সালাউদ্দিনের প্রতিশ্রুতি ও উপলব্ধি

২০১১ সালে পরবর্তী সাফ ফুটবলের ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ—এটা জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী নয়, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিশ্রুতি, ‘আমি ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকলে অবশ্যই পরের সাফের ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। এটা আমার প্রতিশ্রুতি এবং চ্যালেঞ্জ।’
ঘরের মাঠে সাফ ফুটবলে ভরাডুবি। তা দেখতে ভালো লাগেনি সালাউদ্দিনেরও। বললেনও, ‘কাল (পরশু) রাতে ঘুম হয়নি। আমাদের দল যা খেলল, এরপর আর ঘুম আসে নাকি?’ তবে নির্ঘুম রাত কাটিয়েও নিস্তার নেই। সময় নষ্ট না করে সালাউদ্দিনকে ভাবতে হচ্ছে ভবিষ্যত্ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে, ‘আমি এখন জুনিয়র পলিসিতে (তরুণদের নিয়ে নতুন দল) চলে যাব। এটাই এখন আমার একমাত্র ভাবনা।’
নতুন দল গড়তে চেয়েছিলেন ডিডো। কিন্তু তাঁর দল পছন্দ না করে নিজেদের পছন্দমতো খেলোয়াড় নিয়েছে বাফুফে। সেই দল মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতের অনভিজ্ঞ দলের সামনে। তাহলে কি ডিডোকে বরখাস্ত করা ভুল ছিল?
এই প্রশ্নে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘এই খেলোয়াড়েরা ডিডোর ক্যাম্পেও ছিল। ডিডো এদের নিয়ে কাজ করেছে। আর্জেন্টাইন ট্রেনার আনলাম। কিন্তু ফল কী হয়েছে? খেলোয়াড়দের ফিটনেস নেই, কোয়ালিটি নেই। কী পেলাম বিদেশি কোচ-ট্রেনার এনে?’
ফেডারেশনের পছন্দের দল গড়ার পেছনে সালাউদ্দিনের সম্মতি ছিল। কিন্তু ভারতের কাছে হারের পর তাঁর উপলব্ধিটা এখন ভিন্ন, ‘এটা একটা রিটায়ার্ড টিম মনে হয়েছে আমার কাছে। ৫-৭ জন তো চলেই না। তাদের সময় শেষ এবং নিজেদেরই সরে যাওয়া উচিত।’
দল গড়ার সময় অমুক খেলোয়াড় না হলে সাফ জেতা যাবে না। তমুককে বাদ দিয়ে ডিডো সততার পরিচয় দেননি—কত কথাই না শোনা গেছে কর্তাদের মুখে! আর এখন সালাউদ্দিন নিজে বলছেন, ৫-৭ জন চলে না! তাহলে?
সালাউদ্দিন তবু ডিডোর বিদায়টাকে সমর্থনই করছেন, ‘ডিডোকে রাখলে হয়তো এর চেয়ে দশ ভাগ ভালো খেলত। তাতে কী হতো? আমি মনে করি, ডিডোকে রাখলে আরও সময় নষ্ট হতো। এখন আমি কোয়ালিটি কোচ নেব। কোয়ালিটি কোচিং স্টাফ নেব। সেটা করতে গিয়ে প্রয়োজনে ফেডারেশনের কয়েকটি রুম বন্ধ থাকবে। কিছু কাজ না হয় হবে না। কিন্তু কোয়ালিটি কোচ আনবই।’
২৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএ গেমস (অনূর্ধ্ব-২৩)। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কলম্বোতে জাতীয় দলের চ্যালেঞ্জ কাপ। এখন ‘কোয়ালিটি’ কোচ আনলেই বাংলাদেশ ভালো কিছু করে ফেলবে—এই আশা দুরাশাই মনে করে ফুটবল অঙ্গন। কোচের হাতে তো আর জাদুর চেরাগ নেই! সালাউদ্দিন বলছেন, ‘এই দুটি টুর্নামেন্টে স্থানীয় কোনো কোচকেই দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভালো বিদেশি কোচ পেতে সময় লাগতে পারে। ৪-৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছি। আরও কয়েকজনের সঙ্গে বলব।’

No comments

Powered by Blogger.