ধনী ক্রেতারা কলকাতামুখী, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত by শামছুল ইসলাম
পবিত্র
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করছেন বিভিন্ন
শ্রেণী-পেশার মানুষ। তবে ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় ঈদের বাজার করতে
কলকাতামুখী হচ্ছেন ক্রেতারা। ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেন যোগাযোগ চালু এবং সব
পণ্যের মূল্য তুলনামূলক কম হওয়ায় ভারতে ক্রেতাদের আগ্রহ আরো বেড়েছে। দেশের
বিত্তবানরা ঈদের কেনাকাটা করতে ভারতে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দেশী
ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর শরীফ জানান, গত ১২ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর হয়ে কলকাতায় গেছে ৩১ হাজার ৩৫৪ জন যাত্রী। একই সময়ে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন প্রায় ২৫ হাজার যাত্রাী। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদকে সামনে রেখে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত বেড়েছে। এদের বেশির ভাগ ঈদের শপিং করে ফিরছেন।
সম্প্রতি চিকিৎসা নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন সাংবাদিক শফিউদ্দীন বিটু। ফেরার সময় প্রিয়জনদের জন্য ঈদের পোশাক ক্রয় করতে যান কলকাতার মার্কেটে। সেখানকার নিউ মার্কেট, বড় বাজার, চাদনীচক মার্কেটে গিয়ে দেখেন বাংলাদেশী ক্রেতাদের ভিড়। মার্কেটগুলোর অধিকাংশ ক্রেতাই বাংলাদেশী। ক্রেতাদের চাপে হোটেলগুলোতে কোনো রুম পাওয়া যাচ্ছে না। পণ্য ব্যাগেজ রুল অতিক্রম করায় কাস্টমস ও পুলিশকে বকশিশ দিয়ে ম্যানেজ করছেন যাত্রীরা।
ভারতীয় ভিসা পেতে ই-টোকেন পদ্ধতি উঠিয়ে দেয়া হয় ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে। ভারতে ভ্রমণ ভিসার আবেদন করতে ই-টোকেন পদ্ধতি উঠিয়ে নেয়ার পর ভারত যাওয়া খুব সহজ হয়ে যায়; যার বদৌলতে ক্রেতারা ভারতে গিয়ে ঈদ শপিং করছেন।
রাজধানীর অভিজাত মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ দল বেঁধে মার্কেটে আসছেন কেনাকাটা করতে। যদিও বিক্রেতাদের দাবি, বেচাকেনা সন্তোষজনক নয়। তাদের অভিযোগ, বড় ক্রেতারা এখন আর দেশের মার্কেটে আসছে না। যোগাযোগ ও ভিসাপদ্ধতি সহজ হওয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত ক্রেতাও ঈদের কেনাকাটা করতে ছুটছেন কলকাতায়।
বসুন্ধরা সিটির একজন দোকান মালিক বলেন, রমজানের অর্ধেক সময় চলে গেলেও ব্যবসা জমছে না, আর জমবে বলে মনেও হয় না। মানুষ এখন ইন্ডিয়ামুখী। আমাদের ক্রেতারা তাদের সব কেনাকাটা ইন্ডিয়া থেকে করে নিয়ে আসছে, যে দু-একটা আইটেম বাদ পড়ে গেছে সেটা আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে।
ধানমন্ডি শাড়ি দোকান ‘শাড়ি প্লাজা’য় গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাশূন্য। মালিক কবির বলেন, অনেক বছর থেকে ব্যবসা করছি, এমন আর হয়নি। যাদের টাকা আছে সবাই শপিং করতে ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছে। ১০ হাজার টাকার শাড়ি কিনতেও ইন্ডিয়া যাচ্ছে। ভিসা সহজে দেয়ায় ইন্ডিয়া যাওয়াও সহজ হয়ে গেছে। এত ভিসা দেয়ায় আমাদের বিশাল তি হয়ে গেছে। এই লস কাটিয়ে ওঠার কোনো রাস্তা দেখছি না।
আরেক শাড়ি ব্যবসায়ী বলেন, ‘এবার আমাগো মাথায় হাত। কর্মচারীদের বেতন দিমু কেমনে বুঝতে পারতাছি না। মোদি ভারত যাওয়া সহজ কইরা আমাগো ব্যবসায় লালবাত্তি জ্বালাইয়া দিছে। হুনছি কলকাতায় থাকার হোটেল নাই, তাও মানুষ যাইতাছে। আমাগো সব টাকা ভারত নিয়া যাইতাছে।’
একই দেখা যায় বসুন্ধরা সিটি, গাউছিয়া, গ্লোব শপিং সেন্টার, চাঁদনীচক, অরচার্ড পয়েন্ট, রাফা প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ রাজধানীর সব শপিং মলের।
