পুরাতন গাড়ি যেভাবে নতুন করা হয় by রিপন আনসারী
ঈদে
এলেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এই রুটে ফিটনেসবিহীন লক্কড় ঝক্কর গাড়ির দৌরাত্ম্য
বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বহু বছরের পুরানো গাড়ির গায়ে রং চং লাগিয়ে নতুন রূপে
সাজানো হয় যাত্রী আকৃষ্টের জন্য। আর এই লক্কড় ঝক্কর গাড়ি মেরামতে ব্যস্ত
সময় কাটাচ্ছেন মানিকগঞ্জের সবগুলো ওয়ার্কসপের কারিগর ও রং মিস্ত্রিরা।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলায় সড়ক পথে যাতায়াতের অন্যতম পথ হচ্ছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। অত্যন্ত ব্যস্ততম এই মহাসড়ককে এক সময় বলা হতো মৃত্যুর ফাঁদ। তবে কিছুটা কমে এলেও দুর্ঘটনা এখনো কমেনি। আর দুর্ঘটনার অন্যতম কারণই হচ্ছে লক্কর ঝক্কর এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এই গাড়িগুলো বিশেষ করে ঈদের আগে পরে দাপট বেড়ে যায় অনেকাংশে।
ঈদের আগের তিন-চারদিন সময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে চলেন যে যার আপনালয়। মানুষের চাপের বিপরীতে যানবাহন সংকট হয়ে পড়ার সেই সুযোগ কাজে লাগায় একশ্রেণির পরিবহন ব্যবসায়ী। রাস্তায় তখন ভালোমন্দ গাড়ির বাছ বিচার না করে মানুষজন হাতের কাছে যা পায় সেসব গাড়িতেই উঠে যাত্রা শুরু করেন। উপরে রং লাগিয়ে লক্কড়-ঝক্কর এসব গাড়ি সড়কের নামানোর সঙ্গে সঙ্গে কোথাও না কোথাও বিকল হয়ে পড়ে। ফলে রং চং মাখা এসব গাড়ির কারণে ঈদে ঘরমুখো মানুষজন রাস্তায় রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হন। সেই ঘটে দুর্ঘটনাও।
সরজমিন মানিকগঞ্জের গাড়ি মেরামতের কয়েকটি কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন ভাঙ্গাচোরা গাড়িগুলো জোড়াতালি দেয়া হচ্ছে ওয়ার্কসপে। এই মুহূর্তে গ্যারেজের মিত্রিরা পুরাতন গাড়ি মেরামতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কোন গাড়ির ইঞ্জিন, ব্রেকে সমস্যা কিংবা সিটগুলো ছেঁড়া। আবার কোনো গাড়ির বডিতে রং চং নেই। ঈদের সময় বহু বছরের পুরাতন এসব গাড়িগুলো মেরামত করে নতুন সাজে রোডে নামানো হবে। বিশেষ করে ২৫-২৬ রোজার পর ওপরে ফিটফাট গাড়িগুলো রোডে নামানো হবে বলে জানিয়েছেন ওযার্কসপের কর্মচারীরা।
মানিকগঞ্জের উচুটিয়া এলাকায় রাব্বি মটর্সের এক শ্রমিক জানালেন, ঈদকে সামনে রেখে তাদের গ্যারেজে পুরাতন গাড়ির কাজ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। গাড়িতে রং চং ও ইঞ্জিনের ত্রুটিগুলো মেরামত করা হচ্ছে বেশি। ২৬ রোজার আগেই এসব গাড়ির কাজ শেষ হবে আর ২৭ রোজায় রোডে নামানো হবে।
রং মিস্ত্রি উজ্জল জানালেন, পুরাতন গাড়ি ঈদের সামনে রং করে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। যাতে যাত্রীরা আকৃষ্ট হয়। সময়মতো ডেলিভারি দেয়ার জন্য দিন-রাত গাড়িতে রঙের কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
পাশেই সানি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের দেখা গেলে সেখানকার লক্কড় ঝক্কর কয়েকটি গাড়ি মেরামতের কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। কেউ বাসে রং করছে আবার কেউ ইঞ্জিন খুলে বসেছে আবার কেউ সিট ও বডির কাজ করছে। এই কারখানায় মেরামত করতে আসা যাত্রী সেবা গাড়ির চালক ইমরান জানালেন, ঈদের সময় প্রত্যেক যাত্রীই চায় রং চং করা সুন্দর গাড়িতে উঠতে। তাই বাসের ভেতরের সিট ও বডিতে রঙের কাজ করাতে আনা হয়েছে। ঈদের সময় গাড়ির ফিটনেস না থাকলে পুলিশ ও সার্জেন্টরা বিরক্ত করে। আর সারা বছরের চাইতে ঈদের সময় কিছু বাড়তি টাকা কামানো যায়।
রং মিস্ত্রি আলিম জানালেন, আমরা এখন পুরো ব্যস্ত সময় পার করছি। ২৭ রোজার মধ্যে গাড়িতে রং চং শেষ করে ডেলিভারি দিতে হবে। আমাদের হাতের যাদুতে গাড়িগুলোকে একদম নতুন সাজে সাজিয়ে দিচ্ছি। দেখে বুঝার উপায় নেই কোনটা পুরাতন আর কোনটা নতুন। এই গ্যারেজের মতো মানিকগঞ্জসহ দেশের আরো সব গ্যারেজে চলছে লক্কড় ঝক্কর গাড়ি মেরামতের কাজ।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা বলছে, ঈদ এলেই রোডে লক্কর ঝক্কর গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। ফিটনেসবিহীন বহু বছরের পুরাতন গাড়িগুলো রং করে রোডে চলাচল করলেও রোড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো মনিটরিং দেখা য়ায় না।
বাস যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানালেন, রং চং মেখে গাড়িগুলো রোডে নামানোর ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। আসলে এই গাড়িগুলো হচ্ছে ওপরে ফিটফাট এবং ভেতরে সদর ঘাট। প্রশাসনের নজরদারি থাকলে ঈদে পুরানো ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো চলাচলে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা আব্বাস আলী জানালেন, লক্কড় ঝক্কর বাসের পাশাপাশি মহাসড়কে টেম্পো, সিএসজি চলাচল আবারও বেড়ে গেছে। এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচলে বন্ধ না হলে ঈদে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, প্রতি বারের মতো এবারের ঈদে মহাসড়কে আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছি। তিন দিন আগে থেকে মহাসড়কে ট্রাক উঠতে দেওয়া হবে না পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন গাড়ি যাতে আসতে না পারে সেদিকে আমরা ব্যবস্থা রাখবো।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলায় সড়ক পথে যাতায়াতের অন্যতম পথ হচ্ছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। অত্যন্ত ব্যস্ততম এই মহাসড়ককে এক সময় বলা হতো মৃত্যুর ফাঁদ। তবে কিছুটা কমে এলেও দুর্ঘটনা এখনো কমেনি। আর দুর্ঘটনার অন্যতম কারণই হচ্ছে লক্কর ঝক্কর এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এই গাড়িগুলো বিশেষ করে ঈদের আগে পরে দাপট বেড়ে যায় অনেকাংশে।
ঈদের আগের তিন-চারদিন সময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে চলেন যে যার আপনালয়। মানুষের চাপের বিপরীতে যানবাহন সংকট হয়ে পড়ার সেই সুযোগ কাজে লাগায় একশ্রেণির পরিবহন ব্যবসায়ী। রাস্তায় তখন ভালোমন্দ গাড়ির বাছ বিচার না করে মানুষজন হাতের কাছে যা পায় সেসব গাড়িতেই উঠে যাত্রা শুরু করেন। উপরে রং লাগিয়ে লক্কড়-ঝক্কর এসব গাড়ি সড়কের নামানোর সঙ্গে সঙ্গে কোথাও না কোথাও বিকল হয়ে পড়ে। ফলে রং চং মাখা এসব গাড়ির কারণে ঈদে ঘরমুখো মানুষজন রাস্তায় রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হন। সেই ঘটে দুর্ঘটনাও।
