সরকার কি জঙ্গিদের ভয় পাচ্ছে? by মশিউল আলম
গণজাগরণ
মঞ্চের শাহবাগ আন্দোলন চলার সময় সে আন্দোলনের এক কর্মী ও ব্লগার রাজীব
হায়দার নৃশংসভাবে খুন হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজীবের স্বজনদের
সমবেদনা জানাতে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান ও
সর্বশেষ অনন্ত বিজয় দাশের একই রকমের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর পক্ষ থেকে
কোনো প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি। অবশ্য এমন নয় যে এ ধরনের প্রতিটি
হত্যাকাণ্ডেই স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
কিন্তু একের পর এক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে হত্যাকারীদের শনাক্ত ও
গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর
ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারি নেতাদের প্রায়-নীরবতা, কিংবা হত্যাকারীদের ধরার
ব্যাপারে জোরালো উদ্যোগের অভাব কিছু প্রশ্নের জন্ম দেয়। অভিজিৎ রায়ের
স্ত্রী রাফিদা আহমেদ, যিনি নিজেও একই হামলায় গুরুতর জখম হয়ে প্রাণে বেঁচে
গেছেন, তিনি সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন,
‘আমার মনে হয়, সরকার জঙ্গিবাদকে ভয় পায়।’ অনন্ত হত্যাকাণ্ডের দিন রাতে
বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান
চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সরকার এসব হত্যাকারী উগ্রপন্থী
গোষ্ঠীগুলোকে ভয় পাচ্ছে কি না। এ প্রশ্নের সোজাসুজি উত্তর না দিয়ে ইকবাল
সোবহান চৌধুরী বললেন, শেখ হাসিনার সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো
টলারেন্স অবস্থান নিয়েছে, জঙ্গিবাদ দমনে অনেক কিছু করেছে, ইত্যাদি।
এটা সত্য যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ দেশে জঙ্গিবাদের যে দৌরাত্ম্য দেখা গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে তেমনটি দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে মিলে শেখ হাসিনার সরকার এ দেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধন করেছে। এ সরকারের নেতাদের গর্বের সঙ্গে বলতে শোনা যায়, তাঁরা জঙ্গিবাদ দমন করেছেন।
কিন্তু একের পর এক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকাণ্ডের ঠিক পর পরই পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘হামলার ধরন থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ব্লগার রাজীব ও অভিজিতের মতো এই হত্যায়ও উগ্রপন্থী কোনো গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে।’
তাহলে কী দাঁড়াল? সরকার জঙ্গিবাদ দমন করে ফেলেছে, আবার সেই দমিত জঙ্গিরাই একের পর এক ব্লগারদের হত্যা করে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে—এটা কেমন ব্যাপার? ব্যাপার এই যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দৃশ্যমান ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হচ্ছে জঙ্গিরা দমিত হয়নি।
তাদের এই দৃশ্যমান ব্যর্থতা কি শক্তিসামর্থ্য ও দক্ষতার ঘাটতির ফল? র্যাব, পুলিশ ও সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি এতই দুর্বল ও অদক্ষ যে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ইত্যাদি নামের ক্ষুদ্র উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পেরে উঠছে না? যদি তা-ই হয়, তাহলে জাতির সামনে আরও দুঃখ-দুর্দশা আছে। কিন্তু তা যদি না হয়, বাস্তবে যদি এমন হয় যে এসব উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে অনায়াসে দমন করার সামর্থ্য ও দক্ষতা র্যাব-পুলিশের থাকা সত্ত্বেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারছে—তাহলে?
