরণী প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, বর্তমানে ট্রাম্পের অন্তত ১.৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। এদিকে গত এক বছরে তিনি প্রায় ৩৫ কোটি ডলার আয় করেছেন। অন্যদিকে প্রায় ৩২ কোটি ডলার ঋণ রয়েছে তার। শুক্রবার অফিস অব গভর্নমেন্ট এথিকসে জমা দেয়া এক সম্পদ বিবরণীতে নিজের সম্পদের এ হিসাব জানিয়েছেন ট্রাম্প। সম্পদ বিবরণী মতে, তার এ সম্পদের বেশিরভাগই রিয়েল এস্টেট ও হোটেল ব্যবসা থেকে এসেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার ব্যবসা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গলফ ক্লাব, হোটেলের ব্যবসা ও বই বিক্রি থেকে প্রচুর অর্থ আয় করেছেন তিনি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ট্রাম্পের জন্য আশীর্বাদের কারণ হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, ট্রাম্প তার সম্পদকে একটা রাজনৈতিক ব্রান্ড হিসেবে ব্যবহার করেছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নৈতিকতার অভিযোগ ও আইনি চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ব্যবসার দায়িত্ব ছাড়তে অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প তার সব ব্যবসায় সম্পদ একটি ট্রাস্টের অধীনে দিয়ে দেন। ট্রাস্টটি তার দুই ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র ও এরিকের ব্যবস্থাপনায় থাকলেও যখন খুশি তখন ট্রাম্প অর্থ উত্তোলন করতে ও বিনিয়োগ করতে পারেন। গত বছরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছিলেন তার ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। তবে মোট সম্পদের পরিমাণ ঠিক কত তার এ সম্পদের বিবরণী থেকে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প স্বাক্ষরিত ৯৮ পৃষ্ঠার সম্পদের বিবরণী মতে, গত এক বছরে ট্রাম্পের মোট সম্পদের পরিমাণ কমেছে। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রকাশিত সম্পদ বিবরণীতে ট্রাম্প দেখান, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১.৫ বিলিয়ন ডলার। তবে আগের বছরের ন্যায় এ বছরও কোনো আয়কর বিবরণী প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। সিএনএন জানিয়েছে, গত এক বছরে ট্রাম্প প্রায় ৩৫ কোটি ডলার আয় করেছেন। শুধু গলফ ক্লাব থেকে গত এক বছরে তার আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এছাড়া ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো হোটেল থেকে আয় করেছেন ৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর হোটেলটির সদস্য ফি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ওয়াশিংটনের বিলাসবহুল হোটেল থেকে ট্রাম্পের আয় হয়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে হোটেলটি উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া বইয়ের রয়্যালটি থেকে ৭০ লাখ ডলার, মিস ইউনিভার্স সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে ১ কোটি ১০ লাখ এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরর্স গিল্ড থেকে ভাতা হিসেবে ৮৪ হাজার ডলার আয় করেছেন তিনি। তবে গত এক বছরে বিরাট অঙ্কের ডলার আয় করলেও ট্রাম্পের ঋণের বোঝাও কম নয়। সম্পদ বিবরণীতে ট্রাম্প দেখিয়েছেন, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার ৩২ কোটি ডলারের মতো ঋণ রয়েছে। তবে সম্পদ বিবরণীতে ঋণের যে পরিমাণ দেখানো হয়েছে, তা ট্রাম্পের প্রকৃত ঋণের চেয়ে অনেক কম। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ট্রাম্পের প্রকৃত ঋণের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ঋণের যে দলিলপত্র রয়েছে, তাতে দেখা যায়, ট্রাম্পের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি ডলার।
No comments