ধর্ষণ কি অপরাধ নয়? by লীনা পারভীন
আমাদের
দেশে দিনে দিনে সবকিছুই যেন একরকম গা-সওয়া হয়ে যাচ্ছে। এই পৃথিবীতে
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে মানুষ। সেই মানুষের জীবনেরও যেন কোনও মূল্য নেই।
সস্তা থেকে আরও সস্তা হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মৃত্যু এখন আর আমাদের কাঁদায় না।
সামান্য আহা উহু করেই ভুলে যাই ঘটনা। মৃত্যু যেন আজকাল কেবলই কিছু সংখ্যায়
পরিণত হয়েছে।
তেমনি সংখ্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার বেলাতেও। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে মোট ১৮৭ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে মোট ১৯ নারীকে এবং আত্মহত্যা করেছে আরও দুজন নারী। এর বাইরে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে মোট ২১ জন নারীর ওপর। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে এই ভয়াবহ তথ্য। একই প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ২৭ জন নারী, যার মধ্যে আত্মহত্যা করেছে দুজন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ—এই তিন মাসে ১৭৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ৫৫টির বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
তথ্য বলছে, তিন মাসে ধর্ষণের শিকার ১৭৬টি শিশুর মধ্যে ২০টি শিশুই গণধর্ষণের শিকার হয়। আটজন প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। তিন মাসে ২৫ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় এবং তিনটি শিশু ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২১টি শিশুকে।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭ সালের প্রথম তিন মাসে মোট ১৪৫টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, যাদের মধ্যে ৩১টি শিশু গণধর্ষণের শিকার। ২০১৮-এর প্রথম তিন মাসে, গত বছরের তিন মাসের চেয়ে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ১৮ শতাংশ। ধর্ষণের পর শিশুহত্যা বেড়েছে ১০০ শতাংশ। তিন মাসের এই চিত্র কি বাকি ৯ মাসের চিত্রকে উস্কে দেবে না থামাতে সাহায্য করবে?
এর বিপরীতে এ ধরনের অপরাধের বিচারের পরিসংখ্যান অত্যন্ত মর্মান্তিক। এমনিতেই আমাদের দেশের নারীরা তাদের নির্যাতনের কথা কারও সঙ্গে প্রকাশ করতে চায় না। আইনি আশ্রয় তো অনেক দূরের কথা, ধর্ষণের কথাও পরিবারগুলো চেপে যায় সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে। তার মধ্যেও যতগুলো অপরাধের মামলা হয় তার ক’টি শেষ পর্যন্ত বিচারের মুখ দেখে সেটা একটা বড় প্রশ্ন। জানা গেছে, বেশিরভাগেরই পুলিশ মামলা নিতে চায় না। যেগুলো নেয় সেগুলোর ৩ শতাংশও বিচার পায় না। মামলার জট লেগে আছে বছরের পর বছর ধরে। আছে টাকা খেয়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও।
এই যখন অবস্থা তখন সমাজে অপরাধের মাত্রা বাড়তেই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ সেল আছে, যেখানে নারী ও শিশু সম্পর্কিত মামলাগুলোর বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হয়। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের পরিসংখ্যানও আমাদের আশাবাদী হতে দেয় না।
আইনের প্রতি আস্থাহীনতার এক চরম উদাহরণ হতে পারে এসব ঘটনা। বিচারহীনতার ঘটনা, আরেকদিকে আইনকে তোয়াক্কা না করার মতো সাহস। দুটি মিলে সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে। সাধারণ নাগরিকের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ এক ত্রাসের পরিস্থিতি।
আমাদের দেশ আজ অনেক এগিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের পথে হাঁটছি আমরা। দেশ বিদেশে আমাদের এই অর্জনকে সাধুবাদ জানানো হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন সৎ ও মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশ্বনেতৃত্বের কাছ থেকে। আমাদের গর্ব তিনি। কিন্তু, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী এই নারী ও শিশুদের জীবনকে নিরাপত্তাহীন রেখে এই অর্জন কতটা সুখকর অবস্থা তৈরি করবে আমার জানা নেই।
বিচার ব্যবস্থা ও আইন যদি কঠোর ও সহায়ক না হয় তাহলে সে সমাজ কতদিন উন্নয়নের পথে হাঁটতে পারবে সেটি আশা করি আমাদের নীতিনির্ধারকরা ভালোই বুঝেন। দিনে দিনে একদল মানুষ নারীদের প্রতি তাদের পাশবিক মনোবৃত্তির প্রকাশ করে যাচ্ছে, আর আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র সেদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপ করছে বলে মনে হচ্ছে না।
