বাজল যখন শেষের বাঁশি
অ্যাথলেটরা ফুরফুরে মেজাজে ঘুরছেন। প্রায় সবার হাতেই একটা করে শপিং ব্যাগ। শেষের বাঁশি বাজলে যা হয়...।
অক্ষরধামের বিশাল এলাকাজুড়ে গেমস-পল্লি। গত কয়েক দিনের চেনা দৃশ্যগুলো উধাও। মাঠে যাওয়ার তাড়া নেই। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই ‘দর্শক’ হয়ে গেছেন। আজ ম্যারাথনসহ আর দু-একটি খেলা আছে। এ নিয়ে আর কে আগ্রহ দেখায়। এখন যে শুধু বাড়ি ফেরার পালা।
গত ৩ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ১৯তম কমনওয়েলথ গেমস। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় নেহরু স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে পরিবেশে পর্দা নেমে যাবে ৭১টি দেশের মহামিলনের।
নিরাপত্তা, অব্যবস্থাপনা নিয়ে কত কথাই না গেমস শুরুর আগে লিখেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম। এখন সেই কথা তাদেরই গিলতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডের সাংবাদিক বার্নার্ড ফেরেকা আয়োজন নিয়ে বলছিলেন, ‘ইয়া ইটস গুড।’
প্রথম দিকে ভেন্যু তেমন দর্শক টানতে না পারলেও মাঝামাঝি এসে ছবিটা পাল্টেছে। নেহরু স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকস দেখেছে ৫০ হাজারের ওপরে দর্শক। দর্শকপ্রিয় অন্য খেলাগুলোতেও ছিল প্রচণ্ড ভিড়।
গেমসের ১৭টি ভেন্যই অত্যাধুনিক। খেলোয়াড়দের আবাসস্থল ‘গেমস-পল্লি’ অনন্য। পাঁচ তারকা হোটেলের সঙ্গে তুলনীয় হচ্ছে নির্দ্বিধায়। শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, আন্তরিকতায় দশে দশই পাওয়ার দাবি রাখে দিল্লি।
তবে গেমসটা ডোপমুক্ত থাকতে পারেনি। দ্রুততম মানবীর সোনার পদক পাওয়া নাইজেরিয়ার ওসায়েমি ওলুদামেলা দ্বিতীয় দফায়ও পজিটিভ। কাল সকালের বুলেটিন, ‘ধরা পড়েছেন এক ভারতীয় খেলোয়াড়’। কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে এসে হতাশাই জানালেন, ‘মাদকের ব্যাপারটা কঠোর হাতে দমন করতে চাই। কিন্তু তার পরও অনেকেই পজিটিভ।’
আজ থেকে গোটা আয়োজনটাই স্মৃতির পাতায় ঠাঁই নিচ্ছে। ‘সফল’ এই আয়োজনের পর অলিম্পিক আয়োজন করতে চাইবে ভারত? সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক কমিটির প্রধান সুরেশ কালমাডি কূটনৈতিক উত্তরই দিলেন, ‘গেমসটা শেষ হতে দিন। তারপর ভাবব।’
কয়েকটি কমনওয়েলথ গেমসের ধারাবাহিতকায় কাল বিকেল পর্যন্ত ৭০টি সোনাসহ ১৬০ পদক জিতে যথারীতি শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। সাইক্লিং, সাঁতার, জিমন্যাস্টিকসসহ আরও কয়েকটি খেলায় অস্ট্রেলিয়া দেখিয়েছে একক প্রাধান্য। সাইক্লিংয়ের ১৫ সোনার ১৩টিই চ্যাম্পিয়নদের!
এসব পরিসংখ্যান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দৈনিক সান-এর রিপোর্টার ফিন ব্রাডশো খুবই নিরাবেগ, ‘ইংল্যান্ড কিন্তু সাইক্লিংয়ে সেরা দল না পাঠায়নি। আমরা সেরা হব, এটা তো জানাই!’
