আল-কায়েদার কাছে প্রশিক্ষণ নিতে চেয়েছিল পাঁচ মার্কিন নাগরিক

পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ মার্কিন নাগরিক বলেছে, আল-কায়েদার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল। সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে ঢুকে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। এফবিআই ও পাকিস্তান পুলিশের জেরার মুখে তারা এসব স্বীকার করেছে। গতকাল শনিবার কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
রাজধানী ইসলামাবাদের ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে সারগোদা থেকে গত বুধবার সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মার্কিন এই পাঁচ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে পাকিস্তান-বংশোদ্ভূত দুই মার্কিন নাগরিকও রয়েছে।
তদন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পাকিস্তান পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানে আসার আগেই সাইফুল্লাহ নামে আল-কায়েদার এক নেতার সঙ্গে পাঁচ মার্কিন নাগরিকের যোগাযোগ হয়। ওই জঙ্গিনেতার মাধ্যমে গ্রেপ্তারের দিন তাদের মিয়ানওয়ালিতে যাওয়ার কথা ছিল। পরে মিয়ানওয়ালির আল-কায়েদার অপর এক সহচরের মাধ্যমে তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার কথা। অজ্ঞাত সেই স্থানেই আল-কায়েদার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত তদন্তে জানা গেছে, মার্কিন নাগরিকেরা আল-কায়েদার কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য মিয়ানওয়ালি হয়ে ওয়াজিরিস্তানে যেতে চেয়েছিল।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলেন, পুলিশের তদন্তকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া মার্কিন নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফেরত দেওয়া হবে না।
সারগোদার প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা উসমান আনোয়ার জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে একটি যৌথ তদন্তদল গঠন এবং গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের লাহোর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মার্কিন নাগরিকেরা বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিল।
সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সারগোদা পুলিশ। পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ বলেছে, মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ইউটিউবের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এবিসি নিউজ ১০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আহমেদ আবদুল্লাহ মিন্নি নামের গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের একজন নিয়মিত ইন্টারনেটে মার্কিন সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ভিডিওচিত্র দেখত। ২০ বছরের এ যুবক ইউটিউবে নিবন্ধিত ছিল এবং ভিডিও ফুটেজের প্রশংসা করে সেখানে নিয়মিত মন্তব্য করত। ইউটিউবের মাধ্যমেই সাইফুল্লার সঙ্গে তার প্রথম যোগাযোগ হয়।
পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশে মুহাম্মদের সঙ্গে পাঁচ মার্কিন নাগরিকের জড়িত থাকার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

No comments

Powered by Blogger.