ঈদ যাত্রায় কোথাও স্বস্তি কোথাও ভোগান্তি
প্রিয়জনের
সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সবাই ছুটছে জন্মভূমিতে। বাস,
ট্রেন-লঞ্চে করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। গতকাল সকাল থেকেই বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও
রেল স্টেশনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। বাড়তি মানুষের চাপে সড়কে কোথাও কোথাও দেখা
দিয়েছে যানজট। আবার ভাঙা ও বৃষ্টির কারণে কর্দমাক্ত সড়কে দুর্ভোগ পোহাতে
হয়েছে যাত্রীদের। ঈদ যাত্রায় পথে পথে দুর্ভোগে পড়লেও মানুষের চেহারায় ছিল
বাড়ি ফেরার আনন্দ। মহাসড়কে কোথাও কোথাও যানজটের কবলে পড়ে দীর্ঘক্ষণ বসে
থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া
কয়েকটি ট্রেনও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। বুধবার সরকারি ছুটি থাকায় অনেক
চাকরিজীবী বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়ে ঈদ ছুটির সঙ্গে মিল করে বাড়ি চলে গেছেন।
ব্যস্ত শহর ছেড়ে মানুষ গ্রামমুখী হওয়ায় চিরচেনা ঢাকা ফাঁকা হয়ে আসছে।
সরজমিন কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায়, সকাল থেকেই মানুষ আর মানুষ। ব্যাগ,
লাগেজ হাতে নিয়ে সবাই ছুটছেন কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের দিকে। তবে ট্রেন ছাড়তে দেরি
হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। বুধবার বাড়ি যাচ্ছিলেন ৪ঠা জুন
অগ্রিম টিকিট কেনা যাত্রীরা। এদিন সকালে রাজশাহী, দেওয়ানগঞ্জ, পার্বতীপুর,
লালমনিরহাট ও খুলনার সকালে কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পর কমলাপুর স্টেশন
ছেড়েছে। এর মধ্যে দুটি বিশেষ ট্রেনের দুটিই ছাড়তে দেরি হয়। দেওয়ানগঞ্জ ঈদ
স্পেশাল ট্রেন ছাড়ার সময় ছিল সকাল পৌনে ৯টায়।
তা ছেড়েছে নির্ধারিত সমরের পৌনে এক ঘণ্টা পর। লালমনিরহাটের লালমনি ঈদ স্পেশাল ট্রেন বেলা সোয়া ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। এটি ছাড়ে বেলা ১১টায়। দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী হাসান সরকার বলেন, সকাল ৮টায় এখানে এসে বসে আছি। কিন্তু ট্রেন ছাড়তে দেরি করছে। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ছেড়েছে। অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সোয়া ৯টায় ছেড়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়েছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় সকাল ৮টায়; তবে ট্রেনটি আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সাড়ে ৮টায় গেছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতরে পা ফেলার জায়গা ছিল না। আর যারা ভিড়ের কারণে সিট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি, তারাও দাঁড়িয়েছিলেন সিট না পাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে। সবমিলিয়ে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়ে ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। জানালা দিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের ট্রেনের ভেতরে ঢোকানোর দৃশ্য ছিল প্রায় বগির জানালাতেই। আর ট্রেনের ছাদের পুরোটাজুড়েই মানুষ আর মানুষ। সিদ্দিকুর রহমান নামের এক যাত্রী নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতরে উঠতে না পেরে চড়ে বসেছেন ছাদে। তখন ট্রেনের ছাদজুড়েই মানুষ আর মানুষ। তিনি বলেন, স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছি, কিন্তু ট্রেনের ভেতরে এত যাত্রী যে উঠার মতো পরিস্থিতি নেই। ট্রেনের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী উঠার বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন ছাদে যাত্রীরা না ওঠে। তারপরও ট্রেন কমলাপুর আসার আগে এয়ারপোর্ট স্টেশনে এসব যাত্রী ছাদে উঠে পড়েছে। এত যাত্রী যে চেষ্টা করেও তাদের নামানো যাচ্ছে না। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ঈদ যাত্রায় আমরা চেষ্টা করছি যেন সব ট্রেনই ঠিকমতো এসে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যায়। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। যাত্রী চাপ সামলাতে প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি লাগানোর পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও আছে।
এদিকে রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক গতকাল কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ট্রেনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ সময় তিনি রাজশাহীগামী সিল্কসিটি ও চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন পরিদর্শন করেন। মন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে যাত্রীদের সেবা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে ঈদ পালন করে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে পারে তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩০টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। তার মধ্যে ২টি ট্রেন কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ টার্মিনালে অগ্রিম টিকিট কিনেও বাসের জন্য বসে ছিলেন যাত্রীরা। সমস্যা হতে পারে এই বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে টার্মিনালে আসেন তারা। বুধবার রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সূত্র জানায় যায়, ঘরমুখো মানুষের চাপ ছিল। বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা কাউন্টারে কাউন্টারে ভিড় করে। কাঙ্ক্ষিত সময়ের বাস আসার অপেক্ষা করছিলেন তারা। ভোর বেলা থেকে বিভিন্ন রুটের বাস যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। তবে কিছু বাস দেরিতে ছাড়ার এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাবতলীর হানিফ, এসআর, নাবিল, শ্যামলী ছাড়াও প্রত্যেকটি কাউন্টারেই ভিড় ছিল। কল্যাণপুরে রাজশাহীগামী যাত্রী আলম বাবু বলেন, বাড়ি যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। সিডিউল বিপর্যয়ে পড়তে হয়নি।
