ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ইয়ানুকোভিচবিরোধী বিক্ষোভের সময় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারের কাছে গতকাল সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় মোমবাতি। তার পাশ দিয়ে এক ধর্মগুরুকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। ছবি: রয়টার্স |
ইউক্রেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। শান্তিকামী জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে গতকাল সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়। ইউক্রেনের সার্বিক পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কিয়েভে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাশিয়া। এদিকে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে ইউক্রেনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে বিরোধী নেতা ভিতালি ক্লিৎচকো অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি প্রকাশ করেন অন্তর্বর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্সেন আভাকোভ। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আভাকোভ বলেন, ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে শান্তিকামী জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর একটি মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইয়ানুকোভিচসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইয়ানুকোভিচকে সর্বশেষ গত রোববার বালাকালাভা এলাকায় দেখা গেছে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনী প্রত্যাহার হওয়ার পর তিনি ঘনিষ্ঠ একজন সহযোগীর সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অজ্ঞাতস্থানে চলে গেছেন। কানাল টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আভাকোভ বলেন, ‘এই সময় কারও অতিরিক্ত আবেগ না দেখানো উচিত।
এখন ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারের মতো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়, সেখানে কর্তৃপক্ষ শান্তিকামী জনগণের বিরুদ্ধে গিয়েছিল।’ রাশিয়াপন্থী হিসেবে পরিচিত ইয়ানুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে ভোট দেওয়ায় ইউক্রেনের পার্লামেন্টের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মস্কো। কিয়েভ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিজের মনোভাবের প্রকাশও ঘটিয়েছে দেশটি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, কিয়েভে বিরোধীরা ক্ষমতা দখল করেছে। অস্ত্র ছাড়ার আহ্বান উপেক্ষা করে সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে ইউক্রেনের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা ওলেকসান্দার তারচিনভ বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে ‘সমতার ভিত্তিতে ও ভালো প্রতিবেশীর’ সম্পর্ক গড়ে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস গত রোববার বলেন, রাশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই ইউক্রেনে চলমান অস্থিতিশীলতার অবসান ঘটাতে হবে। এনবিসি টেলিভিশনের টক শো ‘মিট দ্য প্রেস’-এ অংশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের সহিংসতা বা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়া রাশিয়া, ইউক্রেন, ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র—কারও জন্যই ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমেই সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। রাশিয়াপন্থী বলে পরিচিত ইয়ানুকোভিচ ইউক্রেনের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ইইউর সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে সহায়তা নেওয়ায় বিক্ষোভে নামে ইইউপন্থীরা। বিবিসি ও এএফপি।
No comments