দ্বিতীয় স্থান নিয়ে লড়াইটা জমে উঠেছে। দ্বিতীয় থেকে কাল বিকেলে ভারত নেমে গেছে তিনে। ভারত-ইংল্যান্ড দুই দলেরই সোনা ৩২টি। পদকের হিসাবে (ভারত ৯১, ইংল্যান্ড ১২৮) শেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার পর ইংল্যান্ড। ২০০২ ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে ৩০ সোনা, ২২ রুপা, ১৭ ব্রোঞ্জসহ রেকর্ড ৬৯টি পদক জিতেছিল ভারত। এবারই কমনওয়েলথ গেমসে নিজেদের সেরা সাফল্য পেল ভারত।
সোনা শিকারে এরপর আছে কানাডা (২৬), দক্ষিণ আফ্রিকা (১২), নাইজেরিয়া (১১), কেনিয়া (১০)। সোনাজয়ী ২১টি দেশের তালিকায় আছে সাফভুক্ত পাকিস্তান (২টি) ও শ্রীলঙ্কা (১টি)। কাল বিকেলে বক্সিং শ্রীলঙ্কার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে। আর বাংলাদেশ?
পুরুষ ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে পাওয়া দলীয় ব্রোঞ্জটাই একমাত্র প্রাপ্তি। বাংলাদেশের ৩৬ জন খেলোয়াড়ের দু-চারজন ছাড়া অন্যদের পারফরম্যান্স জঘন্য। এসএ গেমসেও পাতে তোলার মতো নয়। অনেক খেলোয়াড়ই প্রতিটি বিদেশ সফরে থাকেন, কিন্তু ঘুরেফিরে ১০ জনে দশম। বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন নুরুল ফজল (বুলবুল) বলছিলেন, ‘নতুন করে সবকিছু ভাবা উচিত।’
কত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এই মঞ্চ থেকে মাথা উঁচু করে বেরোচ্ছে! ১৯৬২ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা পাওয়া ৮ বর্গমাইলের দেশ নওরু পর্যন্ত একটি সোনা জিতেছে। কমনওয়েলথ গেমসের শেষ বাঁশির শোনার সঙ্গে ক্ষুদ্র দেশগুলোর কাছেও কি লজ্জা পেল না বাংলাদেশ!
অক্ষরধামের বিশাল এলাকাজুড়ে গেমস-পল্লি। গত কয়েক দিনের চেনা দৃশ্যগুলো উধাও। মাঠে যাওয়ার তাড়া নেই। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই ‘দর্শক’ হয়ে গেছেন। আজ ম্যারাথনসহ আর দু-একটি খেলা আছে। এ নিয়ে আর কে আগ্রহ দেখায়। এখন যে শুধু বাড়ি ফেরার পালা।
গত ৩ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ১৯তম কমনওয়েলথ গেমস। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় নেহরু স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে পরিবেশে পর্দা নেমে যাবে ৭১টি দেশের মহামিলনের।
নিরাপত্তা, অব্যবস্থাপনা নিয়ে কত কথাই না গেমস শুরুর আগে লিখেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম। এখন সেই কথা তাদেরই গিলতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডের সাংবাদিক বার্নার্ড ফেরেকা আয়োজন নিয়ে বলছিলেন, ‘ইয়া ইটস গুড।’
প্রথম দিকে ভেন্যু তেমন দর্শক টানতে না পারলেও মাঝামাঝি এসে ছবিটা পাল্টেছে। নেহরু স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকস দেখেছে ৫০ হাজারের ওপরে দর্শক। দর্শকপ্রিয় অন্য খেলাগুলোতেও ছিল প্রচণ্ড ভিড়।
গেমসের ১৭টি ভেন্যই অত্যাধুনিক। খেলোয়াড়দের আবাসস্থল ‘গেমস-পল্লি’ অনন্য। পাঁচ তারকা হোটেলের সঙ্গে তুলনীয় হচ্ছে নির্দ্বিধায়। শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, আন্তরিকতায় দশে দশই পাওয়ার দাবি রাখে দিল্লি।