অন্যদিকে সকাল থেকেই আস্তে আস্তে সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চযাত্রীরা আগেভাগেই ঘাটে পৌঁছান। কাঙিক্ষত লঞ্চের অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করেন টার্মিনালে। বরিশালাগামী যাত্রী হাসান মিয়া বলেন, ঈদের সময় বাড়ি যেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। তারপরও বাবা-মা এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদে বাড়ি থাকলে আনন্দের কমতি থাকে না। ঘাটে কোনো লঞ্চ না পেয়ে যাত্রীরা টার্মিনাল থেকে নৌকাযোগে নদীর মাঝখানে নোঙর করে রাখা লঞ্চে উঠেন। পল্টুনে আসার আগেই নদীর মাঝখানেই লঞ্চগুলো পরিপূর্ণ হয়ে যায়। কিছু কিছু লঞ্চের ছাদে উঠে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা।
তা ছেড়েছে নির্ধারিত সমরের পৌনে এক ঘণ্টা পর। লালমনিরহাটের লালমনি ঈদ স্পেশাল ট্রেন বেলা সোয়া ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। এটি ছাড়ে বেলা ১১টায়। দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেনের যাত্রী হাসান সরকার বলেন, সকাল ৮টায় এখানে এসে বসে আছি। কিন্তু ট্রেন ছাড়তে দেরি করছে। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ছেড়েছে। অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সোয়া ৯টায় ছেড়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়েছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় সকাল ৮টায়; তবে ট্রেনটি আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সাড়ে ৮টায় গেছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতরে পা ফেলার জায়গা ছিল না। আর যারা ভিড়ের কারণে সিট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি, তারাও দাঁড়িয়েছিলেন সিট না পাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে। সবমিলিয়ে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়ে ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। জানালা দিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের ট্রেনের ভেতরে ঢোকানোর দৃশ্য ছিল প্রায় বগির জানালাতেই। আর ট্রেনের ছাদের পুরোটাজুড়েই মানুষ আর মানুষ। সিদ্দিকুর রহমান নামের এক যাত্রী নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতরে উঠতে না পেরে চড়ে বসেছেন ছাদে। তখন ট্রেনের ছাদজুড়েই মানুষ আর মানুষ। তিনি বলেন, স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছি, কিন্তু ট্রেনের ভেতরে এত যাত্রী যে উঠার মতো পরিস্থিতি নেই। ট্রেনের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী উঠার বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন ছাদে যাত্রীরা না ওঠে। তারপরও ট্রেন কমলাপুর আসার আগে এয়ারপোর্ট স্টেশনে এসব যাত্রী ছাদে উঠে পড়েছে। এত যাত্রী যে চেষ্টা করেও তাদের নামানো যাচ্ছে না। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ঈদ যাত্রায় আমরা চেষ্টা করছি যেন সব ট্রেনই ঠিকমতো এসে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যায়। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। যাত্রী চাপ সামলাতে প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি লাগানোর পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও আছে।
এদিকে রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক গতকাল কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ট্রেনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ সময় তিনি রাজশাহীগামী সিল্কসিটি ও চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন পরিদর্শন করেন। মন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে যাত্রীদের সেবা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে ঈদ পালন করে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে পারে তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩০টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। তার মধ্যে ২টি ট্রেন কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ টার্মিনালে অগ্রিম টিকিট কিনেও বাসের জন্য বসে ছিলেন যাত্রীরা। সমস্যা হতে পারে এই বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে টার্মিনালে আসেন তারা। বুধবার রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সূত্র জানায় যায়, ঘরমুখো মানুষের চাপ ছিল। বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা কাউন্টারে কাউন্টারে ভিড় করে। কাঙ্ক্ষিত সময়ের বাস আসার অপেক্ষা করছিলেন তারা। ভোর বেলা থেকে বিভিন্ন রুটের বাস যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। তবে কিছু বাস দেরিতে ছাড়ার এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাবতলীর হানিফ, এসআর, নাবিল, শ্যামলী ছাড়াও প্রত্যেকটি কাউন্টারেই ভিড় ছিল। কল্যাণপুরে রাজশাহীগামী যাত্রী আলম বাবু বলেন, বাড়ি যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। সিডিউল বিপর্যয়ে পড়তে হয়নি।
অন্যদিকে সকাল থেকেই আস্তে আস্তে সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চযাত্রীরা আগেভাগেই ঘাটে পৌঁছান। কাঙিক্ষত লঞ্চের অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করেন টার্মিনালে। বরিশালাগামী যাত্রী হাসান মিয়া বলেন, ঈদের সময় বাড়ি যেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। তারপরও বাবা-মা এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদে বাড়ি থাকলে আনন্দের কমতি থাকে না। ঘাটে কোনো লঞ্চ না পেয়ে যাত্রীরা টার্মিনাল থেকে নৌকাযোগে নদীর মাঝখানে নোঙর করে রাখা লঞ্চে উঠেন। পল্টুনে আসার আগেই নদীর মাঝখানেই লঞ্চগুলো পরিপূর্ণ হয়ে যায়। কিছু কিছু লঞ্চের ছাদে উঠে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা।
No comments