তাহলে উঠে আসে একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন: ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডগুলোর ব্যাপারে সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান কী? রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ডের সময় প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা প্রকাশের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক অবস্থান ব্যক্ত হয়েছিল, সরকার কি এখনো সে অবস্থানে অটল আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য থেকে। তিনি সম্প্রতি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা একটা সূক্ষ্ম রেখায় হাঁটছি। আমরা চাই না লোকজন আমাদের নাস্তিক বলুক।... যেহেতু আমাদের বিরোধী দল আমাদের বিপক্ষে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করে, সে কারণে আমরা তাঁর (অভিজিৎ) পক্ষে জোরালোভাবে প্রকাশ্যে আসতে পারি না।’ অর্থাৎ, অভিজিৎ রায় ও খুনের শিকার অন্য ব্লগাররা যেহেতু ‘নাস্তিক’ হিসেবে পরিচিত, তাই তাঁদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এই সরকার প্রকাশ্যে জোরালো অবস্থান নিলে লোকজন এই সরকারকে নাস্তিক বলবে। কিন্তু রাজনীতির এই ব্যবহারিক কৌশল সম্ভবত অমূলক আশঙ্কার ফল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের এই দেশে অধিকাংশ মানুষ নিরীশ্বরবাদ অপছন্দ করেন বটে, কিন্তু একজন নিরীশ্বরবাদী বা ‘নাস্তিকের’ও যে বেঁচে থাকার অধিকার আছে—এ ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষের দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না। সহিংস ধর্মান্ধতার রাজনীতি যাঁরা করেন, শুধু তাঁরা ছাড়া আর কে মনে করে যে নাস্তিককে খুন করলে কোনো অপরাধ হয় না?
বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ যদি সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মের কার্ড খেলে, এবং সরকারও যদি ভয় পেয়ে একই কার্ড হাতে তুলে নেয়, অর্থাৎ ‘নাস্তিক’দের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকে, তাহলে সরকারের কোনো রাজনৈতিক লাভ হতে পারে না। কারণ, রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং সেই নিরাপত্তা ভঙ্গ হলে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা ও অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের ওপর অর্পিত রয়েছে। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলেই বরং সরকার রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হত্যাকারীরা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে একের পর এক ‘নাস্তিক’কে হত্যা করে চললে, কোনো হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত না হলে, নানা রকমের জল্পনা-কল্পনা ছড়াবে। সরকারের বিরোধী পক্ষ এমন কথা বলার সুযোগ পাবে যে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ডগুলো সরকারই সংঘটিত করিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কথাবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে যে সরকারই ব্লগারদের হত্যা করিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপর দায় চাপানোর নাটক সাজাচ্ছে। এমন কথাও কেউ কেউ বলছেন, দেশে তো জঙ্গিই নেই, এই সরকারই তো জঙ্গিদের নির্মূল করে ফেলেছে, তাহলে এখন তারা কোত্থেকে এসে ব্লগার হত্যা করছে? গুজব, জল্পনা-কল্পনা, নানা রকমের ষড়যন্ত্রতত্ত্ব সৃষ্টি হওয়ার ও ছড়িয়ে পড়ার যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। সরকারের রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সবচেয়ে বড় উপায় সততার সঙ্গে দক্ষ সরকারের আচরণ করা, বিরোধী পক্ষকে রাজনৈতিক কারসাজিতে পরাজিত করার প্রয়াসে লিপ্ত থাকা নয়।
মশিউল আলম: সাংবাদিক।
এটা সত্য যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ দেশে জঙ্গিবাদের যে দৌরাত্ম্য দেখা গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে তেমনটি দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে মিলে শেখ হাসিনার সরকার এ দেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধন করেছে। এ সরকারের নেতাদের গর্বের সঙ্গে বলতে শোনা যায়, তাঁরা জঙ্গিবাদ দমন করেছেন।
কিন্তু একের পর এক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকাণ্ডের ঠিক পর পরই পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘হামলার ধরন থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ব্লগার রাজীব ও অভিজিতের মতো এই হত্যায়ও উগ্রপন্থী কোনো গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে।’
তাহলে কী দাঁড়াল? সরকার জঙ্গিবাদ দমন করে ফেলেছে, আবার সেই দমিত জঙ্গিরাই একের পর এক ব্লগারদের হত্যা করে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে—এটা কেমন ব্যাপার? ব্যাপার এই যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দৃশ্যমান ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হচ্ছে জঙ্গিরা দমিত হয়নি।
তাদের এই দৃশ্যমান ব্যর্থতা কি শক্তিসামর্থ্য ও দক্ষতার ঘাটতির ফল? র্যাব, পুলিশ ও সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি এতই দুর্বল ও অদক্ষ যে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ইত্যাদি নামের ক্ষুদ্র উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পেরে উঠছে না? যদি তা-ই হয়, তাহলে জাতির সামনে আরও দুঃখ-দুর্দশা আছে। কিন্তু তা যদি না হয়, বাস্তবে যদি এমন হয় যে এসব উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে অনায়াসে দমন করার সামর্থ্য ও দক্ষতা র্যাব-পুলিশের থাকা সত্ত্বেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারছে—তাহলে?
