ইডকলের কার্যক্রম নিয়ে এমপিদের ক্ষোভ by কাজী সোহাগ
ইনফ্রাস্ট্রাকচার
ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল)-এর কার্যক্রম নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন
এমপিরা। তাদের অভিযোগ বাজারদরের চেয়ে ইডকলের জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি।
অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করে ইডকল। এমপিদের পাশাপাশি ক্ষোভ জানিয়েছেন
ব্যবসায়ীরাও। একই সঙ্গে বিব্রত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য
পাওয়া গেছে। এমপিদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে
আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ইডকল একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ইডকল কোম্পানি পরিচালিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর
কার্যালয়ের অনুশাসন অনুযায়ী মন্ত্রণালয় শুধু জেলা প্রশাসকদের কাছে অর্থের
বরাদ্দ দেয়।
জেলা প্রশাসকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে অর্থের বিভাজন করেন। কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ৫৬টি এনজিও’র মাধ্যমে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মূলত ইডকলের বরাদ্দ আসে এমপিদের নামে। কিন্তু এমপিদের মাঠপর্যায়ে মনিটরিং সুপারভাইজিংয়ের কোনো অথরিটি নেই। মন্ত্রণালয় যে বরাদ্দ দেয় তার ৫০ ভাগ কাজ করে ইডকল। কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, উপজেলাসমূহে ইডকল থেকে যে সোলার প্যানেল পাওয়া যাচ্ছে বাইরে তার চেয়ে কম মূল্যে উন্নতমানের সোলার প্যানেল কেনা সম্ভব। তাহলে কেন বেশি মূল্যে কিনে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। কমিটির অপর সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, বাজারদরের চেয়ে ইডকলের জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তাদের কার্যক্রমে জনগণ ক্ষুব্ধ। অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করে ইডকল। কমিটির অপর সদস্য আবদুর রহমান বদি বৈঠকে বলেন, ইডকল কোম্পানি এত নিম্নমানের কাজ বেশি মূল্যে করছে তা হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অবহিত নয়। তাছাড়া ইডকল কি কি শর্তে কাজ করছে তা জানা নেই। তাই তিনি ইডকল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন। তার নির্বাচনী এলাকায় সোলার প্যানেলের কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে বলে জানান। এমপিরা জানান, দাম বেশি, মান খারাপ এবং এর দায়িত্ব কার এটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এদিকে এমপিদের পাশাপাশি ইডকলের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছে দেয়ার স্লোগান নিয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে বছর দশেক আগে শুরু হয় সোলার মিনি গ্রিডের যাত্রা। যেসব অঞ্চলে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব নয় সেসব অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ১৩টি মিনি গ্রিড চালু হয়েছে। উদ্যোক্তা, বৈদেশিক সাহায্য ও রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইডকলের ঋণের টাকায় প্রতিষ্ঠা হয় এসব প্রকল্প। তবে ইডকলের ফিন্যান্সিয়াল মডেলে যে হারে দৈনিক ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণা দেয়া হয়েছে, বাস্তবে তার অর্ধেক পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আবার উচ্চমূল্যের কারণে প্রয়োজনীয়সংখ্যক গ্রাহকও পাচ্ছে না অনেক মিনি গ্রিড। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশের (এসইবিএল) প্রকৌশলী ডিএম মজিবর রহমান জানান, মনপুরা মিনি গ্রিডের ফিন্যান্সিয়াল মডেলের বড় গলদ ধরা পড়তে পড়তেই শরীয়তপুরের দু’টি মিনি গ্রিড স্থাপনের বেশির ভাগ কাজ হয়ে গেছে। এরপর আরো ছয়টি মিনি গ্রিডের অনুমোদন পেলেও তিনি চিঠি দিয়ে তা বন্ধ রেখেছেন। এখন চালু তিনটি মিনি গ্রিডের ভবিষ্যৎ নিয়েই অন্ধকার দেখছেন তিনি। তিনটি মিনি গ্রিড ২০ বছর চালালে গ্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলেও তিনি দাবি করেন।
মনপুরা মিনি গ্রিড সম্পর্কে তিনি বলেন, ইডকলের মডেলে দেখানো হয়েছে এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬৫২ ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ ইউনিট পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ১৯টি দিকে সক্ষমতা অর্জন করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে এই মিনি গ্রিড বিদ্যুৎ। দুর্গম অফগ্রিড চরাঞ্চলে এসব গ্রকল্পের ডিজাইন ও মডেল তৈরিতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ইডকল সে পথে না গিয়ে এই দুর্ঘটনা করল। এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, শর্ত অনুযায়ী ইডকলের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের চুক্তি হয়। বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়টি দেখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। শ্রেডা মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি করে থাকে। তিনি বলেন, পণ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নির্ধারণ করে। মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে কিছুই করণীয় নেই। তিনিও ইডকল কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ে অসন্তুষ্ট বলে কমিটিকে অবহিত করেন। কারণ বিভিন্ন বৈঠকে ইডকলের কার্যক্রম নিয়ে জবাব দিতে গিয়ে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তিনি ইডকলের পণ্য ও কার্যক্রম নিয়ে সংসদীয় কমিটির একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ কামনা করেন।
