পাকিস্তানের আঞ্চলিক অবস্থান যে কোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী by সালমান রাফি শেখ
অগণিত
অর্থনৈতিক সমস্যা – স্বল্প বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ, আইএমএফের ঋণ, বিদেশী
ঋণ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ভঙ্গুর অবস্থা – এগুলো
সত্বেও পাকিস্তানের আঞ্চলিক অবস্থান এখন এমন একটা শক্তিশালী জায়গায় গিয়ে
পৌছেছে যেটা গত দুই দশকের মধ্যে ছিল না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের
আনুষ্ঠানিক ‘বিচ্ছিন্নতার’ নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও ইসলামাবাদ তাদের
আঞ্চলিক অবস্থানকে ভারতের চেয়েও পোক্ত করেছে, যদিও পাকিস্তানের পূর্বের
প্রতিবেশী দেশটিকে সবসময়ই প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের নতুন
কৌশলে গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হচ্ছে।
কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্ত করতে ভারত যে চেষ্টা করেছিল, সেটা ঠেকানোর ব্যাপারে পাকিস্তানের সাফল্য এই পরীক্ষায় উৎরে গেছে। যদিও আইসিজেতে যাওয়ার পরিকল্পনাটা ভারতেরই ছিল। ভারত পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসার প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করে এসেছে এবং এরই ফলশ্রুতিতে আইসিজের দ্বারস্থ হয়েছে। মোদি সরকারের অব্যাহত পাকিস্তান-বিরোধী অপপ্রচার এবং এর পরিণতিতে পাকিস্তানকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার যে নীতি তারা নিয়েছে, সেটার কারণে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার প্রস্তাবকে তারা প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ভারতীয় নীতির একটি ভিত্তি হলো তাদের এই অপপ্রচার যে পাকিস্তান এই অঞ্চলে ‘সন্ত্রাসকে সহায়তা দিচ্ছে’। আইসিজেতে যে বিচার হলো, সেখানে তার উল্টো চিত্র উঠে এসেছে এবং সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতই বরং এ অঞ্চলে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারটা এখন তাদের নিজেদের ঘাড়ে গিয়ে পড়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোন পরাশক্তিই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অপপ্রচারকে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। তার অতি সাম্প্রতিক বহিপ্রকাশ হলো আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার উচ্চ পর্যায়ের টেবিলে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো। শুধু তাই নয় এই প্রক্রিয়া থেকে ভারত সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। তাছাড়া আফগান দৃশ্যপট থেকেও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভারত এবং আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করার ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর মতো কোন প্রভাবও ভারতের নেই।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে চারপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে, সেখান থেকেই বোঝা গেছে যে আফগানিস্তানে ১৭ বছরেরও বেশি মার্কিন যুদ্ধের অবসানের পেছনে চূড়ান্ত বিবেচনায় কারা ভূমিকা রাখছে।
যদিও রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আগের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে পাকিস্তান ছিল না, কিন্তু সবশেষ বৈঠকে সেটা ঘটেছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, তিন প্রধান দেশ “পাকিস্তানকে আলোচনায় স্বাগত জানিয়েছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে, আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে”।
পাকিস্তানকে ‘বিচ্ছিন্ন করার’ ভারতীয় নীতির বিপরীতে পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থাটা আফগানিস্তান শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের ইতিবাচক ভূমিকার স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে যে কথাটা বলে আসছে যে, আফগানিস্তানে কিছু ঘটলে পাকিস্তানের উপরও তার প্রভাব পড়ে, পাকিস্তানের ভূমিকার ব্যাপারে স্বীকৃতি ইসলামাবাদের সেই দাবিকেই সমর্থন করলো। ইসলামাবাদ আরও বিশ্বাস করে যে, বৃহত্তম পশতুভাষী জণগোষ্ঠির দেশ হিসেবে, পাকিস্তানকে অবশ্যই আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হতে হবে এবং প্রধান বিশ্ব শক্তি – বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না, আফগানিস্তান চুক্তির সময় পাকিস্তানের স্বার্থের বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করা।
পুরো আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিচ্ছে, এই বক্তব্যের মধ্যে কোন অতিরঞ্জন নেই। এর কারণ মূলত আফগান তালেবানদের অব্যাহতভাবে আলোচনার টেবিলে ধরে রাখাতে পাকিস্তানের সাফল্য এবং তালেবানদের সাথে সরাসরি চ্যানেলে আলোচনার জন্য চীন ও রাশিয়াকে সক্ষম করে তোলার ব্যাপারে তাদের ভূমিকা। অন্যভাবে বললে, এই শক্তিগুলো এই স্বীকৃতি দিলো যে আলোচনা এবং যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য একটা খসড়া চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হওয়া, অন্তত এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে, এটা পাকিস্তানের সহায়তা ছাড়া সম্ভব হতো না।