সামাজিক সচেতনতা যেমন বাড়াতে হবে, তারচেয়েও বড় দায়িত্ব হচ্ছে অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা। বছরের পর বছর মামলা ঝুলিয়ে রাখার সংস্কৃতিকে ভেঙে দিতে হবে। ধর্ষণের বিচারকে দ্রুত নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনে আইনকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিশুদের রক্ষার জন্য নিতে হবে বিশেষ পদক্ষেপ। বিদ্যালয়গুলোতেও দেখা যাচ্ছে শিক্ষকরা ধর্ষকদের রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। একটা সমাজ কতটা পচে গেলে ও কতটা নৈতিকতাহীন হওয়ার পথে থাকলে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
আমরা ধর্ষণ ও নির্যাতনের পরিসংখ্যানের এই ঊর্ধ্বগতির হাত থেকে রেহাই চাই। অবিলম্বে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজ থেকে অপরাধ কমাতে হলে বিচার ব্যবস্থার কঠিন ও কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। দুই একটা ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ তৈরি করলেই অপরাধীরা বুঝবে অপরাধ করে বেঁচে যাওয়ার দিন শেষ।
সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে একতাবদ্ধ হয়ে। সমাজে সাংস্কৃতিক অবক্ষয় রোধে নিতে হবে উপযুক্ত পদক্ষেপ। আমাদের সিনেমা নাটকে ধর্ষণের দৃশ্য দেখানোর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। ধর্ষণ একটি সামাজিক অপরাধ। এটি কোনোভাবেই সমাজ স্বীকৃত কোনও কর্ম নয় যে সিনেমায় সেটাকে যুক্ত করতে হবে।
তাই আমাদের দাবি, অবিলম্বে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হোক। দ্রুত আদালত গঠন করে পুরনো মামলার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। থানাগুলোকে নারীর জন্য নিরাপদ বলে ঘোষণা দিতে হবে। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজ উদ্যোগে নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলা নেবে। অপরাধীর সামাজিক পরিচয় বিবেচনায় না এনে তাকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে।
আমরা একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক সমাজ চাই। আমাদের বাংলাদেশ ধর্ষকদের বিচরণক্ষেত্র হতে পারে না। অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে চলাচল করবে আর ধর্ষিত নারী মাথা নিচু করে অপরাধীর চেহারা নিয়ে চলবে, এই অবস্থার উত্তোরণ ঘটানোর উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। বছর বছর এই পরিসংখ্যানের ঊর্ধ্বরেখা আমরা আর দেখতে চাই না।
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
তেমনি সংখ্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার বেলাতেও। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে মোট ১৮৭ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে মোট ১৯ নারীকে এবং আত্মহত্যা করেছে আরও দুজন নারী। এর বাইরে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে মোট ২১ জন নারীর ওপর। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে এই ভয়াবহ তথ্য। একই প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ২৭ জন নারী, যার মধ্যে আত্মহত্যা করেছে দুজন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ—এই তিন মাসে ১৭৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ৫৫টির বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যা আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
তথ্য বলছে, তিন মাসে ধর্ষণের শিকার ১৭৬টি শিশুর মধ্যে ২০টি শিশুই গণধর্ষণের শিকার হয়। আটজন প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। তিন মাসে ২৫ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় এবং তিনটি শিশু ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২১টি শিশুকে।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭ সালের প্রথম তিন মাসে মোট ১৪৫টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, যাদের মধ্যে ৩১টি শিশু গণধর্ষণের শিকার। ২০১৮-এর প্রথম তিন মাসে, গত বছরের তিন মাসের চেয়ে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ১৮ শতাংশ। ধর্ষণের পর শিশুহত্যা বেড়েছে ১০০ শতাংশ। তিন মাসের এই চিত্র কি বাকি ৯ মাসের চিত্রকে উস্কে দেবে না থামাতে সাহায্য করবে?
