স্পেনকে ডাকছে আরেক ইতিহাস

স্পেন মানেই যেন এখন একের পর এক ইতিহাসের ঢেউ ডিঙিয়ে চলা। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতার ইতিহাস গড়ার টাটকা অনুভূতি সঙ্গে নিয়েই নতুন এক রেকর্ডের মিশনে নামছে ভিসেন্তে দেল বস্কের দল। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ আর বিশ্বকাপের ‘ডাবল’ জেতার কীর্তি স্পেন ছাড়াও আছে পশ্চিম জার্মানি ও ফ্রান্সের। কিন্তু ইউরো, বিশ্বকাপ আবার ইউরো—এই ত্রয়ী সাফল্যের কীর্তি নেই কারোরই। নতুন এই ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আগামীকাল মাঠে নামছে স্পেন।
না, এখনই চূড়ান্ত পর্ব নয়। ইউরো ২০১২-এর আসর বসবে পোল্যান্ড আর ইউক্রেনে। এর আগে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসতে হবে ১৪টি দলকে। নয় গ্রুপের নয় চ্যাম্পিয়ন জায়গা পাবে সরাসরি। নয় রানার্সআপের মধ্যে সেরা দলটিও চলে যাবে। বাকি আট রানার্সআপ একে অন্যের মুখোমুখি হয়ে খেলবে প্লে-অফ। এখান থেকে পাওয়া যাবে চারটি দল। বাছাইপর্বের মোট ১৪টি আর দুই স্বাগতিক—এই ১৬ দল নিয়ে হবে চূড়ান্ত পর্ব।
১৪তম ইউরোপ-সেরার এই আসরের বাছাইপর্ব শুরু হচ্ছে। শুরু হয়ে গেছেও বলা যায়। গত ১১ আগস্ট একটা ম্যাচ হয়ে গেছে, যাতে ফারো দ্বীপপুঞ্জকে ২-১ গোলে হারিয়েছে এস্তোনিয়া। আজ ম্যাচ আছে একটি, মুখোমুখি হচ্ছে ইসরায়েল-মাল্টা। ইউরোপের পরাশক্তিগুলো মাঠে নামবে আগামীকাল।
স্পেনের দিকেই বেশি মনোযোগ থাকবে সবার। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে আসা, টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়া—এর মধ্যে টানা ১৫ ম্যাচে জয়, ইউরো আর বিশ্বকাপের ডাবল পূর্ণ করা...একের পর এক রেকর্ড গড়ে আসা স্পেন এবার এক ঢিলে মারতে পারে দুই পাখি। শিরোপাত্রয়ীর কথা তো প্রথমেই জেনেছেন, স্পেন এবার ইউরো জিতলে সেটি হবে প্রথম দল হিসেবে ইউরোর শিরোপা ধরে রাখার কীর্তি। নতুন এই অভিযাত্রায় বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে লিকটেনস্টাইনের মতো একেবারে সহজ প্রতিপক্ষ পাচ্ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কোচ দেল বস্ক অবশ্য তার পরও সতর্ক, ‘কাউকে ছোট করে দেখার ভুল করা চলবে না। এই ম্যাচটা কিন্তু আমরা ওদের মাঠে গিয়েই খেলব। তা ছাড়া সবাই চাইবে আমাদের হারাতে। শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখতে আমাদের তাই কঠোর পরিশ্রমই করতে হবে।’
আগামীকাল চোখ থাকবে ইংল্যান্ড-বুলগেরিয়া ম্যাচেও। বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার পরও ফ্যাবিও ক্যাপেলো আরেকটি সুযোগ পেয়েছেন। ক্যাপেলোর জন্যও এটি সেই আস্থার প্রতিদান দেওয়ার মঞ্চ। এমনিতে ইউরোতে কিন্তু ইংল্যান্ডের রেকর্ড সুবিধার নয়। শিরোপা দূরের কথা, ফাইনালেই উঠতে পারেনি কখনো। গতবার তো ইউরোর চূড়ান্ত পর্বেই জায়গা করে নিতে পারেনি।
এদিক থেকে ফ্রান্স অনেকটাই এগিয়ে। ১৯৮৪ ও ২০০০—দুবারের চ্যাম্পিয়ন লা ব্লুজরা। তবে ফরাসি ফুটবল এখন পার করছে এক ক্রান্তিকাল। বিশ্বকাপ এবং এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের কারণে লরাঁ ব্লাঁর দলকে নিয়ে এবার বাড়তি আগ্রহ সবার। কৌতূহল থাকছে জোয়াকিম লোর তরুণ দলটাকে নিয়েও। বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার আগপর্যন্ত দুর্দান্ত খেলা জার্মানি ইউরোর সবচেয়ে সফলতম দলও। ইউরো আসতে আসতে তরুণ দলটির আরও পরিণত হওয়ার কথা। তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের শিরোপার অন্যতম দাবিদার বলে মানতেই হবে। এএফপি, ওয়েবসাইট।

ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
গ্রুপ ‘এ’ জার্মানি, তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কাজাখস্তান, আজারবাইজান
গ্রুপ ‘বি’ রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, আয়ারল্যান্ড, মেসিডোনিয়া, আর্মেনিয়া, অ্যান্ডোরা
গ্রুপ ‘সি’ ইতালি, এস্তোনিয়া, সার্বিয়া, উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া, ফারো আইল্যান্ড
গ্রুপ ‘ডি’ ফ্রান্স, রোমানিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বেলারুশ, আলবেনিয়া, লুক্সেমবার্গ
গ্রুপ ‘ই’ হল্যান্ড, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, মালদোভা, সান মারিনো
গ্রুপ ‘এফ’ ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস, ইসরায়েল, লাটভিয়া, জর্জিয়া, মাল্টা
গ্রুপ ‘জি’ ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, ওয়েলস, মন্টেনেগ্রো
গ্রুপ ‘এইচ’ পর্তুগাল, ডেনমার্ক, নরওয়ে, সাইপ্রাস, আইসল্যান্ড
গ্রুপ ‘আই’ স্পেন, চেক প্রজাতন্ত্র, স্কটল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লিকটেনস্টাইন

No comments

Powered by Blogger.