সিলেট উইমেন্স চেম্বারের বসন্ত উৎসব উদ্যাপন
শীত শেষে এল বসন্ত। তাই পিঠার পসরায়ও বসন্তের ছাপ। ডাল, খেজুর, সন্দেশ, নারকেল দিয়ে নানা স্বাদের নানা পিঠার সঙ্গে ছিল মাছের পিঠাও। রুই মাছ দিয়ে তৈরি নতুন এ পিঠায় যেন বসন্তের আমেজ। এভাবে শুধু পিঠা বা খাবারদাবার নয়, বসন্তের আবাহন নিয়ে প্রকৃতিনির্ভর নৃত্য, নারী উদ্যোক্তাদের সম্মাননা জানানোসহ দিনভর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বসন্ত উৎসব উদ্যাপন হয়। নগরের কেন্দ্রস্থলে পুলিশ লাইনস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সকাল ১০টায় মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এস এম নুনু মিয়া, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শামীম আহমদ, সিলেট ক্লাবের সভাপতি শোয়েব চৌধুরী ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ওয়েছ খছরু উপস্থিত ছিলেন।
বাঙালির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে শহুরে জীবনে এ ধরনের আয়োজন বিরল অভিহিত করে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্য পিঠাপুলি আজ হারাতে বসেছে। এ আয়োজন আমাদের আবার সেই ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিল। শহুরে জীবনে যেন ফিরে এল গ্রামবাংলার পিঠাপুলির সেই বর্ণিল উৎসব।’ সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি স্বর্ণলতা রায় জানালেন এই উৎসব আয়োজনের আরেকটি উদ্দেশ্যের কথা। তিনি বলেন, ‘আমরা এ উৎসবের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের নারী উদ্যোক্তাদের একত্র করতে পেরেছি। নারী উদ্যোক্তারা সব সময়ই নতুনত্ব নিয়ে এগোচ্ছেন। পিঠাপুলিতেও এর ছাপ পড়েছে। বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে নারীদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে অর্থনীতিতেও তাঁদের অবদান থাকবে।’ উদ্বোধনী পর্বে উইমেন্স চেম্বারের পক্ষ থেকে রন্ধনশিল্পী সাবরিনা খানকে ‘তারুণ্য’, সিলেটের নারী ফটোসাংবাদিক বিলকিস আক্তার সুমিকে ‘নির্ভীক’ ও কণ্ঠশিল্পী লাবলী দেবকে ‘সৃজনশীল’ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। উৎসব উদ্বোধনের পরই বসন্তের প্রকৃতি উপজীব্য করে চলে সাংস্কৃতিক আয়োজন। নৃত্যের ঝংকারে পুরো আয়োজনে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবমুখরতা। সেই সঙ্গে শিশু–কিশোরদের নিয়ে চলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। এ পর্বে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. রোকন উদ্দিন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও সেরা পিঠা প্রদর্শনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
No comments