তাহলে উঠে আসে একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন: ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডগুলোর ব্যাপারে সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান কী? রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ডের সময় প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা প্রকাশের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক অবস্থান ব্যক্ত হয়েছিল, সরকার কি এখনো সে অবস্থানে অটল আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য থেকে। তিনি সম্প্রতি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা একটা সূক্ষ্ম রেখায় হাঁটছি। আমরা চাই না লোকজন আমাদের নাস্তিক বলুক।... যেহেতু আমাদের বিরোধী দল আমাদের বিপক্ষে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করে, সে কারণে আমরা তাঁর (অভিজিৎ) পক্ষে জোরালোভাবে প্রকাশ্যে আসতে পারি না।’ অর্থাৎ, অভিজিৎ রায় ও খুনের শিকার অন্য ব্লগাররা যেহেতু ‘নাস্তিক’ হিসেবে পরিচিত, তাই তাঁদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এই সরকার প্রকাশ্যে জোরালো অবস্থান নিলে লোকজন এই সরকারকে নাস্তিক বলবে। কিন্তু রাজনীতির এই ব্যবহারিক কৌশল সম্ভবত অমূলক আশঙ্কার ফল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের এই দেশে অধিকাংশ মানুষ নিরীশ্বরবাদ অপছন্দ করেন বটে, কিন্তু একজন নিরীশ্বরবাদী বা ‘নাস্তিকের’ও যে বেঁচে থাকার অধিকার আছে—এ ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষের দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না। সহিংস ধর্মান্ধতার রাজনীতি যাঁরা করেন, শুধু তাঁরা ছাড়া আর কে মনে করে যে নাস্তিককে খুন করলে কোনো অপরাধ হয় না?
বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ যদি সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মের কার্ড খেলে, এবং সরকারও যদি ভয় পেয়ে একই কার্ড হাতে তুলে নেয়, অর্থাৎ ‘নাস্তিক’দের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকে, তাহলে সরকারের কোনো রাজনৈতিক লাভ হতে পারে না। কারণ, রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং সেই নিরাপত্তা ভঙ্গ হলে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা ও অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের ওপর অর্পিত রয়েছে। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলেই বরং সরকার রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হত্যাকারীরা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে একের পর এক ‘নাস্তিক’কে হত্যা করে চললে, কোনো হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত না হলে, নানা রকমের জল্পনা-কল্পনা ছড়াবে। সরকারের বিরোধী পক্ষ এমন কথা বলার সুযোগ পাবে যে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ডগুলো সরকারই সংঘটিত করিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কথাবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে যে সরকারই ব্লগারদের হত্যা করিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপর দায় চাপানোর নাটক সাজাচ্ছে। এমন কথাও কেউ কেউ বলছেন, দেশে তো জঙ্গিই নেই, এই সরকারই তো জঙ্গিদের নির্মূল করে ফেলেছে, তাহলে এখন তারা কোত্থেকে এসে ব্লগার হত্যা করছে? গুজব, জল্পনা-কল্পনা, নানা রকমের ষড়যন্ত্রতত্ত্ব সৃষ্টি হওয়ার ও ছড়িয়ে পড়ার যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। সরকারের রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সবচেয়ে বড় উপায় সততার সঙ্গে দক্ষ সরকারের আচরণ করা, বিরোধী পক্ষকে রাজনৈতিক কারসাজিতে পরাজিত করার প্রয়াসে লিপ্ত থাকা নয়।
মশিউল আলম: সাংবাদিক।
No comments