তবে গেমসটা ডোপমুক্ত থাকতে পারেনি। দ্রুততম মানবীর সোনার পদক পাওয়া নাইজেরিয়ার ওসায়েমি ওলুদামেলা দ্বিতীয় দফায়ও পজিটিভ। কাল সকালের বুলেটিন, ‘ধরা পড়েছেন এক ভারতীয় খেলোয়াড়’। কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে এসে হতাশাই জানালেন, ‘মাদকের ব্যাপারটা কঠোর হাতে দমন করতে চাই। কিন্তু তার পরও অনেকেই পজিটিভ।’
আজ থেকে গোটা আয়োজনটাই স্মৃতির পাতায় ঠাঁই নিচ্ছে। ‘সফল’ এই আয়োজনের পর অলিম্পিক আয়োজন করতে চাইবে ভারত? সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক কমিটির প্রধান সুরেশ কালমাডি কূটনৈতিক উত্তরই দিলেন, ‘গেমসটা শেষ হতে দিন। তারপর ভাবব।’
কয়েকটি কমনওয়েলথ গেমসের ধারাবাহিতকায় কাল বিকেল পর্যন্ত ৭০টি সোনাসহ ১৬০ পদক জিতে যথারীতি শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। সাইক্লিং, সাঁতার, জিমন্যাস্টিকসসহ আরও কয়েকটি খেলায় অস্ট্রেলিয়া দেখিয়েছে একক প্রাধান্য। সাইক্লিংয়ের ১৫ সোনার ১৩টিই চ্যাম্পিয়নদের!
এসব পরিসংখ্যান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দৈনিক সান-এর রিপোর্টার ফিন ব্রাডশো খুবই নিরাবেগ, ‘ইংল্যান্ড কিন্তু সাইক্লিংয়ে সেরা দল না পাঠায়নি। আমরা সেরা হব, এটা তো জানাই!’
দ্বিতীয় স্থান নিয়ে লড়াইটা জমে উঠেছে। দ্বিতীয় থেকে কাল বিকেলে ভারত নেমে গেছে তিনে। ভারত-ইংল্যান্ড দুই দলেরই সোনা ৩২টি। পদকের হিসাবে (ভারত ৯১, ইংল্যান্ড ১২৮) শেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার পর ইংল্যান্ড। ২০০২ ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে ৩০ সোনা, ২২ রুপা, ১৭ ব্রোঞ্জসহ রেকর্ড ৬৯টি পদক জিতেছিল ভারত। এবারই কমনওয়েলথ গেমসে নিজেদের সেরা সাফল্য পেল ভারত।
সোনা শিকারে এরপর আছে কানাডা (২৬), দক্ষিণ আফ্রিকা (১২), নাইজেরিয়া (১১), কেনিয়া (১০)। সোনাজয়ী ২১টি দেশের তালিকায় আছে সাফভুক্ত পাকিস্তান (২টি) ও শ্রীলঙ্কা (১টি)। কাল বিকেলে বক্সিং শ্রীলঙ্কার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে। আর বাংলাদেশ?
পুরুষ ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে পাওয়া দলীয় ব্রোঞ্জটাই একমাত্র প্রাপ্তি। বাংলাদেশের ৩৬ জন খেলোয়াড়ের দু-চারজন ছাড়া অন্যদের পারফরম্যান্স জঘন্য। এসএ গেমসেও পাতে তোলার মতো নয়। অনেক খেলোয়াড়ই প্রতিটি বিদেশ সফরে থাকেন, কিন্তু ঘুরেফিরে ১০ জনে দশম। বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন নুরুল ফজল (বুলবুল) বলছিলেন, ‘নতুন করে সবকিছু ভাবা উচিত।’
কত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এই মঞ্চ থেকে মাথা উঁচু করে বেরোচ্ছে! ১৯৬২ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে স্বাধীনতা পাওয়া ৮ বর্গমাইলের দেশ নওরু পর্যন্ত একটি সোনা জিতেছে। কমনওয়েলথ গেমসের শেষ বাঁশির শোনার সঙ্গে ক্ষুদ্র দেশগুলোর কাছেও কি লজ্জা পেল না বাংলাদেশ!
No comments