এর বিপরীতে এ ধরনের অপরাধের বিচারের পরিসংখ্যান অত্যন্ত মর্মান্তিক। এমনিতেই আমাদের দেশের নারীরা তাদের নির্যাতনের কথা কারও সঙ্গে প্রকাশ করতে চায় না। আইনি আশ্রয় তো অনেক দূরের কথা, ধর্ষণের কথাও পরিবারগুলো চেপে যায় সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে। তার মধ্যেও যতগুলো অপরাধের মামলা হয় তার ক’টি শেষ পর্যন্ত বিচারের মুখ দেখে সেটা একটা বড় প্রশ্ন। জানা গেছে, বেশিরভাগেরই পুলিশ মামলা নিতে চায় না। যেগুলো নেয় সেগুলোর ৩ শতাংশও বিচার পায় না। মামলার জট লেগে আছে বছরের পর বছর ধরে। আছে টাকা খেয়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও।
এই যখন অবস্থা তখন সমাজে অপরাধের মাত্রা বাড়তেই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ সেল আছে, যেখানে নারী ও শিশু সম্পর্কিত মামলাগুলোর বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হয়। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের পরিসংখ্যানও আমাদের আশাবাদী হতে দেয় না।
আইনের প্রতি আস্থাহীনতার এক চরম উদাহরণ হতে পারে এসব ঘটনা। বিচারহীনতার ঘটনা, আরেকদিকে আইনকে তোয়াক্কা না করার মতো সাহস। দুটি মিলে সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে। সাধারণ নাগরিকের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ এক ত্রাসের পরিস্থিতি।
আমাদের দেশ আজ অনেক এগিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের পথে হাঁটছি আমরা। দেশ বিদেশে আমাদের এই অর্জনকে সাধুবাদ জানানো হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন সৎ ও মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশ্বনেতৃত্বের কাছ থেকে। আমাদের গর্ব তিনি। কিন্তু, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী এই নারী ও শিশুদের জীবনকে নিরাপত্তাহীন রেখে এই অর্জন কতটা সুখকর অবস্থা তৈরি করবে আমার জানা নেই।
বিচার ব্যবস্থা ও আইন যদি কঠোর ও সহায়ক না হয় তাহলে সে সমাজ কতদিন উন্নয়নের পথে হাঁটতে পারবে সেটি আশা করি আমাদের নীতিনির্ধারকরা ভালোই বুঝেন। দিনে দিনে একদল মানুষ নারীদের প্রতি তাদের পাশবিক মনোবৃত্তির প্রকাশ করে যাচ্ছে, আর আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র সেদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপ করছে বলে মনে হচ্ছে না।
সামাজিক সচেতনতা যেমন বাড়াতে হবে, তারচেয়েও বড় দায়িত্ব হচ্ছে অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা। বছরের পর বছর মামলা ঝুলিয়ে রাখার সংস্কৃতিকে ভেঙে দিতে হবে। ধর্ষণের বিচারকে দ্রুত নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনে আইনকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিশুদের রক্ষার জন্য নিতে হবে বিশেষ পদক্ষেপ। বিদ্যালয়গুলোতেও দেখা যাচ্ছে শিক্ষকরা ধর্ষকদের রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। একটা সমাজ কতটা পচে গেলে ও কতটা নৈতিকতাহীন হওয়ার পথে থাকলে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
আমরা ধর্ষণ ও নির্যাতনের পরিসংখ্যানের এই ঊর্ধ্বগতির হাত থেকে রেহাই চাই। অবিলম্বে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজ থেকে অপরাধ কমাতে হলে বিচার ব্যবস্থার কঠিন ও কঠোর পদক্ষেপ ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। দুই একটা ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ তৈরি করলেই অপরাধীরা বুঝবে অপরাধ করে বেঁচে যাওয়ার দিন শেষ।
সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে একতাবদ্ধ হয়ে। সমাজে সাংস্কৃতিক অবক্ষয় রোধে নিতে হবে উপযুক্ত পদক্ষেপ। আমাদের সিনেমা নাটকে ধর্ষণের দৃশ্য দেখানোর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। ধর্ষণ একটি সামাজিক অপরাধ। এটি কোনোভাবেই সমাজ স্বীকৃত কোনও কর্ম নয় যে সিনেমায় সেটাকে যুক্ত করতে হবে।
তাই আমাদের দাবি, অবিলম্বে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হোক। দ্রুত আদালত গঠন করে পুরনো মামলার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। থানাগুলোকে নারীর জন্য নিরাপদ বলে ঘোষণা দিতে হবে। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজ উদ্যোগে নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলা নেবে। অপরাধীর সামাজিক পরিচয় বিবেচনায় না এনে তাকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে।
আমরা একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক সমাজ চাই। আমাদের বাংলাদেশ ধর্ষকদের বিচরণক্ষেত্র হতে পারে না। অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে চলাচল করবে আর ধর্ষিত নারী মাথা নিচু করে অপরাধীর চেহারা নিয়ে চলবে, এই অবস্থার উত্তোরণ ঘটানোর উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। বছর বছর এই পরিসংখ্যানের ঊর্ধ্বরেখা আমরা আর দেখতে চাই না।
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
No comments