সরকারের এক বছর -অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে সামনে এগোতে হবে
পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত একটি সরকারের প্রথম বছরের কাজ বিবেচনায় নিয়ে সাফল্য বা ব্যর্থতার মূল্যায়ন হয়তো করা যায় না, তবে শুরুটা কেমন হয়েছে, তার একটি হিসাব-নিকাশ নিশ্চয়ই করা যেতে পারে। মহাজোট সরকারের এক বছর পূর্তির দিনে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির তুলনামূলক বিবেচনা প্রাসঙ্গিকও।
মহাজোট সরকারের এক বছর কেমন গেল—এমন প্রশ্নের উত্তরে সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি, প্রত্যাশার অনেক কিছু পূরণ করতে না পারলেও শুরু অনেকটা ভালো হয়েছে। সরকার বড় ধরনের কোনো ভুল করেছে, এমনটি বলা যাবে না। সরকারের শুরুটা হয়েছিল প্রায় সব নতুন মুখ নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে। দুর্নীতি বা সন্ত্রাসের বড় ধরনের অভিযোগ আছে, এমন কাউকে মন্ত্রিসভায় দেখা যায়নি। তবে নতুনদের নিয়ে গড়া এই মন্ত্রিসভা গত এক বছর কেমন কাজ করল, সে প্রশ্ন তোলা যায়। সব মন্ত্রণালয় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছে, এমন বলা যাবে না। কোনো কোনো মন্ত্রীর অদক্ষতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উপদেষ্টার ভূমিকা ও তত্পরতার কারণে মন্ত্রণালয় পরিচালনায় সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে গতিশীল করার প্রত্যাশা গত এক বছরে যথাযথভাবে পূরণ হয়নি।
নির্বাচনী ইশতেহারে মহাজোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ অগ্রাধিকারের কিছু বিষয় ঠিক করেছিল। দ্রব্যমূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি ছিল এর মধ্যে অন্যতম। আগের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমেছে, তবে সব ক্ষেত্রে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। বাজার গত এক বছরে পুরোপুরি স্থিতিশীল ছিল, এমন বলার সুযোগ নেই। যৌক্তিক কারণ ছাড়া চিনির মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা আমরা দেখেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের অঙ্গীকার ছিল, তবে এখন পর্যন্ত সরকারের এ ব্যাপারে কোনো শক্ত অবস্থান নজরে আসেনি। অনেক ক্ষেত্রে বড় বড় দুর্নীতিবাজের ছাড় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সাংসদ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উত্স প্রতিবছর জনসমক্ষে প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি রাখতে সরকার প্রথম বছরেই ব্যর্থ হয়েছে। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতিশ্রুতি শুরুতে হোঁচট খেলেও সরকারের কিছু পদক্ষেপ পরিস্থিতির কিছু উন্নতি ঘটিয়েছে।
কৃষি, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তাসহ কিছু ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ নজর ও উদ্যোগের বিষয়টি গত এক বছরের সরকারের কাজে লক্ষণীয় ছিল, যার সুফল অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে। জ্বালানি ও বিদ্যুত্ খাতের উন্নয়ন ও উত্পাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ কর্মপরিকল্পনা দেখা গেলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে, উপজেলা পরিষদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে এক বছরে সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে, তাকে ইতিবাচক বলা যাবে না। শক্তিশালী স্থানীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ মাসেও উপজেলা পরিষদকে সরকার কার্যকর করতে পারেনি। প্রতিশ্রুতি দিলেও ‘ক্রসফায়ার’ থেমে থাকেনি সরকারের এক বছরে। তবে জঙ্গিবাদ ও বাইরের দেশের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সরকার তার অবস্থান অনেকটা পরিষ্কার করতে পেরেছে। এই অবস্থান আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
সংসদ নিয়মিত বসছে, কিন্তু বিরোধী দল সংসদে নেই, এটা সরকার ও সরকারি দলের জন্য ভালো কিছু হতে পারে না। প্রথম অধিবেশনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন ইতিবাচক দিক লক্ষণীয় হলেও সংসদে বিরোধী দলের লাগাতার অনুপস্থিতি এসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
নবম সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেছেন, দিনবদলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সরকারের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারকে ‘দিনবদলের সনদ’ হিসেবে উল্লেখ করে জনগণের সামনে ভোট প্রার্থনা করেছিল। জনগণ সেই দিনবদলের স্বপ্ন দেখে তাদের নির্বাচন করেছে। জনগণের সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। গত এক বছরের পথচলার অভিজ্ঞতা নিয়ে সরকার সামনে এগিয়ে যাক, এ সময়ের ভুলভ্রান্তি বিবেচনায় নিয়ে সরকার দ্বিতীয় বছর শুরু করুক—সেটাই প্রত্যাশা।
