ফুটবল যখন সমুদ্রশহরে
সমুদ্রের ঢেউ যেন হোটেলের দেয়ালে ধাক্কা মারছে অনবরত। আটটি দলই একই হোটেলে থাকায় সবার কাছেই তা এক রকম লাগার কথা। কিন্তু কারও কাছে উপভোগ্য, কারও কাছে একদমই হয়তো ভালো লাগছে না!
ভালো না লাগা দলগুলোর মধ্যে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাই থাকবে সবার ওপরে। প্রথম ম্যাচে ১০ জন নিয়ে খেলে মিয়ানমারের কাছে ০-৪ গোলে বিধ্বস্ত, তারপর থেকে হোটেল গালাদারির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভুলেও বোধহয় সমুদ্রে চোখ ফেলেননি দলটির খেলোয়াড়েরা।
কাল মাঠে আসার আগে হোটেল লবিতে শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের অচেনা লাগছিল। পরিচিত মুখগুলো কোথায় যেন উধাও! এক খেলোয়াড় মেটালেন সেই কৌতূহল, ঢাকায় সাফ ফুটবলে ব্যর্থতার পর তিনজন ছাড়া বাকি সব সিনিয়র খেলোয়াড়কেই দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবার।
নতুন দলটাকে নিয়ে মিয়ানমারের পর তাজিকিস্তানও যেন ছেলেখেলা না করে, শ্রীলঙ্কা ফুটবল ফেডারেশনের সদা ব্যস্ত মিডিয়া কর্তা রুকমল পেরেরইরা তা নিয়ে বেশ রসিকতাই করলেন কাল শ্রীলঙ্কা-তাজিকিস্তান ম্যাচের বিরতির সময়, ‘ভাই (তাজিকিস্তান) গোল বেশি দিয়ো না, নতুন দল আমাদের!’ সেটিই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। দুই গোলে পিছিয়ে পড়া ম্যাচ ১-৩ হলো। এই মঞ্চে স্থানীয় দল শ্রীলঙ্কা দল এখন শুধুই দর্শক।
অধিনায়ক চাতুরা মাথুরাঙ্গা দুবাইতে খেলছেন। স্ট্রাইকার কাসুন জয়াসুরিয়া কলম্বোতে থাকলেও দৃশ্যপটে নেই। নতুন দল গঠনে সমর্থন থাকলেও একযোগে এভাবে দল থেকে সব তারকাকে ছাঁটাই করা হবে, ভাবতে পারেননি স্থানীয় অনেকেই।
উত্তর কোরিয়া যেমন ভাবতে পারেনি পরশু নিজেদের প্রথম ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের কাছে ১-১ গোলে আটকে যাবে। তা না ভাবুক,
এবারের বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া দেশটির প্রায় যুবদলের সঙ্গে ড্র করারও তো কম প্রাপ্তি নয় তুর্কমেনিস্তানের কাছে।
কিন্তু প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এতসব হিসাব-নিকাশ বোঝার উপায় কী? উপায় একটাই, দোভাষীর সাহায্য নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু দোভাষীকে সময়মতো পাওয়া গেলে তো? তুর্কমেনিস্তানের ফুটবলাররা ইংরেজি জানেন না বলেই মনে হচ্ছে। কিছু জিজ্ঞেস করলে হাঁ করে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে নিজের কাজে চলে যান। ভাবটা এমন—কথাটথা বলার এত দরকার কী!
টুর্নামেন্টের ৮ দলের তিনটিই অংশ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের— তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান। এদের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে কষ্ট করে হিমালয়ের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করা ভালো। নিজেদের ভাষা ছাড়া আর কিছু যেন তারা বোঝেই না!
