উত্তরখানে বৈশাখী মেলার নামে চলছে রমরমা অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া by আবিদ রাসেল
রাজধানীর উত্তরখানে বৈশাখী মেলার নামে
চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর। স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু লোক থানা পুলিশকে
ম্যানেজ করেই এসব অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উত্তরখান থানাধীন মাস্টারপাড়া ও কুড়িপাড়ার বড়বাগে শুধুমাত্র বৈশাখী মেলার
অনুমোদন থাকলেও মেলার নাম করে পুলিশের প্রত্যক্ষ মদদে এসব অসামাজিক
কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তিরা। বৈশাখী মেলার নামে
উত্তরখানে রমরমা অশ্লীল নৃত্য ও জমজমাট জুয়ার আসর চলছে এমন অভিযোগের
ভিত্তিতে পহেলা বৈশাখ রাতে সরেজমিনে মাস্টারবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জুয়া
খেলা চলছে দেদারছে। রিং খেলার নাম করে এসব জুয়া খেলায় অংশ নিচ্ছে এলাকার
এবং এলাকার বাইরে থেকে আসা সকল বয়সের পুরুষ। আর জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা
হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলায় ঘুরতে আসা
মাস্টারবাড়ির এক বাসিন্দা জানান, ওসিকে টাকা পয়সা দিয়েই এসব জুয়ার আসর
বসিয়েছে কিছু সুবিধাবাদী স্থানীয় লোক। যেখানে পুলিশ জুয়ার আসর বন্ধ করবে
সেখানে পুলিশের নিরাপত্তাতেই এসব অবৈধ কার্যকলাপ চলছে। তবে এগুলো বন্ধ হওয়া
উচিত। নাহলে এলাকার শিক্ষার্থীসহ যুবকেরা জুয়ার নেশায় জড়িয়ে পড়বে।
পরবর্তীতে
উত্তরখানের কুড়িপাড়া বড়বাগে বৈশাখী মেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলার
নামে চলছে যুবতী মেয়েদের দিয়ে রমরমা অশ্লীল নৃত্য। টিন ও কাপড়ের বেড়া দিয়ে
বিশাল পরিসরে তৈরী করা আবদ্ধ স্থানে শতশত ছাত্র-যুবক এই অশ্লীল নৃত্য উপভোগ
করছে। খোলামেলা পোশাকে এবং অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গি করে দর্শকদের মন জুড়াচ্ছে
ভাড়া করে আনা এসব যুবতী। আর খোদ পুলিশি পাহারাতেই চলছে এসব অসামাজিক
কার্যকলাপ। দেখা গেছে, উত্তরখান থানার এএসআই আঃ রহমানের নেতৃত্বে পাহারা
দিচ্ছে পুলিশের একটি দল। এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে এএসআই রহমান
সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে তিনি দ্রুত
গাঁ ঢাকা দেন। জানা গেছে, পুতুল নাচের নাম করে প্রচারণা চালালেও এসব
অশ্লীল নৃত্য দেখতে হলে টিকিট কাটতে হয় চড়া দামে। মেলার নিজস্ব এক
নিরাপত্তাকর্মী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, রাত ১২টা পর্যন্ত নরমাল শো এর
জন্য টিকিট কাটতে হয় ৬০ টাকা করে। আর রাত ১২টার পর স্পেশাল শো এর জন্য
টিকিট মূল্য হল ২০০ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজক
হলেন আমির, কবির ও হাসেম নামের তিন ব্যক্তি। মেলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে
ঘুরতে আসা রফিক মিয়া (ছদ্মনাম) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বউ-বাচ্চা নিয়ে
মেলায় আসি ঘুরতে ও কেনাকাটা করতে। কিন্তু এখানে মেলার নামে যেসব অসামাজিক
কার্যকলাপ চলছে তাতে করে ভদ্র মানুষ এখানে আর আসবে না। প্রকাশ্যে চলছে
জুয়া। আর নামমাত্র বেড়া দিয়ে ভেতরে চলছে খারাপ মেয়েদের আপত্তিকর নৃত্য। যা
দেখে ছাত্র ও যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর পুলিশের কথা কি বলব!
উত্তরখান থানার ওসি মোঃ ইউনুস আলী এবং সেকেন্ড অফিসার সাইফুল ইসলামকে টাকা
দিয়ে হাত করেছে মেলার আয়োজকরা। আর তাইতো পুলিশ পাহারায় চলছে এসব ঘৃণিত
কর্মকান্ড।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইউনুস আলী জানান, আমরা অনুমোদন দিয়েছি বৈশাখী মেলার। কিন্তু এসব অশ্লীল কার্যকলাপ কিভাবে আয়োজকরা চালাচ্ছে তা বলতে পারব না। তবে আমরা এসব বন্ধ করে দিয়েছি। পুলিশি পাহারায় কিভাবে তাহলে এসব চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পাহারায় থাকবে। এএসআই আঃ রহমানের কোন দোষ নেই।
উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ-কমিশনার নিসারুল আরিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, উত্তরা জোনের ৬টি থানায় বৈশাখী মেলার জন্য ৩০টি স্পটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে উত্তরখানেই শুধুমাত্র লিখিত অনুমোদন আছে ১০টির। পুলিশি জনবল খুবই কম থাকায় সবদিকে নজরদারি সম্ভব হয়নি। তাছাড়া সেক্টরগুলোকেই বেশী প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তবে এখনতো আর করার কিছু নাই। এসব আয়োজকরা যাতে করে ভবিষ্যতে আর অনুমোদন না পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইউনুস আলী জানান, আমরা অনুমোদন দিয়েছি বৈশাখী মেলার। কিন্তু এসব অশ্লীল কার্যকলাপ কিভাবে আয়োজকরা চালাচ্ছে তা বলতে পারব না। তবে আমরা এসব বন্ধ করে দিয়েছি। পুলিশি পাহারায় কিভাবে তাহলে এসব চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পাহারায় থাকবে। এএসআই আঃ রহমানের কোন দোষ নেই।
উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ-কমিশনার নিসারুল আরিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, উত্তরা জোনের ৬টি থানায় বৈশাখী মেলার জন্য ৩০টি স্পটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে উত্তরখানেই শুধুমাত্র লিখিত অনুমোদন আছে ১০টির। পুলিশি জনবল খুবই কম থাকায় সবদিকে নজরদারি সম্ভব হয়নি। তাছাড়া সেক্টরগুলোকেই বেশী প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তবে এখনতো আর করার কিছু নাই। এসব আয়োজকরা যাতে করে ভবিষ্যতে আর অনুমোদন না পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments