পুলিশের আবাসন প্রকল্প নিয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
‘পুলিশের আবাসন প্রকল্পে ভরাট হচ্ছে খাল!’ শিরোনামে ২১ মে যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতি। পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এবং বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. শাহাব উদ্দীন কোরেশী পৃথকভাবে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছেন। রোববার রাতে যুগান্তরে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তারা প্রকাশিত সংবাদটিকে অসত্য, ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে দাবি করেন। বলা হয়, রিপোর্টটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। প্রতিবাদে আরও বলা হয়, সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যথাযথভাবে আইন মেনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকার পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে না।
বাগানবাড়ি ব্রিজের নিচে বালু ফেলে ভরাট করার তথ্য সঠিক নয়। প্রকাশিত খবরের সঙ্গে যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তাও পুলিশ প্রকল্প এলাকাভুক্ত নয়। প্রকল্প এলাকায় রাজউকের একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেছে। তারা নিশ্চিত হয়েছেন বোয়ালিয়া খালের কোনো অংশ ভরাট করা হচ্ছে না। বরং খালের প্রশস্ততার চেয়ে চারগুণ জায়গা বেশি রেখে কাজ চলছে। প্রকল্পের জমি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত এবং ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা ডিসি অফিসে জমির মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। প্রতিবাদ পত্রে দাবি করা হয়, মহলবিশেষ শুরু থেকে পুলিশ আবাসন প্রকল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এ কারণে উচ্চ আদালতে ৩৯টি রিট মোকদ্দমা রুজু হয়। মহামান্য আপিল বিভাগ সকল রিট/আপিল খারিজপূর্বক বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির অনুকূলে রায় প্রদান করেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদক মনে করেন, পুলিশ আবাসন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি পুরোপুরি ষড়যন্ত্রমূলক। যার নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএনপি সরকারের বিদায়ের প্রাক্কালে জনস্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে পুলিশ আবাসন প্রকল্পের নামে এ জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী এভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার বিধান নেই। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে এভাবে নানা ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় ফাঁসির আসামি হিসেবে কারাভোগ করছেন বাবর। তিনি বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কনডেম সেলে আছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা বিচারাধীন। তাই পুলিশ আবাসন প্রকল্পের শুরুতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি ছিল নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। তবে এ বিষয়টি নিষ্পত্তি করার সময় আদালত সাফ বলে দিয়েছেন বাজারমূল্যে জমির দাম পরিশোধ করতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রকল্প এলাকার জমির বাজারমূল্য বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদক মনে করেন, পুলিশ আবাসন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি পুরোপুরি ষড়যন্ত্রমূলক। যার নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএনপি সরকারের বিদায়ের প্রাক্কালে জনস্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে পুলিশ আবাসন প্রকল্পের নামে এ জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী এভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার বিধান নেই। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে এভাবে নানা ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় ফাঁসির আসামি হিসেবে কারাভোগ করছেন বাবর। তিনি বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কনডেম সেলে আছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা বিচারাধীন। তাই পুলিশ আবাসন প্রকল্পের শুরুতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি ছিল নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। তবে এ বিষয়টি নিষ্পত্তি করার সময় আদালত সাফ বলে দিয়েছেন বাজারমূল্যে জমির দাম পরিশোধ করতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রকল্প এলাকার জমির বাজারমূল্য বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা।
অথচ পুলিশ আবাসন প্রকল্পের জমির মূল্য হিসেবে ডিসি অফিসে জমা দেয়া হয় বিঘাপ্রতি ১২ লাখ টাকা। যে কারণে কোনো একজন ব্যক্তিকে এখন পর্যন্ত ডিসি অফিস জমির মূল্য বুঝিয়ে দিতে পারেনি। এ বিষয়ে একটি প্রমাণও দিতে পারবেন না কেউ। ফলে পুলিশ আবাসন প্রকল্পের জমির বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন যুগান্তরকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোপুরি সত্য। এ বিবেচনায় পুলিশ হাউজিং এখনও জমির মালিকানা অর্জন করেনি। এমনটি মনে করেন, জমির মালিকরা। অপরদিকে প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন করতে গিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পানি প্রবাহের বিভিন্ন পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেমন উত্তর দিক থেকে পানি প্রবাহের যে বড় নালা ছিল তা বন্ধ করা হয়েছে অনেক আগেই। আর ৩০০ ফুট থেকে পুলিশের প্রকল্পে যাওয়ার জন্য প্রস্তাবিত ১০০ ফুটের খালের জায়গা দিয়ে একটি রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে পানি প্রবাহের জন্য যে পাইপ বসানো হয়েছে তা অনেক উপরে। ওই পাইপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ খালি, আর এক ভাগ দিয়ে সামান্য পানি যেতে পারছে। কিন্তু পাইপটি আরও নিচে স্থাপন করা প্রয়োজন থাকলেও পুলিশের পক্ষ থেকে তা করা হয়নি। এসব কারণে এলাকার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, দ্রুত সমাধান করা না হলে প্রধান সড়কেও পানি চলে আসতে পারে। এদিকে রাজউকের ১০০ ফুট লেক প্রকল্পে পরিচালক প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সোমবার যুগান্তরকে জানিয়েছেন,
‘পুলিশ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হলেও তারা বোয়ালিয়া খাল ভরাট বন্ধ করছে না। উপরন্তু ১০০ ফুট লেকের জায়গার মাটি কেটে পুলিশ নিজেদের প্রকল্পের নিচু জায়গা ভরাট করছে। এতে করে আমরা যখন প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার এ লেক প্রকল্পটির কাজ শুরু করব তখন বেকায়দার পড়তে হবে। সঠিকভাবে লেকের নকশা বাস্তবায়ন নিয়ে সমস্যা হবে।’ পুলিশের প্রতিবাদপত্রের এক স্থানে বলা হয়েছে, যুগান্তরে প্রকাশিত ছবিটি তাদের প্রকল্প এলাকার নয়। কিন্তু প্রতিবেদক শতভাগ নিশ্চিত, বোয়ালিয়া খাল ও পানি নিষ্কাশন নালা ভরাটের ফলে ওই এলাকায় এমন বহু চিত্র বিদ্যমান। সরেজমিন গেলে এর প্রমাণ মিলবে। এ অবস্থায় প্রতিবেদক মনে করেন, প্রকাশিত রিপোর্টটি তথ্যভিত্তিক ও সঠিক। সরেজমিন যাচাই করে এবং ভুক্তভোগী অনেকের বক্তব্য নিয়ে রিপোর্টটি করা হয়েছে। এতে জনস্বার্থ ছাড়া ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য নেই। বরং প্রতিবাদলিপি পড়ে মনে হয়েছে, ভূমি উন্নয়নের নামে জনস্বার্থের পরিপন্থী যেসব কর্মকাণ্ড প্রকল্প এলাকায় হচ্ছে তার বাস্তব চিত্র পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে যাচ্ছে না।
No comments