ধানমন্ডি রাফা প্লাজার ব্যবসায়ী শফিউদ্দিন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, এত দিন অল্পসংখ্যক ক্রেতা পোশাক নেড়েচেড়ে দেখলেও বেচাবিক্রি কম ছিল। তবে পনেরো রোজা থেকে বেচাকেনা বেশ ভালো। যদিও অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বিক্রি কম হবে বলেই মনে হচ্ছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার যাদের হাতে টাকা আছে তারা দেশের মার্কেট পছন্দ করেন না। কেনাবাচার জন্য তারা ছুটে যাচ্ছেন ভারত বা থাইল্যান্ডে। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী বেতনসহ সব খরচই বেড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাটসহ নানা কারণে আমাদের দেশে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন না বলেও জানান শফিউদ্দিন।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার ভারতীয় পোশাকের প্রাধান্য বেশি। রয়েছে পাকিস্তানি পোশাকের অবস্থানও। আবার দেশী পোশাককে বিদেশী বলে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে দোকানিদের বিরুদ্ধে। দেশী বা বিদেশী, বিভিন্ন সিরিয়াল ও সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের নামে আসা পোশাকের বিক্রি বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। মার্কেটভেদে প্রতিটি স্টোন থ্রি পিস ৭ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা, স্টোন কেপ থ্রি পিস সাড়ে ১১ হাজার থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা, স্টোন ওয়ান পিস সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
পাকিস্তানি পার্ল থ্রি পিস ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১৮ হাজার টাকা, কেপ সাড়ে ১১ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মান ও রঙের গাউন পাওয়া যাচ্ছে ৭ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার মধ্যে। সিঙ্গেল পিস কুর্তি ৫ হাজার ৮০০ থেকে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া কটন কুর্তি, সামু সিল্ক, স্টিচ ও আনস্টিচ থ্রি পিসের বাহারি কালেকশনও রয়েছে। বড়দের পাঞ্জাবি সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা, ছোটদের পাঞ্জাবি আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর শরীফ জানান, গত ১২ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর হয়ে কলকাতায় গেছে ৩১ হাজার ৩৫৪ জন যাত্রী। একই সময়ে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন প্রায় ২৫ হাজার যাত্রাী। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদকে সামনে রেখে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত বেড়েছে। এদের বেশির ভাগ ঈদের শপিং করে ফিরছেন।
সম্প্রতি চিকিৎসা নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন সাংবাদিক শফিউদ্দীন বিটু। ফেরার সময় প্রিয়জনদের জন্য ঈদের পোশাক ক্রয় করতে যান কলকাতার মার্কেটে। সেখানকার নিউ মার্কেট, বড় বাজার, চাদনীচক মার্কেটে গিয়ে দেখেন বাংলাদেশী ক্রেতাদের ভিড়। মার্কেটগুলোর অধিকাংশ ক্রেতাই বাংলাদেশী। ক্রেতাদের চাপে হোটেলগুলোতে কোনো রুম পাওয়া যাচ্ছে না। পণ্য ব্যাগেজ রুল অতিক্রম করায় কাস্টমস ও পুলিশকে বকশিশ দিয়ে ম্যানেজ করছেন যাত্রীরা।
ভারতীয় ভিসা পেতে ই-টোকেন পদ্ধতি উঠিয়ে দেয়া হয় ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে। ভারতে ভ্রমণ ভিসার আবেদন করতে ই-টোকেন পদ্ধতি উঠিয়ে নেয়ার পর ভারত যাওয়া খুব সহজ হয়ে যায়; যার বদৌলতে ক্রেতারা ভারতে গিয়ে ঈদ শপিং করছেন।
রাজধানীর অভিজাত মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ দল বেঁধে মার্কেটে আসছেন কেনাকাটা করতে। যদিও বিক্রেতাদের দাবি, বেচাকেনা সন্তোষজনক নয়। তাদের অভিযোগ, বড় ক্রেতারা এখন আর দেশের মার্কেটে আসছে না। যোগাযোগ ও ভিসাপদ্ধতি সহজ হওয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত ক্রেতাও ঈদের কেনাকাটা করতে ছুটছেন কলকাতায়।
