সরকার গঠনে আবারও ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প
প্রশাসন গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আবারও ধাক্কা খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কের জেরে ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ দিনের মাথায় হারাতে হয়েছে তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে। এবার তাঁর জায়গায় মনোনয়ন দিতে গিয়ে নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল রবার্ট হারওয়ার্ডের কাছে প্রত্যাখ্যাত হতে হলো ট্রাম্পকে।
এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প বলেছেন, বিদেশিদের ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তিনি আবারও নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নিয়েছেন প্রায় এক মাস হতে চলল। এখনো সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় তেমন এগোতে পারেননি। একের পর এক বিতর্কের ধাক্কা এর অন্যতম কারণ। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে আইনবহির্ভূতভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কথা বলে বিদায় নিতে হয় ফ্লিনকে। তাঁর শূন্যস্থান পূর্ণ করতে রবার্ট হারওয়ার্ডকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হারওয়ার্ডের এই প্রত্যাখ্যান ট্রাম্পকে আপাতত অসহায় করে দিয়েছে। কারণ, এই মুহূর্তে ফ্লিনের কোনো বিকল্প তাঁর কাছে নেই। তবে এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এখন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কিথ কেলগকে নিজের চার সদস্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের একজন করার কথা ভাবছেন। ট্রাম্পকে প্রত্যাখ্যান করার ব্যাখ্যায় হারওয়ার্ড মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, তিনি পারিবারিক ও আর্থিক দায়দায়িত্ব-সংক্রান্ত কারণে নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ পদটি নিতে পারছেন না। তবে বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ নীতি নির্ধারণের দায়িত্বে থাকবে—এ মর্মে কোনো নিশ্চয়তা না পাওয়াতেই পিছিয়ে গেছেন হারওয়ার্ড। হারওয়ার্ডের এক বন্ধু অবশ্য সিএনএনের কাছে দাবি করেন,
হোয়াইট হাউসের বর্তমান বিশৃঙ্খল অবস্থা হারওয়ার্ডের পছন্দ নয়। আর এ কারণেই তিনি প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ফ্লিনের পদত্যাগের পর ট্রাম্পের বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পায়। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগের যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমার কিছু করার নেই। পুরো রাশিয়াই চাতুরীতে পূর্ণ।’ ফ্লিনের কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁসের জন্য এ সময় উল্টো মার্কিন গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধেই আইন ভাঙার অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাত দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জারি করা এর আগের নির্বাহী আদেশটিকে প্রতিস্থাপিত করতে নতুন আদেশ দেবেন তিনি। ট্রাম্পের আগের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলমান মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপিল বিভাগের নবম সার্কিট আদালত। এক আদেশে আদালত বলেন, পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণের জন্য কার্যক্রমটি স্থগিত করা হয়েছে। এই হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্যে ট্রাম্পের মনোনীত পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থার প্রধান স্কট প্রুইট গতকাল সিনেটে ৫২-৪৬ ভোটে অনুমোদন পেয়েছেন।
No comments