আতঙ্ক যখন টাইব্রেকার!


সর্বশেষ পাঁচটি বিশ্বকাপে তিনবারই ইংল্যান্ডের বিদায় টাইব্রেকে হেরে। গতবার কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হার ১-৩ ব্যবধানে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে ‘চিরশত্রু’ আর্জেন্টিনা হারিয়েছে ৪-৩ ব্যবধানে। ১৯৯০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে একই ব্যবধানে হার, ঘাতক ছিল জার্মানি।
ইংল্যান্ডের কাছে টাইব্রেক মানেই যেন মূর্তিমান আতঙ্ক! কিন্তু কেন? বীরের জাতি বলে নাক উঁচু করে নিজেদের পরিচয় দেয় যারা, তারাই কেন হেরে যায় টাইব্রেকের মানসিক লড়াইয়ে?
উত্তর খুঁজেছেন ইংল্যান্ডের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। ‘জার্নাল অব স্পোর্ট অ্যান্ড এক্সারসাইজ সাইকোলজি’র ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত গবেষণালব্ধ ফল বলছে, পেনাল্টি শট নেওয়ার সময় বাড়তি উদ্বেগে ভুগলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়টির সম্পূর্ণ মনোযোগ গিয়ে পড়ে গোলরক্ষকের ওপর। ফলে বেশির ভাগ শট গোলরক্ষক নাগালে পেয়ে যান। নাগালের বাইরে মারতে চাইলেও ওই মনোযোগের কারণেই অনেক সময় লক্ষ্যচ্যুত হয়ে বল চলে যায় পোস্টের বাইরে।
নিবন্ধটির লেখক গ্রেগ উড লিখেছেন, ‘প্রচণ্ড চাপের মুহূর্তে বেশির ভাগ সময় আমাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায় ক্ষতিকর উদ্দীপক। ফলে ওই সময় আমরা আমাদের হাতের কাজটার বদলে বেশি মনোযোগ দিয়ে ফেলি ওই উদ্দীপকের ওপর। এ কারণেই মানসিক চাপের ভেতর নেওয়া পেনাল্টি শুট-আউটে গোল করার সম্ভাব্য জায়গাগুলোর বদলে খেলোয়াড়েরা গোলরক্ষকের ওপর বেশি মনোযোগ দেয়। এতে শটের লক্ষ্য বিচ্যুত হয়। বেশির ভাগ সময় বল চলে যায় গোলরক্ষকের দিকে। ফলে সেটি সেভ করা তার জন্য সহজ হয়ে যায়।’
গবেষকেরা পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়েছিলেন এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জনের ফুটবল দলটাকে। প্রথমবার চাপমুক্ত হয়ে তাদের পেনাল্টি শট নিতে বলা হয়েছিল। পরেরবার সেরা শটের জন্য ৫০ পাউন্ড পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পেনাল্টি শট নেওয়ার সময় গোলরক্ষককে পাত্তাই দেওয়া যাবে না—এই হলো গবেষকদের সমাধান।
কাঠখোট্টা বিজ্ঞানবিষয়ক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা হয়তো ভালো লাগে না তাঁদের। তার পরও বেকহামরা মনোযোগ দিয়ে নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.