মহাজোট সরকারের এক বছর কেমন গেল—এমন প্রশ্নের উত্তরে সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি, প্রত্যাশার অনেক কিছু পূরণ করতে না পারলেও শুরু অনেকটা ভালো হয়েছে। সরকার বড় ধরনের কোনো ভুল করেছে, এমনটি বলা যাবে না। সরকারের শুরুটা হয়েছিল প্রায় সব নতুন মুখ নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে। দুর্নীতি বা সন্ত্রাসের বড় ধরনের অভিযোগ আছে, এমন কাউকে মন্ত্রিসভায় দেখা যায়নি। তবে নতুনদের নিয়ে গড়া এই মন্ত্রিসভা গত এক বছর কেমন কাজ করল, সে প্রশ্ন তোলা যায়। সব মন্ত্রণালয় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছে, এমন বলা যাবে না। কোনো কোনো মন্ত্রীর অদক্ষতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উপদেষ্টার ভূমিকা ও তত্পরতার কারণে মন্ত্রণালয় পরিচালনায় সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে গতিশীল করার প্রত্যাশা গত এক বছরে যথাযথভাবে পূরণ হয়নি।
নির্বাচনী ইশতেহারে মহাজোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ অগ্রাধিকারের কিছু বিষয় ঠিক করেছিল। দ্রব্যমূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি ছিল এর মধ্যে অন্যতম। আগের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমেছে, তবে সব ক্ষেত্রে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। বাজার গত এক বছরে পুরোপুরি স্থিতিশীল ছিল, এমন বলার সুযোগ নেই। যৌক্তিক কারণ ছাড়া চিনির মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা আমরা দেখেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের অঙ্গীকার ছিল, তবে এখন পর্যন্ত সরকারের এ ব্যাপারে কোনো শক্ত অবস্থান নজরে আসেনি। অনেক ক্ষেত্রে বড় বড় দুর্নীতিবাজের ছাড় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সাংসদ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উত্স প্রতিবছর জনসমক্ষে প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি রাখতে সরকার প্রথম বছরেই ব্যর্থ হয়েছে। চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতিশ্রুতি শুরুতে হোঁচট খেলেও সরকারের কিছু পদক্ষেপ পরিস্থিতির কিছু উন্নতি ঘটিয়েছে।
কৃষি, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তাসহ কিছু ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ নজর ও উদ্যোগের বিষয়টি গত এক বছরের সরকারের কাজে লক্ষণীয় ছিল, যার সুফল অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে। জ্বালানি ও বিদ্যুত্ খাতের উন্নয়ন ও উত্পাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ কর্মপরিকল্পনা দেখা গেলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে, উপজেলা পরিষদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে এক বছরে সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে, তাকে ইতিবাচক বলা যাবে না। শক্তিশালী স্থানীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ মাসেও উপজেলা পরিষদকে সরকার কার্যকর করতে পারেনি। প্রতিশ্রুতি দিলেও ‘ক্রসফায়ার’ থেমে থাকেনি সরকারের এক বছরে। তবে জঙ্গিবাদ ও বাইরের দেশের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সরকার তার অবস্থান অনেকটা পরিষ্কার করতে পেরেছে। এই অবস্থান আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
সংসদ নিয়মিত বসছে, কিন্তু বিরোধী দল সংসদে নেই, এটা সরকার ও সরকারি দলের জন্য ভালো কিছু হতে পারে না। প্রথম অধিবেশনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন ইতিবাচক দিক লক্ষণীয় হলেও সংসদে বিরোধী দলের লাগাতার অনুপস্থিতি এসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
নবম সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেছেন, দিনবদলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সরকারের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারকে ‘দিনবদলের সনদ’ হিসেবে উল্লেখ করে জনগণের সামনে ভোট প্রার্থনা করেছিল। জনগণ সেই দিনবদলের স্বপ্ন দেখে তাদের নির্বাচন করেছে। জনগণের সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। গত এক বছরের পথচলার অভিজ্ঞতা নিয়ে সরকার সামনে এগিয়ে যাক, এ সময়ের ভুলভ্রান্তি বিবেচনায় নিয়ে সরকার দ্বিতীয় বছর শুরু করুক—সেটাই প্রত্যাশা।
No comments