তিন বছরে এডিবি ৩০০ কোটি ডলার সাহায্য দেবে
আগামী তিন বছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশকে ৩০০ কোটি ডলার বা ২১ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন-সহায়তা দেবে।
গত জুলাই মাসে এডিবি ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কার্যক্রমের বিজনেস পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে এই অর্থ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশকে যে অর্থ দেওয়া হবে এর প্রায় ১৬০ কোটি ডলার আসবে এশীয় উন্নয়ন তহবিল বা এডিএফ থেকে। আর ১২০ কোটি ডলার আসবে সাধারণ পুঁজির উৎস (অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্সেস বা ওসিআর) থেকে।
তবে ওসিআরের এই ঋণ কঠিন শর্তের এবং সুদের হারও বেশি। এসব ঋণের সুদ নির্ধারিত হবে লন্ডনের আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারের সুদের হারের (লাইবরের) ভিত্তিতে অর্থাৎ বাণিজ্যিকভাবে।
এসবরে বাইরে বছরে ৭৪ লাখ ডলারের মতো কারিগরি সহায়তা অনুদান হিসেবে দেবে এডিবি।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে এডিবির ঢাকা অফিস আগামী তিন বছরের কান্ট্রি বিজনেস প্লান তৈরির কথা স্বীকার করে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশকে প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলার বা সাত হাজার কোটি টাকার বেশি সহায়তা দেওয়া হবে। এসবের বেশির ভাগ অর্থই সামাজিক খাত ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
এ ছাড়া ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্রাটেজি তৈরির কাজ চলছে। এটি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে এডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এডিবি যেসব উন্নয়ন-সহায়তা দেবে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণ। এই সেতু নির্মাণে এডিবি ছাড়াও বিশ্বব্যাংক ও জাপানি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা সহায়তা করবে। আগামী তিন বছরে এডিবি পদ্মা সেতু নির্মাণকাজে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা চার হাজার ৩০৫ কোটি টাকা দেবে। এর মধ্যে সহজ শর্তের ঋণ বা এডিএফ তহবিল থেকে আসবে মাত্র সাত কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৫৩২ কোটি টাকা। আর বাকি ৫৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা আসবে ওসিআর বা বাণিজ্যিক ঋণ থেকে।
দ্বিতীয় বড় প্রকল্প হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে এডিবি ৩০ কোটি ডলার বা দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এর বেশির ভাগই আসবে এডিএফ তহবিল থেকে। একই পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পে। তবে এর পুরোটাই আসবে বাণিজ্যিক ঋণ বা ওসিআর তহবিল থেকে। এই অর্থ পাওয়া যাবে ২০১১ সালে।
দেশের শহরতলি উন্নয়ন ও ট্রান্সপোর্ট করিডর প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক মোট বিনিয়োগ করবে ২৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা দুই হাজার ৬৫ কোটি টাকা। পুরো অর্থই আসবে সহজ শর্তের ঋণ বা এডিএফ তহবিল থেকে। এর মধ্যে ট্রান্সপোর্ট করিডর উন্নয়নে পাওয়া যাবে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা এক হাজার ২২৫ কোটি টাকা। আর শহরতলি উন্নয়নে এডিবি দেবে ১২ কোটি ডলার বা ৮৪০ কোটি টাকা।
ঢাকা শহরের সমন্বিত টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এডিবি বিনিয়োগ করবে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৮৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটি ডলার আসবে এডিএফ তহবিল থেকে আর বাকি দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার আসবে ওসিআর থেকে।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরে এডিবি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে যে ঋণ দিয়েছে, তার অর্ধেকই এসেছে চড়া সুদের তহবিল থেকে।
এসব ঋণ ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং আসলের কিস্তি পরিশোধের ছাড় পাওয়া যাবে মাত্র পাঁচ বছর। ফলে, এডিবির ঋণগুলো কার্যত কঠিন শর্তের ঋণ হয়ে পড়ছে। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত পঞ্জিকা বছরে যে ঋণ দেওয়া হবে এরও প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থ আসবে ওসিআর থেকে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি সাহায্য নেওয়ার প্রতিযোগী দেশের সংখ্যা বাড়ার ফলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কম সুদে ঋণ দেওয়ার প্রবণতা এখন কিছুটা কম। তবে বাংলাদেশ বিদেশি সাহায্যের ওপর তার নির্ভরতা অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছে। ফলে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে যে উৎস থেকেই হোক কঠিন শর্তের ঋণ বা বেশি বাণিজ্যিক ঋণ না নেওয়াই ভালো।’