সরজমিন মানিকগঞ্জের গাড়ি মেরামতের কয়েকটি কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন ভাঙ্গাচোরা গাড়িগুলো জোড়াতালি দেয়া হচ্ছে ওয়ার্কসপে। এই মুহূর্তে গ্যারেজের মিত্রিরা পুরাতন গাড়ি মেরামতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কোন গাড়ির ইঞ্জিন, ব্রেকে সমস্যা কিংবা সিটগুলো ছেঁড়া। আবার কোনো গাড়ির বডিতে রং চং নেই। ঈদের সময় বহু বছরের পুরাতন এসব গাড়িগুলো মেরামত করে নতুন সাজে রোডে নামানো হবে। বিশেষ করে ২৫-২৬ রোজার পর ওপরে ফিটফাট গাড়িগুলো রোডে নামানো হবে বলে জানিয়েছেন ওযার্কসপের কর্মচারীরা।
মানিকগঞ্জের উচুটিয়া এলাকায় রাব্বি মটর্সের এক শ্রমিক জানালেন, ঈদকে সামনে রেখে তাদের গ্যারেজে পুরাতন গাড়ির কাজ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। গাড়িতে রং চং ও ইঞ্জিনের ত্রুটিগুলো মেরামত করা হচ্ছে বেশি। ২৬ রোজার আগেই এসব গাড়ির কাজ শেষ হবে আর ২৭ রোজায় রোডে নামানো হবে।
রং মিস্ত্রি উজ্জল জানালেন, পুরাতন গাড়ি ঈদের সামনে রং করে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। যাতে যাত্রীরা আকৃষ্ট হয়। সময়মতো ডেলিভারি দেয়ার জন্য দিন-রাত গাড়িতে রঙের কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
পাশেই সানি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের দেখা গেলে সেখানকার লক্কড় ঝক্কর কয়েকটি গাড়ি মেরামতের কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। কেউ বাসে রং করছে আবার কেউ ইঞ্জিন খুলে বসেছে আবার কেউ সিট ও বডির কাজ করছে। এই কারখানায় মেরামত করতে আসা যাত্রী সেবা গাড়ির চালক ইমরান জানালেন, ঈদের সময় প্রত্যেক যাত্রীই চায় রং চং করা সুন্দর গাড়িতে উঠতে। তাই বাসের ভেতরের সিট ও বডিতে রঙের কাজ করাতে আনা হয়েছে। ঈদের সময় গাড়ির ফিটনেস না থাকলে পুলিশ ও সার্জেন্টরা বিরক্ত করে। আর সারা বছরের চাইতে ঈদের সময় কিছু বাড়তি টাকা কামানো যায়।
রং মিস্ত্রি আলিম জানালেন, আমরা এখন পুরো ব্যস্ত সময় পার করছি। ২৭ রোজার মধ্যে গাড়িতে রং চং শেষ করে ডেলিভারি দিতে হবে। আমাদের হাতের যাদুতে গাড়িগুলোকে একদম নতুন সাজে সাজিয়ে দিচ্ছি। দেখে বুঝার উপায় নেই কোনটা পুরাতন আর কোনটা নতুন। এই গ্যারেজের মতো মানিকগঞ্জসহ দেশের আরো সব গ্যারেজে চলছে লক্কড় ঝক্কর গাড়ি মেরামতের কাজ।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা বলছে, ঈদ এলেই রোডে লক্কর ঝক্কর গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। ফিটনেসবিহীন বহু বছরের পুরাতন গাড়িগুলো রং করে রোডে চলাচল করলেও রোড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো মনিটরিং দেখা য়ায় না।
বাস যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানালেন, রং চং মেখে গাড়িগুলো রোডে নামানোর ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। আসলে এই গাড়িগুলো হচ্ছে ওপরে ফিটফাট এবং ভেতরে সদর ঘাট। প্রশাসনের নজরদারি থাকলে ঈদে পুরানো ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো চলাচলে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা আব্বাস আলী জানালেন, লক্কড় ঝক্কর বাসের পাশাপাশি মহাসড়কে টেম্পো, সিএসজি চলাচল আবারও বেড়ে গেছে। এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচলে বন্ধ না হলে ঈদে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, প্রতি বারের মতো এবারের ঈদে মহাসড়কে আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছি। তিন দিন আগে থেকে মহাসড়কে ট্রাক উঠতে দেওয়া হবে না পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন গাড়ি যাতে আসতে না পারে সেদিকে আমরা ব্যবস্থা রাখবো।
No comments