শর্তযুক্ত ঋণ নিতে হবে কেন by মোয়াজ্জেম হোসেন খান

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ তো নিজেদের স্বার্থ দেখে এবং ঋণের ক্ষেত্রে কঠিন শর্ত আরোপ করে থাকে। আর আমাদের মতো গরিব দেশগুলোকে সেই শর্তই মেনে নিয়েই। তাদের কাছ থেকে টাকা আনতে হয়। আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাজই তো এটা। বলা হচ্ছে মালয়েশিয়া আমাদের পদ্মা সেতুর জন্য ঋণ দিতে চায়।


কিন্তু তারা কি আমাদের কম সুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতে এগিয়ে আসবে? ওরা তো ৫০ বছরের মালিকানা চায়। হয়তো এটাকে কমিয়ে আনলে ৩০ বছর, এই তো? বিশ্বব্যাংক যখন অর্থ দেবে তখন তাদের কিছু শর্ত আছে সেগুলো বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিতে চায় ওরা। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে রাজনীতি। ঋণ দেবে আবার সেখানে রাজনৈতিক খেলাও খেলবে।
দুর্নীতির কথা বলে দুনিয়া মাত করে দেওয়ার মতো কাজটি তারা করল। এখন তাদের ওপর যখন দুর্নীতি প্রমাণের ভার পড়ল- কোথায়, তারা কিন্তু দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারছে না। দেখা গেল অন্য চিত্র। এখন বোঝা যাচ্ছে তারা এই সরকারের আমলে করতে চাচ্ছে না। এত বড় একটি কাজ যে এক সরকারের আমলে শেষ হবে না এটা তাদের বোঝা উচিত। এ সরকার কাজ শুরু করলে পরের সরকার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন যদি অন্য সরকার আসে তাহলে কি আর এই সরকারের পক্ষে সেতু উদ্বোধন করা সম্ভব হবে?
আমার কথা হলো বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইডিবি যদি সত্যিই আমাদের দেশের উন্নয়নে ঋণ দিতে চায় তাহলে তাদের কম সুদে ঋণ দিতে বলুন। দিক না আমাদের উন্নয়নের প্রয়োজনে কম সুদে অর্থ? তারা কিন্তু তা করবে না।
ওদের সঙ্গে আবার আমাদেরও কিছু মানুষ সুর মিলায়। তাদের আমি জ্ঞানপাপী বলি। ওরা উসকানি দিচ্ছে। দারিদ্র্য দূর করার জন্য তারা বিদেশে ঘুরে বেড়ায়। দারিদ্র্যকে মিউজিয়ামে পাঠাতে হলে উল্টোপথে হাঁটা ঠিক হবে না। জাপান-আমেরিকার মতো দেশ অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে। আমাদের বিশ্ব অর্থনীতির দিকে তাকাতে হবে। আমাদের নিজেদের অবস্থা চিন্তা করতে হবে।
বিলিয়ন ডলার আপনাকে দেওয়া হবে। ঘোষণা এলো। আপনি টাকা পেলেন সময় হারিয়ে। কী হবে সেই টাকা দিয়ে? তারা তো একের পর এক শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। তারা বলছে, তেলের দাম বাড়িয়ে দাও। আমরা বাড়িয়ে দিলাম। একের পর এক ভর্তুকি কমিয়ে আনতে থাকলাম। আরো ভর্তুকি কমাতে বলছে আইএমএফ। এটা কি বাংলাদেশের মতো গরিব মানুষের দেশে সম্ভব?
ভারত তাদের কর বিভাগকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশেরও তাই করা উচিত। করদাতারা যদি ঠিকমতো কর প্রদান করে তাহলে টাকার অভাব থাকবে না।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন

No comments

Powered by Blogger.