গত জুলাই মাসে এডিবি ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কার্যক্রমের বিজনেস পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে এই অর্থ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশকে যে অর্থ দেওয়া হবে এর প্রায় ১৬০ কোটি ডলার আসবে এশীয় উন্নয়ন তহবিল বা এডিএফ থেকে। আর ১২০ কোটি ডলার আসবে সাধারণ পুঁজির উৎস (অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্সেস বা ওসিআর) থেকে।
তবে ওসিআরের এই ঋণ কঠিন শর্তের এবং সুদের হারও বেশি। এসব ঋণের সুদ নির্ধারিত হবে লন্ডনের আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারের সুদের হারের (লাইবরের) ভিত্তিতে অর্থাৎ বাণিজ্যিকভাবে।
এসবরে বাইরে বছরে ৭৪ লাখ ডলারের মতো কারিগরি সহায়তা অনুদান হিসেবে দেবে এডিবি।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে এডিবির ঢাকা অফিস আগামী তিন বছরের কান্ট্রি বিজনেস প্লান তৈরির কথা স্বীকার করে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশকে প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলার বা সাত হাজার কোটি টাকার বেশি সহায়তা দেওয়া হবে। এসবের বেশির ভাগ অর্থই সামাজিক খাত ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
এ ছাড়া ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্রাটেজি তৈরির কাজ চলছে। এটি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে এডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এডিবি যেসব উন্নয়ন-সহায়তা দেবে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণ। এই সেতু নির্মাণে এডিবি ছাড়াও বিশ্বব্যাংক ও জাপানি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা সহায়তা করবে। আগামী তিন বছরে এডিবি পদ্মা সেতু নির্মাণকাজে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা চার হাজার ৩০৫ কোটি টাকা দেবে। এর মধ্যে সহজ শর্তের ঋণ বা এডিএফ তহবিল থেকে আসবে মাত্র সাত কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৫৩২ কোটি টাকা। আর বাকি ৫৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা আসবে ওসিআর বা বাণিজ্যিক ঋণ থেকে।
দ্বিতীয় বড় প্রকল্প হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে এডিবি ৩০ কোটি ডলার বা দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এর বেশির ভাগই আসবে এডিএফ তহবিল থেকে। একই পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পে। তবে এর পুরোটাই আসবে বাণিজ্যিক ঋণ বা ওসিআর তহবিল থেকে। এই অর্থ পাওয়া যাবে ২০১১ সালে।
দেশের শহরতলি উন্নয়ন ও ট্রান্সপোর্ট করিডর প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক মোট বিনিয়োগ করবে ২৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা দুই হাজার ৬৫ কোটি টাকা। পুরো অর্থই আসবে সহজ শর্তের ঋণ বা এডিএফ তহবিল থেকে। এর মধ্যে ট্রান্সপোর্ট করিডর উন্নয়নে পাওয়া যাবে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা এক হাজার ২২৫ কোটি টাকা। আর শহরতলি উন্নয়নে এডিবি দেবে ১২ কোটি ডলার বা ৮৪০ কোটি টাকা।
ঢাকা শহরের সমন্বিত টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এডিবি বিনিয়োগ করবে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৮৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটি ডলার আসবে এডিএফ তহবিল থেকে আর বাকি দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার আসবে ওসিআর থেকে।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরে এডিবি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে যে ঋণ দিয়েছে, তার অর্ধেকই এসেছে চড়া সুদের তহবিল থেকে।
এসব ঋণ ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং আসলের কিস্তি পরিশোধের ছাড় পাওয়া যাবে মাত্র পাঁচ বছর। ফলে, এডিবির ঋণগুলো কার্যত কঠিন শর্তের ঋণ হয়ে পড়ছে। ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত পঞ্জিকা বছরে যে ঋণ দেওয়া হবে এরও প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থ আসবে ওসিআর থেকে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি সাহায্য নেওয়ার প্রতিযোগী দেশের সংখ্যা বাড়ার ফলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কম সুদে ঋণ দেওয়ার প্রবণতা এখন কিছুটা কম। তবে বাংলাদেশ বিদেশি সাহায্যের ওপর তার নির্ভরতা অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছে। ফলে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে যে উৎস থেকেই হোক কঠিন শর্তের ঋণ বা বেশি বাণিজ্যিক ঋণ না নেওয়াই ভালো।’
No comments