‘বিচ্ছিন্নতার নীতির’ কারণে ভারতের কাছে পাকিস্তানের এই কেন্দ্রীয় ভূমিকার বিশ্বাসটি মারাত্মক। কারণ এখানে পাকিস্তানের এমন ভূমিকা ও ইমেজ উঠে এসেছে, যারা আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে, সন্ত্রাসবাদ উসকে দেয়ার ব্যাপারে নয়।
একজন ভারতীয় বিশ্লেষক যেমনটা বলেছেন: “সন্দেহ নেই যে, ভারত এখানে বড় ধরনের হারের মুখোমুখি হয়েছে। পাকিস্তান আফগান প্রক্সি যুদ্ধে ভারতকে পরাজিত করেছে এবং এই পরাজয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে”।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি হচ্ছে, চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক একটা অনমনীয় পর্যায়ে চলে গেছে, এবং রাশিয়ার সাথেও তাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এটাই সম্ভবত প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ও রাশিয়া একত্রে আঞ্চলিক একটা ফোরামে মিত্র হিসেবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে সাহায্য করছে।
আঞ্চলিক সংহতি সন্দেহাতীতভাবে আফগান যুদ্ধের সমাপ্তির সাথে জড়িত, এর অর্থ হলো এই দেশগুলো বিশেষ করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ মোড়ক থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং একটা অর্থনৈতিক ও কৌশলগত মাত্রা এখানে যুক্ত হচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র আবারও পাকিস্তানের রফতানি পণ্যের শীর্ষ গন্তব্য হতে চলেছে এবং পাকিস্তানের জ্বালানি সঙ্কট মেটানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সরবরাহকারী হয়ে উঠতে যাচ্ছে রাশিয়া। আর এতেও সন্দেহ নেই যে, পাকিস্তান রাশিয়ার অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সিস্টেম কেনার ব্যাপারেও গভীরভাবে আগ্রহী।
ভারতের জন্য এখন এটা উপলব্ধির সময় এসেছে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের বিচ্ছিন্নতার নীতি কাজ করেনি এবং সেটা কাজ করবে না, বিশেষ করে এমন একটা সময় যখন পৃথিবীর এই অঞ্চলটা বিআরআই থেকে নিয়ে ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সংযোগ যেখানে নতুন উদীয়মান অগ্রাধিকার, ‘বিচ্ছিন্নতার’ নীতি বাস্তবায়ন সেখানে কিভাবে সম্ভব?
এটা আসলে ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা যে, এই জিনিসটা বুঝতে তারা দীর্ঘ সময় নিয়েছে। পাকিস্তান, অন্যদিকে নিজেদের তরফ থেকে ভারতের সাথে সংলাপের উপর জোর দিয়ে যাচ্ছে, এবং মোদি সরকারও হয়তো নিজেদের জাতীয় ভোট ব্যাংক রক্ষায় এটার বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে, যদি না নিজেদের অংশের বরফ গলানোর চেষ্টা করে তারা।
কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্ত করতে ভারত যে চেষ্টা করেছিল, সেটা ঠেকানোর ব্যাপারে পাকিস্তানের সাফল্য এই পরীক্ষায় উৎরে গেছে। যদিও আইসিজেতে যাওয়ার পরিকল্পনাটা ভারতেরই ছিল। ভারত পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসার প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করে এসেছে এবং এরই ফলশ্রুতিতে আইসিজের দ্বারস্থ হয়েছে। মোদি সরকারের অব্যাহত পাকিস্তান-বিরোধী অপপ্রচার এবং এর পরিণতিতে পাকিস্তানকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার যে নীতি তারা নিয়েছে, সেটার কারণে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার প্রস্তাবকে তারা প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ভারতীয় নীতির একটি ভিত্তি হলো তাদের এই অপপ্রচার যে পাকিস্তান এই অঞ্চলে ‘সন্ত্রাসকে সহায়তা দিচ্ছে’। আইসিজেতে যে বিচার হলো, সেখানে তার উল্টো চিত্র উঠে এসেছে এবং সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতই বরং এ অঞ্চলে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারটা এখন তাদের নিজেদের ঘাড়ে গিয়ে পড়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোন পরাশক্তিই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অপপ্রচারকে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। তার অতি সাম্প্রতিক বহিপ্রকাশ হলো আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার উচ্চ পর্যায়ের টেবিলে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো। শুধু তাই নয় এই প্রক্রিয়া থেকে ভারত সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। তাছাড়া আফগান দৃশ্যপট থেকেও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভারত এবং আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করার ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর মতো কোন প্রভাবও ভারতের নেই।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে চারপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে, সেখান থেকেই বোঝা গেছে যে আফগানিস্তানে ১৭ বছরেরও বেশি মার্কিন যুদ্ধের অবসানের পেছনে চূড়ান্ত বিবেচনায় কারা ভূমিকা রাখছে।
