লোকজন সরাতে গড়িমসিতে ক্ষোভ
সিরিয়ার অবরুদ্ধ জনপদ আল ফুয়া ও কেফরায়া থেকে অসুস্থ ও আহত লোকজনকে সরিয়ে নিতে যাওয়া দুটি বাসে আগুন জ্বলছে। পথে ইদলিব প্রদেশে বাসগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রয়টার্স |
সিরিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত আলেপ্পো থেকে বিদ্রোহী ও আটকে পড়া বেসামরিক লোকদের বের হতে দেওয়া নিয়ে গড়িমসি চলছেই। এতে অসুস্থ ও নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে আটকে পড়া মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে অবরুদ্ধ আলেপ্পোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সেখানে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববারই এ ভোট হওয়ার কথা ছিল। সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, লোকজনকে সরে আসার সুযোগ করে দিতে দুই পক্ষে শেষ পর্যন্ত একটি চুক্তি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, লোকজনকে সরিয়ে নিতে অনেক বাস আলেপ্পোর বিভিন্ন এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। প্রায় ১০০ বাস এ জন্য প্রস্তুত আছে। তবে ফুয়া ও কেফরায়া এলাকায় ঢোকা কিছু বাসে আগুন দেয় বন্দুকধারীরা। এএফপির এক সাংবাদিক জানান, প্রায় ২০টি বাস থেকে চালকদের নামিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বাসে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় অন্তরায় হবে না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ফ্রান্স এক প্রস্তাবে বলেছে, আলেপ্পোর লাখো মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিদ্রোহী যোদ্ধা ও বেসামরিক লোক সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ এবং বেসামরিক লোকদের নিরাপত্তার ওপর নজর রাখতে একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠানো দরকার।
এ প্রস্তাবের ওপর গতকাল ভোট হওয়ার কথা। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্রদেশ আরেক স্থায়ী সদস্য রাশিয়া প্রস্তাবটির ব্যাপারে ভেটো দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। ২০১১ সালে সিরিয়া সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত ছয়টি প্রস্তাব মস্কো ভেটো দিয়ে আটকে দিয়েছে। শনিবার আলেপ্পোর বহু লোক গরম কাপড় ছাড়াই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে। সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে দেরি হওয়ায় অনেককেই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে দেখা যায়। ফ্রান্সের প্রস্তাবের খসড়ায় সিরিয়ায়, বিশেষ করে আলেপ্পোয় চিকিৎসক, হাসপাতাল এবং রোগীবাহী গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত সিরিয়ার সরকারি বাহিনী হাজার ছয়েক লোককে এত দিন বিদ্রোহীদের দখলে থাকা পূর্ব আলেপ্পো থেকে বের হতে দিয়েছিল। শুক্রবার সকালে পথ আটকে দিয়ে সরকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্রোহীরা সন্ধির শর্ত ভেঙে ভারী অস্ত্র ও জিম্মিদের নিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করায় তারা আবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী আলেপ্পোর পূর্ব অংশ কয়েক বছর ধরে বিদ্রোহীদের দখলে ছিল। সম্প্রতি সরকারি বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে নগরের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
No comments