সরকার ও বেসরকারি সংস্থার অংশীদারি বাড়াতে হবে -বেহাল প্রাথমিক শিক্ষা
দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি মহলে আত্মতুষ্টি লক্ষ করা গেলেও শিক্ষার মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ঔদাসীন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক। গত বুধবার ‘বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা, অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শিরোনামে এডুকেশন ওয়াচ প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রাথমিক শিক্ষার করুণ চিত্রই উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ‘অর্জনের চেয়ে অপচয় বেশি’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এ মন্তব্যের সঙ্গে অনেকে একমত না হলেও প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এতে বলা হয়েছে, প্রথম শ্রেণীতে যত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত যেতে তাদের অর্ধেকই ঝরে পড়ে। এ তথ্য উদ্বেগজনক। এটি শুধু সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের ক্ষতি নয়, জাতীয় অপচয়ও বটে।
সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার অর্থ হলো শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করা। সেই লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। কেন হয়নি, সে প্রশ্নের জবাব সরকার তথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই ভালো দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষক—কেউই দায় এড়াতে পারেন না। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে মাঝেমধ্যে আলোচনার টেবিলে ঝড় ওঠে, একমুখী শিক্ষা চালু নিয়ে গালভরা বুলিও কম শোনা যায়নি, কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় যে দুরবস্থা চলছে, তা কাটাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। এডুকেশন ওয়াচের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার জন্য দারিদ্র্য ও বই কিনতে না পারাকে দায়ী করেছেন। দারিদ্র্য শিক্ষার অন্যতম বাধা হলেও একমাত্র নয়। প্রতিবছর পরীক্ষায় যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ফেল করে, সেটি যত না দারিদ্র্যের জন্য, তার চেয়ে বেশি শিক্ষকদের পাঠদানে অনীহার কারণে। সরকার বিনামূল্যে প্রাথমিক পর্যায়ে বই বিতরণ করছে। ঝরে পড়া কমাতে সময়মতো বই বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। অতএব, বই এ ক্ষেত্রে বাধা নয়।
এ বছর চালু হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় প্রায় ২০ শতাংশেরও বেশি পরীক্ষার্থী গরহাজির ছিল। এর কারণ, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পড়াশোনা না হওয়া। শিক্ষক যদি শ্রেণীকক্ষে না-ই পড়ান, তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে, পরীক্ষাই বা দেবে কীভাবে? প্রাথমিক শিক্ষার মান ধরে রাখতে সমাপনী পরীক্ষা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এর ফলে শিক্ষকেরা কিছুটা হলেও জবাবদিহির আওতায় আসবেন। তবে ঝরে পড়া পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে প্রথম শ্রেণী থেকেই পাঠদান ও পাঠ গ্রহণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। শিক্ষার মানোন্নয়নে অর্থমন্ত্রী সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর অংশীদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন। এটিও উপেক্ষণীয় নয়।
এডুকেশন ওয়াচসহ যেসব বেসরকারি সংস্থা শিক্ষা নিয়ে কাজ করে, তাদের সঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের নিবিড় যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একে অন্যকে প্রতিপক্ষ না ভেবে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। শিক্ষানীতি কমিটিও প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সরকার সুপারিশগুলো বিবেচনায় এনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি। সর্বোপরি অভিভাবক, তথা স্থানীয় জনগণের অংশীদারি নিশ্চিত করা গেলে প্রাথমিক শিক্ষার মান যেমন বাড়বে, তেমনি কমবে ঝরে পড়ার হারও। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলো যে সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার অর্থ হলো শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করা। সেই লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। কেন হয়নি, সে প্রশ্নের জবাব সরকার তথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই ভালো দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষক—কেউই দায় এড়াতে পারেন না। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে মাঝেমধ্যে আলোচনার টেবিলে ঝড় ওঠে, একমুখী শিক্ষা চালু নিয়ে গালভরা বুলিও কম শোনা যায়নি, কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় যে দুরবস্থা চলছে, তা কাটাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। এডুকেশন ওয়াচের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার জন্য দারিদ্র্য ও বই কিনতে না পারাকে দায়ী করেছেন। দারিদ্র্য শিক্ষার অন্যতম বাধা হলেও একমাত্র নয়। প্রতিবছর পরীক্ষায় যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ফেল করে, সেটি যত না দারিদ্র্যের জন্য, তার চেয়ে বেশি শিক্ষকদের পাঠদানে অনীহার কারণে। সরকার বিনামূল্যে প্রাথমিক পর্যায়ে বই বিতরণ করছে। ঝরে পড়া কমাতে সময়মতো বই বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। অতএব, বই এ ক্ষেত্রে বাধা নয়।
এ বছর চালু হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় প্রায় ২০ শতাংশেরও বেশি পরীক্ষার্থী গরহাজির ছিল। এর কারণ, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পড়াশোনা না হওয়া। শিক্ষক যদি শ্রেণীকক্ষে না-ই পড়ান, তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে, পরীক্ষাই বা দেবে কীভাবে? প্রাথমিক শিক্ষার মান ধরে রাখতে সমাপনী পরীক্ষা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এর ফলে শিক্ষকেরা কিছুটা হলেও জবাবদিহির আওতায় আসবেন। তবে ঝরে পড়া পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে প্রথম শ্রেণী থেকেই পাঠদান ও পাঠ গ্রহণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। শিক্ষার মানোন্নয়নে অর্থমন্ত্রী সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর অংশীদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন। এটিও উপেক্ষণীয় নয়।
এডুকেশন ওয়াচসহ যেসব বেসরকারি সংস্থা শিক্ষা নিয়ে কাজ করে, তাদের সঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের নিবিড় যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একে অন্যকে প্রতিপক্ষ না ভেবে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। শিক্ষানীতি কমিটিও প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সরকার সুপারিশগুলো বিবেচনায় এনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি। সর্বোপরি অভিভাবক, তথা স্থানীয় জনগণের অংশীদারি নিশ্চিত করা গেলে প্রাথমিক শিক্ষার মান যেমন বাড়বে, তেমনি কমবে ঝরে পড়ার হারও। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলো যে সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
No comments