‘নিরাপত্তা বাহিনীর আইন লঙ্ঘনের বিচার করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ’ -এইচআরডব্লিউ’র বার্ষিক প্রতিবেদন
হত্যা,
গুম ও নির্বিচারে গ্রেপ্তার সহ নিরাপত্তা বাহিনীসমূহের মারাত্মক আইন
লঙ্ঘনের বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা অপহরণ,
হত্যা ও খেয়ালখুশিমতো আটক করছে। বিশেষ করে তা করা হচ্ছে বিরোধী দলীয়
নেতাকর্মীদের টার্গেট করে। সমালোচকদের দমন করার লক্ষ্যে সরকার বেশ কিছু
পদক্ষেপ নিয়েছে। গণমাধ্যম বিষয়ক নতুন নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। এতে মুক্ত মত
প্রকাশ ও বক্তব্যের ক্ষেত্রে অগ্রহণযোগ্য সীমারেখা আরোপ করা হয়েছে। ২০১৩
সালে সরকার বেশ কয়েকটি টেলিভিশন ও সংবাদ মাধ্যম সমালোচনামুলক রিপোর্ট করায়
বন্ধ করে দেয়। তা গত বছরজুড়েও বন্ধ ছিল। শ্রম আইন সংশোধন করলেও শ্রমিকরা
হয়রান হচ্ছেন। তারা ইউনিয়ন করতে গেলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। তারা সহিংস
আচরণের শিকার হন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
তার বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে। ৬৫৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে
বাংলাদেশে ২০১৪ সালে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এতে বাংলাদেশ
অধ্যায়টি ৫ পৃষ্ঠার। এতে বিশ্বের ৯০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি
পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারি নিরাপত্তা
সংস্থাগুলো ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ও পরে মানবাধিকার লংঘন করেছে।
অপরদিকে বিরোধী দলগুলোর সদস্যরা অবরোধ ও জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন
করে সহিংস কর্মকান্ড ও নির্বিচার আক্রমণে জড়িত ছিল। ভাল তথ্যপ্রমাণ থাকা
সত্ত্বেও নির্বাচন স¤পর্কিত সহিংসতা অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর মানবাধিকার
লঙ্ঘণের ঘটনাসমূহের দায়ে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার ক্ষেত্রে কোনো
পদক্ষেপ নেয় নি সরকার। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল, মে মাসে র্যাপিড অ্যাকশন
ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা, যারা স্থানীয় এক
রাজনীতিককে হত্যা করতে উচ্চ পর্যায়ে (হাই প্রোফাইল) চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, র্যাবের
কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু সরকারকে
অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, বিচার যাতে বেছে বেছে বা পারিবারিক ও রাজনৈতিক
স¤পর্কের উপর নির্ভর করে করা না হয়। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে সরকারের
স্বার্থ রক্ষা হওয়ায়, সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাথমিকভাবে দায়মুক্তি
দিয়ে রেখেছে এবং তাদের মারাত্মক ঘটনাগুলোর বেলায় চোখ বন্ধ রেখেছে। যে দলই
ক্ষমতায় থাকুক বহুদিন ধরে এটি প্রচলিত রীতিতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশে।
No comments