জেলা প্রশাসকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে অর্থের বিভাজন করেন। কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ৫৬টি এনজিও’র মাধ্যমে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মূলত ইডকলের বরাদ্দ আসে এমপিদের নামে। কিন্তু এমপিদের মাঠপর্যায়ে মনিটরিং সুপারভাইজিংয়ের কোনো অথরিটি নেই। মন্ত্রণালয় যে বরাদ্দ দেয় তার ৫০ ভাগ কাজ করে ইডকল। কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, উপজেলাসমূহে ইডকল থেকে যে সোলার প্যানেল পাওয়া যাচ্ছে বাইরে তার চেয়ে কম মূল্যে উন্নতমানের সোলার প্যানেল কেনা সম্ভব। তাহলে কেন বেশি মূল্যে কিনে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। কমিটির অপর সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, বাজারদরের চেয়ে ইডকলের জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তাদের কার্যক্রমে জনগণ ক্ষুব্ধ। অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করে ইডকল। কমিটির অপর সদস্য আবদুর রহমান বদি বৈঠকে বলেন, ইডকল কোম্পানি এত নিম্নমানের কাজ বেশি মূল্যে করছে তা হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অবহিত নয়। তাছাড়া ইডকল কি কি শর্তে কাজ করছে তা জানা নেই। তাই তিনি ইডকল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন। তার নির্বাচনী এলাকায় সোলার প্যানেলের কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে বলে জানান। এমপিরা জানান, দাম বেশি, মান খারাপ এবং এর দায়িত্ব কার এটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এদিকে এমপিদের পাশাপাশি ইডকলের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছে দেয়ার স্লোগান নিয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে বছর দশেক আগে শুরু হয় সোলার মিনি গ্রিডের যাত্রা। যেসব অঞ্চলে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব নয় সেসব অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ১৩টি মিনি গ্রিড চালু হয়েছে। উদ্যোক্তা, বৈদেশিক সাহায্য ও রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইডকলের ঋণের টাকায় প্রতিষ্ঠা হয় এসব প্রকল্প। তবে ইডকলের ফিন্যান্সিয়াল মডেলে যে হারে দৈনিক ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণা দেয়া হয়েছে, বাস্তবে তার অর্ধেক পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আবার উচ্চমূল্যের কারণে প্রয়োজনীয়সংখ্যক গ্রাহকও পাচ্ছে না অনেক মিনি গ্রিড। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশের (এসইবিএল) প্রকৌশলী ডিএম মজিবর রহমান জানান, মনপুরা মিনি গ্রিডের ফিন্যান্সিয়াল মডেলের বড় গলদ ধরা পড়তে পড়তেই শরীয়তপুরের দু’টি মিনি গ্রিড স্থাপনের বেশির ভাগ কাজ হয়ে গেছে। এরপর আরো ছয়টি মিনি গ্রিডের অনুমোদন পেলেও তিনি চিঠি দিয়ে তা বন্ধ রেখেছেন। এখন চালু তিনটি মিনি গ্রিডের ভবিষ্যৎ নিয়েই অন্ধকার দেখছেন তিনি। তিনটি মিনি গ্রিড ২০ বছর চালালে গ্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলেও তিনি দাবি করেন।
মনপুরা মিনি গ্রিড সম্পর্কে তিনি বলেন, ইডকলের মডেলে দেখানো হয়েছে এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬৫২ ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ ইউনিট পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ১৯টি দিকে সক্ষমতা অর্জন করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে এই মিনি গ্রিড বিদ্যুৎ। দুর্গম অফগ্রিড চরাঞ্চলে এসব গ্রকল্পের ডিজাইন ও মডেল তৈরিতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ইডকল সে পথে না গিয়ে এই দুর্ঘটনা করল। এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, শর্ত অনুযায়ী ইডকলের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের চুক্তি হয়। বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়টি দেখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। শ্রেডা মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি করে থাকে। তিনি বলেন, পণ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নির্ধারণ করে। মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে কিছুই করণীয় নেই। তিনিও ইডকল কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ে অসন্তুষ্ট বলে কমিটিকে অবহিত করেন। কারণ বিভিন্ন বৈঠকে ইডকলের কার্যক্রম নিয়ে জবাব দিতে গিয়ে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তিনি ইডকলের পণ্য ও কার্যক্রম নিয়ে সংসদীয় কমিটির একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ কামনা করেন।
No comments