ভারতীয় দলটির কাছেও এটি ‘কষ্টকর’ এক টুর্নামেন্টই হয়ে উঠেছে। ঢাকায় সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলটি চ্যালেঞ্জ কাপের ধকল সামলাতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। পরশু প্রথম ম্যাচে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে পেনাল্টি থেকে একটা গোল ফেরত দিতে পারাই ১-২-এ হারা ম্যাচে সান্ত্বনা হয়ে রইল তাদের জন্য।
সাফ ফুটবলে জেতা ভারতীয় দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় আসা দলটার পার্থক্য অনেক। সাফ জয়ের নায়ক গোলরক্ষক অরিন্দমকে পুরস্কৃত করে সিনিয়র দলে নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে দোহায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের জন্য তিনি এখন দুবাইতে জাতীয় দলের ক্যাম্পে।
সাফ দলের দু-তিনজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এই দলে নেই ইনজুরির কারণে। তা হোক, চ্যালেঞ্জ কাপে ভারত আছে, বোঝাই দায়!
সুগাধাদাসা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দিকে তাকালেও বোঝা যায় না, এখানে একটা টুর্নামেন্ট চলছে। কাল টেনেটুনে হয়তো শ-দুয়েক লোক পাওয়া গেল, তাও শ্রীলঙ্কার খেলা ছিল বলে।
প্রচার-প্রচারণা খুবই কম। স্টেডিয়ামের বাইরে কালই শহরের এক জায়গায় টুর্নামেন্টের একটা প্লাকার্ড চোখে পড়ল। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়, শ্রীলঙ্কায় ফুটবল নিয়ে স্থানীয় মিডিয়ারও আগ্রহ কম। অনেক কাগজে টুর্নামেন্টের খবরই থাকে না! যা দেখে ১২ দিনের টুর্নামেন্টের টিভি মিডিয়া বিপণনের দায়িত্বে থাকা এএফসি প্রতিনিধি জাপানি তরুণ কেনতারো হিয়োশি ভীষণই হতাশ, ‘প্রচার, মাঠে দর্শক আনা—এসব নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’
শ্রীলঙ্কার ফুটবলের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা মণিলাল ফার্নান্ডো ব্যস্ত ফিফা-এএফসি নিয়ে। সমুদ্রশহরে ক্রিকেট-রাগবির পর তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফুটবল তাই সেই পেছনের সারিতেই পড়ে রইল।
ভালো না লাগা দলগুলোর মধ্যে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাই থাকবে সবার ওপরে। প্রথম ম্যাচে ১০ জন নিয়ে খেলে মিয়ানমারের কাছে ০-৪ গোলে বিধ্বস্ত, তারপর থেকে হোটেল গালাদারির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভুলেও বোধহয় সমুদ্রে চোখ ফেলেননি দলটির খেলোয়াড়েরা।
কাল মাঠে আসার আগে হোটেল লবিতে শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের অচেনা লাগছিল। পরিচিত মুখগুলো কোথায় যেন উধাও! এক খেলোয়াড় মেটালেন সেই কৌতূহল, ঢাকায় সাফ ফুটবলে ব্যর্থতার পর তিনজন ছাড়া বাকি সব সিনিয়র খেলোয়াড়কেই দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবার।
নতুন দলটাকে নিয়ে মিয়ানমারের পর তাজিকিস্তানও যেন ছেলেখেলা না করে, শ্রীলঙ্কা ফুটবল ফেডারেশনের সদা ব্যস্ত মিডিয়া কর্তা রুকমল পেরেরইরা তা নিয়ে বেশ রসিকতাই করলেন কাল শ্রীলঙ্কা-তাজিকিস্তান ম্যাচের বিরতির সময়, ‘ভাই (তাজিকিস্তান) গোল বেশি দিয়ো না, নতুন দল আমাদের!’ সেটিই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। দুই গোলে পিছিয়ে পড়া ম্যাচ ১-৩ হলো। এই মঞ্চে স্থানীয় দল শ্রীলঙ্কা দল এখন শুধুই দর্শক।
অধিনায়ক চাতুরা মাথুরাঙ্গা দুবাইতে খেলছেন। স্ট্রাইকার কাসুন জয়াসুরিয়া কলম্বোতে থাকলেও দৃশ্যপটে নেই। নতুন দল গঠনে সমর্থন থাকলেও একযোগে এভাবে দল থেকে সব তারকাকে ছাঁটাই করা হবে, ভাবতে পারেননি স্থানীয় অনেকেই।
