জিতবেন কে- মাহাথির না নাজিব!
মালয়েশিয়ায়
শেষ নির্বাচন হয় ২০১৩ সালে। তখন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের দল
পার্লামেন্টের লেমবাহ পানতাই আসনে মাত্র ১৮৪৭ ভোটে হেরে যায়। এ বছর বুধবার
দেশে পার্লামেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুয়ালালামপুরের
অতি গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ৬ সপ্তাহ আগেই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে জাতীয় পুলিশ সদর
দপ্তরের পুরো সদস্যদের। তার মধ্যে রয়েছেন এ আসনে প্রায় ৬ হাজার ভোটার
অফিসার। তারা ক্ষমতাসীন দলের পক্ষেই ভোট দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিজয়
অর্জনের জন্য মালয়েশিয়ায় আসন পুনর্বিন্যাস মালয়েশিয়ার ‘ম্যানেজড
ডেমোক্রেসি’র জন্য নতুন কিছু নয়। পার্লামেন্টে যাতে বিরোধীদের উপস্থিতি কম
হয় তা সীমিত করতে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়। অনলাইন ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক
প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নাজিবের বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন
যে, এ বছরের প্রচারণায় এই লজ্জাজনক অধ্যায় নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। স্থানীয়
এলায়েন্স অব হোপ-এর প্রার্থী ফাহমি ফাদজিল বলেছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে আসন
পুনর্বিন্যাস করা হয় নি। গণতন্ত্রের জন্য এটা শুভ নয়। জেলে থাকা বিরোধী
দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী ওয়ান আজিজা ইসমাইলের কন্যা এমপি
নুরুল ইজ্জাহ’র পরিবর্তে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে
এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোট। ১৯৫৭ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে মালয়েশিয়া। এরপর
সেখানে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে বুধবারের নির্বাচন হতে যাচ্ছে
সবচেয়ে প্রতারণাপূর্ণ। এতে ভোট দেবেন এক কোটি ৪৯ লাখ নিবন্ধিত ভোটার।
নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের জোট বারিশান ন্যাশনাল। অন্যদিকে
বিরোধী পক্ষে রয়েছেন তারই রাজনৈতিক গুরু ৯২ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী
মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি পাকাতান হারাপান জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন। তবে জরিপ
বলছে, পাড় পেয়ে যেতে পারেন নাজিব। কিন্তু যদি না পারেন তিনি তাহলে তার
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেই ধস নামবে। মাহাথির মোহাম্মদ ও নাজিব রাজাক একই
রাজনৈতিক দল করতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ
করা হয় নাজিবের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ২০০৩ সালে নিজের দল থেকে পদত্যাগ করেন
মাহাথির। এখন সেই মাহাথির তার ক্ষমতায় যাওয়ার প্রধান কাঁটা। তাকে ঘায়েল
করে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নাজিবের অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে
মাহাথিরকে স্বঘোষিত স্বৈরাচার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি
নিজে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ রাখেন। অন্যদিকে এর আগে নাজিবকেও ঘায়েল করে
বক্তব্য রাখেন মাহাথির। তিনি নাজিব রাজাককে ‘দৈত্য’ এবং ‘চোর’ হিসেবে
আখ্যায়িত করেন। এখন ১১ দিনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ। শুধু জ্বলে ওঠার
পালা। কে জ্বলে উঠবেন মাহাথির মোহাম্মদ নাকি নাজিব রাজাক তা জানতে অপেক্ষা
করতে হবে বুধবার রাত অবধি।
No comments