যদিও রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আগের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে পাকিস্তান ছিল না, কিন্তু সবশেষ বৈঠকে সেটা ঘটেছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, তিন প্রধান দেশ “পাকিস্তানকে আলোচনায় স্বাগত জানিয়েছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে, আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে”।
পাকিস্তানকে ‘বিচ্ছিন্ন করার’ ভারতীয় নীতির বিপরীতে পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থাটা আফগানিস্তান শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের ইতিবাচক ভূমিকার স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে যে কথাটা বলে আসছে যে, আফগানিস্তানে কিছু ঘটলে পাকিস্তানের উপরও তার প্রভাব পড়ে, পাকিস্তানের ভূমিকার ব্যাপারে স্বীকৃতি ইসলামাবাদের সেই দাবিকেই সমর্থন করলো। ইসলামাবাদ আরও বিশ্বাস করে যে, বৃহত্তম পশতুভাষী জণগোষ্ঠির দেশ হিসেবে, পাকিস্তানকে অবশ্যই আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হতে হবে এবং প্রধান বিশ্ব শক্তি – বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না, আফগানিস্তান চুক্তির সময় পাকিস্তানের স্বার্থের বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করা।
পুরো আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিচ্ছে, এই বক্তব্যের মধ্যে কোন অতিরঞ্জন নেই। এর কারণ মূলত আফগান তালেবানদের অব্যাহতভাবে আলোচনার টেবিলে ধরে রাখাতে পাকিস্তানের সাফল্য এবং তালেবানদের সাথে সরাসরি চ্যানেলে আলোচনার জন্য চীন ও রাশিয়াকে সক্ষম করে তোলার ব্যাপারে তাদের ভূমিকা। অন্যভাবে বললে, এই শক্তিগুলো এই স্বীকৃতি দিলো যে আলোচনা এবং যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য একটা খসড়া চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হওয়া, অন্তত এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে, এটা পাকিস্তানের সহায়তা ছাড়া সম্ভব হতো না।
‘বিচ্ছিন্নতার নীতির’ কারণে ভারতের কাছে পাকিস্তানের এই কেন্দ্রীয় ভূমিকার বিশ্বাসটি মারাত্মক। কারণ এখানে পাকিস্তানের এমন ভূমিকা ও ইমেজ উঠে এসেছে, যারা আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে, সন্ত্রাসবাদ উসকে দেয়ার ব্যাপারে নয়।
একজন ভারতীয় বিশ্লেষক যেমনটা বলেছেন: “সন্দেহ নেই যে, ভারত এখানে বড় ধরনের হারের মুখোমুখি হয়েছে। পাকিস্তান আফগান প্রক্সি যুদ্ধে ভারতকে পরাজিত করেছে এবং এই পরাজয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে”।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি হচ্ছে, চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক একটা অনমনীয় পর্যায়ে চলে গেছে, এবং রাশিয়ার সাথেও তাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এটাই সম্ভবত প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ও রাশিয়া একত্রে আঞ্চলিক একটা ফোরামে মিত্র হিসেবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে সাহায্য করছে।
আঞ্চলিক সংহতি সন্দেহাতীতভাবে আফগান যুদ্ধের সমাপ্তির সাথে জড়িত, এর অর্থ হলো এই দেশগুলো বিশেষ করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ মোড়ক থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং একটা অর্থনৈতিক ও কৌশলগত মাত্রা এখানে যুক্ত হচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র আবারও পাকিস্তানের রফতানি পণ্যের শীর্ষ গন্তব্য হতে চলেছে এবং পাকিস্তানের জ্বালানি সঙ্কট মেটানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সরবরাহকারী হয়ে উঠতে যাচ্ছে রাশিয়া। আর এতেও সন্দেহ নেই যে, পাকিস্তান রাশিয়ার অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সিস্টেম কেনার ব্যাপারেও গভীরভাবে আগ্রহী।
ভারতের জন্য এখন এটা উপলব্ধির সময় এসেছে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের বিচ্ছিন্নতার নীতি কাজ করেনি এবং সেটা কাজ করবে না, বিশেষ করে এমন একটা সময় যখন পৃথিবীর এই অঞ্চলটা বিআরআই থেকে নিয়ে ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সংযোগ যেখানে নতুন উদীয়মান অগ্রাধিকার, ‘বিচ্ছিন্নতার’ নীতি বাস্তবায়ন সেখানে কিভাবে সম্ভব?
এটা আসলে ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা যে, এই জিনিসটা বুঝতে তারা দীর্ঘ সময় নিয়েছে। পাকিস্তান, অন্যদিকে নিজেদের তরফ থেকে ভারতের সাথে সংলাপের উপর জোর দিয়ে যাচ্ছে, এবং মোদি সরকারও হয়তো নিজেদের জাতীয় ভোট ব্যাংক রক্ষায় এটার বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে, যদি না নিজেদের অংশের বরফ গলানোর চেষ্টা করে তারা।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, পাকিস্তানে আটক ভারতীয় গুপ্তচর কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তার আত্মীয়-স্বজন |
No comments