বসুন্ধরা সিটির একজন দোকান মালিক বলেন, রমজানের অর্ধেক সময় চলে গেলেও ব্যবসা জমছে না, আর জমবে বলে মনেও হয় না। মানুষ এখন ইন্ডিয়ামুখী। আমাদের ক্রেতারা তাদের সব কেনাকাটা ইন্ডিয়া থেকে করে নিয়ে আসছে, যে দু-একটা আইটেম বাদ পড়ে গেছে সেটা আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে।
ধানমন্ডি শাড়ি দোকান ‘শাড়ি প্লাজা’য় গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাশূন্য। মালিক কবির বলেন, অনেক বছর থেকে ব্যবসা করছি, এমন আর হয়নি। যাদের টাকা আছে সবাই শপিং করতে ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছে। ১০ হাজার টাকার শাড়ি কিনতেও ইন্ডিয়া যাচ্ছে। ভিসা সহজে দেয়ায় ইন্ডিয়া যাওয়াও সহজ হয়ে গেছে। এত ভিসা দেয়ায় আমাদের বিশাল তি হয়ে গেছে। এই লস কাটিয়ে ওঠার কোনো রাস্তা দেখছি না।
আরেক শাড়ি ব্যবসায়ী বলেন, ‘এবার আমাগো মাথায় হাত। কর্মচারীদের বেতন দিমু কেমনে বুঝতে পারতাছি না। মোদি ভারত যাওয়া সহজ কইরা আমাগো ব্যবসায় লালবাত্তি জ্বালাইয়া দিছে। হুনছি কলকাতায় থাকার হোটেল নাই, তাও মানুষ যাইতাছে। আমাগো সব টাকা ভারত নিয়া যাইতাছে।’
একই দেখা যায় বসুন্ধরা সিটি, গাউছিয়া, গ্লোব শপিং সেন্টার, চাঁদনীচক, অরচার্ড পয়েন্ট, রাফা প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ রাজধানীর সব শপিং মলের।
ধানমন্ডি রাফা প্লাজার ব্যবসায়ী শফিউদ্দিন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, এত দিন অল্পসংখ্যক ক্রেতা পোশাক নেড়েচেড়ে দেখলেও বেচাবিক্রি কম ছিল। তবে পনেরো রোজা থেকে বেচাকেনা বেশ ভালো। যদিও অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বিক্রি কম হবে বলেই মনে হচ্ছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। আবার যাদের হাতে টাকা আছে তারা দেশের মার্কেট পছন্দ করেন না। কেনাবাচার জন্য তারা ছুটে যাচ্ছেন ভারত বা থাইল্যান্ডে। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী বেতনসহ সব খরচই বেড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাটসহ নানা কারণে আমাদের দেশে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকজন স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন না বলেও জানান শফিউদ্দিন।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার ভারতীয় পোশাকের প্রাধান্য বেশি। রয়েছে পাকিস্তানি পোশাকের অবস্থানও। আবার দেশী পোশাককে বিদেশী বলে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে দোকানিদের বিরুদ্ধে। দেশী বা বিদেশী, বিভিন্ন সিরিয়াল ও সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের নামে আসা পোশাকের বিক্রি বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। মার্কেটভেদে প্রতিটি স্টোন থ্রি পিস ৭ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা, স্টোন কেপ থ্রি পিস সাড়ে ১১ হাজার থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা, স্টোন ওয়ান পিস সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
পাকিস্তানি পার্ল থ্রি পিস ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১৮ হাজার টাকা, কেপ সাড়ে ১১ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মান ও রঙের গাউন পাওয়া যাচ্ছে ৭ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার মধ্যে। সিঙ্গেল পিস কুর্তি ৫ হাজার ৮০০ থেকে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া কটন কুর্তি, সামু সিল্ক, স্টিচ ও আনস্টিচ থ্রি পিসের বাহারি কালেকশনও রয়েছে। বড়দের পাঞ্জাবি সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা, ছোটদের পাঞ্জাবি আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।
No comments