উত্তর কোরিয়া যেমন ভাবতে পারেনি পরশু নিজেদের প্রথম ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের কাছে ১-১ গোলে আটকে যাবে। তা না ভাবুক,
এবারের বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া দেশটির প্রায় যুবদলের সঙ্গে ড্র করারও তো কম প্রাপ্তি নয় তুর্কমেনিস্তানের কাছে।
কিন্তু প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এতসব হিসাব-নিকাশ বোঝার উপায় কী? উপায় একটাই, দোভাষীর সাহায্য নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু দোভাষীকে সময়মতো পাওয়া গেলে তো? তুর্কমেনিস্তানের ফুটবলাররা ইংরেজি জানেন না বলেই মনে হচ্ছে। কিছু জিজ্ঞেস করলে হাঁ করে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে নিজের কাজে চলে যান। ভাবটা এমন—কথাটথা বলার এত দরকার কী!
টুর্নামেন্টের ৮ দলের তিনটিই অংশ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের— তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান। এদের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে কষ্ট করে হিমালয়ের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করা ভালো। নিজেদের ভাষা ছাড়া আর কিছু যেন তারা বোঝেই না!
ভারতীয় দলটির কাছেও এটি ‘কষ্টকর’ এক টুর্নামেন্টই হয়ে উঠেছে। ঢাকায় সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলটি চ্যালেঞ্জ কাপের ধকল সামলাতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। পরশু প্রথম ম্যাচে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে পেনাল্টি থেকে একটা গোল ফেরত দিতে পারাই ১-২-এ হারা ম্যাচে সান্ত্বনা হয়ে রইল তাদের জন্য।
সাফ ফুটবলে জেতা ভারতীয় দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় আসা দলটার পার্থক্য অনেক। সাফ জয়ের নায়ক গোলরক্ষক অরিন্দমকে পুরস্কৃত করে সিনিয়র দলে নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে দোহায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের জন্য তিনি এখন দুবাইতে জাতীয় দলের ক্যাম্পে।
সাফ দলের দু-তিনজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এই দলে নেই ইনজুরির কারণে। তা হোক, চ্যালেঞ্জ কাপে ভারত আছে, বোঝাই দায়!
সুগাধাদাসা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দিকে তাকালেও বোঝা যায় না, এখানে একটা টুর্নামেন্ট চলছে। কাল টেনেটুনে হয়তো শ-দুয়েক লোক পাওয়া গেল, তাও শ্রীলঙ্কার খেলা ছিল বলে।
প্রচার-প্রচারণা খুবই কম। স্টেডিয়ামের বাইরে কালই শহরের এক জায়গায় টুর্নামেন্টের একটা প্লাকার্ড চোখে পড়ল। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়, শ্রীলঙ্কায় ফুটবল নিয়ে স্থানীয় মিডিয়ারও আগ্রহ কম। অনেক কাগজে টুর্নামেন্টের খবরই থাকে না! যা দেখে ১২ দিনের টুর্নামেন্টের টিভি মিডিয়া বিপণনের দায়িত্বে থাকা এএফসি প্রতিনিধি জাপানি তরুণ কেনতারো হিয়োশি ভীষণই হতাশ, ‘প্রচার, মাঠে দর্শক আনা—এসব নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’
শ্রীলঙ্কার ফুটবলের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা মণিলাল ফার্নান্ডো ব্যস্ত ফিফা-এএফসি নিয়ে। সমুদ্রশহরে ক্রিকেট-রাগবির পর তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফুটবল তাই সেই পেছনের সারিতেই পড়ে রইল।
No comments