ইয়ানুকোভিচ অপসারিত
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইউনুকোভিচ বিদায় নিয়েছেন। তাঁর স্থলে আপাতত দায়িত্ব পালন করছেন স্পিকার ওলেকসান্দার তারচিনভ। গতকাল রোববার পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশনে তিনি আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে পার্লামেন্ট সদস্যদের (এমপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গত শনিবার প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন পার্লামেন্ট সদস্যরা। একই সঙ্গে তাঁদের ভোটে মুক্তি পেয়েছেন কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া তিমোশেঙ্কো। গতকাল পার্লামেন্টের অধিবেশনে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ও স্পিকার বলেন, ‘নতুন সরকার গঠনই এখন প্রথম ও প্রধান কাজ।’ বিরোধী দলের নেতা ভিতালি ক্লিৎচকো গতকাল পার্লামেন্টে বলেন, সরকার গঠনের জন্য আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ২৫ মে তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে ইউরোপের আধুনিক একটি দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ ইয়ানুকোভিচ পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ইয়ানুকোভিচ বলেন, তিনি পদত্যাগ করেননি, দেশও ছাড়েননি। তাই তিনিই দেশের বৈধ প্রেসিডেন্ট। পার্লামেন্ট তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে ‘অবৈধ’ কাজ করেছে। তিনি একে তিরিশের দশকে নাৎসি বাহিনীর জার্মানির ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গেও তুলনা করেন।
গত শনিবার থেকে ইয়ানুকোভিচের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও বাসভবন গত শনিবার থেকে ফাঁকা। তবে সাক্ষাৎকার প্রচারকারী টেলিভিশন দাবি করেছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খারকিভ শহরে ইয়ানুকোভিচের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ইয়ানুকোভিচের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাঁর দলের নেতা ওলেহ সারয়োভ বলেন, ‘আমাদের জীবিত ও বৈধ একজন প্রেসিডেন্ট আছেন। তবে এই মুহূর্তে তিনি কোথায় আছেন, তা নিশ্চিত নই।’ ইয়ানুকোভিচ ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ বললেও মন্ত্রিসভা অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত রয়েছে। ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিমোশেঙ্কো শনিবার রাতে মুক্তি পেয়ে কিয়েভের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। হুইলচেয়ারে বসেই সমর্থকদের উদ্দেশে আবেগঘন বক্তৃতা করেন তিনি। তিমোশেঙ্কো বিক্ষোভকারীদের ‘নায়ক’ বলে অভিহিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিমোশেঙ্কো বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই স্কয়ার ছেড়ে যাবেন না...সেই অধিকার কারও নেই। ইয়ানুকোভিচের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা এই ক্যানসার অপসারণ করতে পেরেছি।’ ২০১১ সাল থেকে কারাভোগ করছিলেন তিমোশেঙ্কো। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল তাঁর। তাঁর দলের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়। গত বছরের নভেম্বরে শুরু হওয়া ইয়ানুকোভিচবিরোধী আন্দোলনের মূল কেন্দ্র ছিল ইনডিপেনডেন্স স্কয়ার। বিবিসি ও রয়টার্স।
No comments