অপারেশন খরচাখাতা by এম আর আলম
একরকম উচ্ছ্বাস মনের কোণে উঁকি দেয় রজনী সিংহানিয়ার। আবার তিনি মু্ক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন! কিন্তু তা আর হলো না। সবার মতো রজনীও এসেছিলেন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে। পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে ট্রেনে উঠতে বারণ করে বরং তাঁকে তোলা হয় মিলিটারি জিপে। রজনীর বেঁচে যাওয়া ভাই আজও জানেন না, তাঁর আদরের সেই লক্ষ্মী বোনটি এখন কোথায়।
একাত্তরের ১৩ জুন এমনই ঘটনা ঘটেছিল। প্রতারক পাকিস্তানি বাহিনী সৈয়দপুরের হিন্দু মাড়োয়ারিদের নিরাপদ আবাস ভারতে পৌঁছে দেওয়ার নামে সৈয়দপুর স্টেশনে জড়ো করে। একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। ট্রেনটি স্টেশনের প্লাটফর্মে দাঁড়ানো। সারি সারি মাড়োয়ারি হুড়মুড় করে উঠে বসছে ট্রেনে। এর আগে ২০ জন তরুণী আর নববধূকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায় বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী। পরে জানা যায়, ওই তরুণীদের সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে গিয়ে অফিসারদের উপহার দেওয়া হয়।
শ্যামলাল আগরওয়ালা সে দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। শ্যামলাল বললেন, ২৩ মার্চ রাত থেকে সৈয়দপুরে বাঙালি নিধন শুরু হয়ে যায়। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর সৈয়দপুরের বিহারিরা রক্তের হোলিখেলায় মেতে ওঠে। মহল্লায়-মহল্লায় ঢুকে নেতৃস্থানীয় বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এ অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিল শহরের মাড়োয়ারিপট্টির বাসিন্দারা।
২৪ মার্চ থেকে সৈয়দপুর শহরের বাঙালি পরিবারগুলো পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যদিও এর আগে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বিহারি-অধ্যুষিত এ শহরে অন্য রকম যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। তিনি আরও বললেন, মাড়োয়ারিদের এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা সৈয়দপুরে সমাজসেবী হিসেবে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন জনগণের মনে। এখানকার মাড়োয়ারি সমাজসেবী তুলসীরাম আগরওয়ালা ১৯১১ সালে সৈয়দপুরে একটি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ওই স্কুলের নামকরণ হয় তুলসীরাম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। বাবু তুলসীরামসহ যমুনাপ্রসাদ কেডিয়া, রামেশ্বর লাল আগরওয়ালাকে সৈয়দপুরের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ১২ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের অদূরে নিসবেতগঞ্জ বধ্যভূমিতে নিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। মাড়োয়ারিপট্টিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিহারিরা মাড়োয়ারিদের বাসায় বাসায় চালায় লুটতরাজ।
তিনি বললেন, সৈয়দপুর শহরে বিপুলসংখ্যক মাড়োয়ারি বসবাস করতেন। আর ছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক, যাঁরা ’৪৭-এর দেশ বিভাগের বহু আগেই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে এসেছিলেন।
১৯৭১-এর ৫ জুন পাকিস্তানি বাহিনী মাইকে ঘোষণা শুরু করে। ওই ঘোষণায় বলা হয়, যাঁরা হিন্দু মাড়োয়ারি তাঁদের নিরাপদ স্থান ভারতে পৌঁছে দেওয়া হবে। একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই ট্রেনটি ১৩ জুন সকালে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চিলাহাটি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের জলপাইগুড়িতে পৌঁছাবে। এ ঘোষণায় মাড়োয়ারিপট্টিতে স্বস্তি নেমে আসে। রজনীর মতো সবাই বাঁচার স্বপ্নে বিভোর হন। শুরু হয় লুটের পর বাদবাকি যা ছিল তা-ই নিয়ে গোছগাছ।
১৩ জুন রেলওয়ে স্টেশনে ঠিকই আসে বিশেষ ট্রেনটি। সৈয়দপুর রেল-কারখানা থেকে ট্রেন র্যাকটি সকাল আটটায় স্টেশনের প্লাটফর্মে এসে দাঁড়ায়। গাদাগাদি করে বসতে থাকেন বৃদ্ধ-যুবক, তরুণ-শিশু ও সকল পর্যায়ের নারীরা। ওই ট্রেন থেকে কমপক্ষে ২০ জন তরুণীকে নামিয়ে নেয় পাকিস্তানি বাহিনী। তাঁদের মিলিটারি জিপে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে।
১০টায় ট্রেন ছাড়ল। সেই ট্রেনে যাত্রী হয়েছিলেন সে সময়ের টগবগে যুবক তপন কুমার দাস কাল্ঠু। তিনি বললেন, ট্রেন ছাড়ার পর আমরা স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু ধপাধপ ট্রেনের সব জানালা-দরজা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ জানতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু এক ধরনের ভীতি সেই প্রশ্নটি করতে দেয়নি নিজের অজান্তেই।
বিনোদ আগরওয়ালা কিছু বলতে পারছিলেন না। কণ্ঠ তাঁর বাষ্পরুদ্ধ। তবু তাঁর কথার সারমর্ম থেকে বোঝা গেল, ট্রেনটা দুই মাইলের মতো পথ অতিক্রম করেছে। খুব ধীরে চলছিল ট্রেনটি। শহরের গোলাহাটের কাছে আসতেই থেমে গেল বিশেষ ট্রেনটি। এরপর কম্পার্টমেন্টের একটা দরজা খুলে গেল। ওই দরজা দিয়ে কম্পার্টমেন্টে ঢুকল কয়েকজন বিহারি, ওদের হাতে চকচকে রামদা। একইভাবে প্রতিটি কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়ে রামদা হাতে বিহারিরা। বাইরে উঁকি দিতেই দেখা গেল পাকিস্তানি বাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে, সবার হাতে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র। পালাবার পথ নেই। এ সময় বিহারিরা চিৎকার করে বলে উঠল, ‘মালাউনকা বাচ্চা! তুমলোগকো মারনে কি লিয়ে সারকারকা কিমতি গোলি কিউ খারচ্ কারু?’ অর্থাৎ বিধর্মীর বাচ্চা! তোদের মারার জন্য সরকারের মূল্যবান বুলেট কেন খরচ করব? এই বলে এলোপাতাড়ি রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে ট্রেন থেকে একজন একজন করে বের করে। ওই হত্যাযজ্ঞের নাম দেওয়া হয় অপারেশন খরচাখাতা।
পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন খরচাখাতায় ৪৩৭ জন নিরীহ হিন্দু মাড়োয়ারিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাযজ্ঞ থেকে কোনোরকমে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান প্রায় ১০ জন যুবক। তাঁরা ট্রেন থেকে নেমে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে দিনাজপুর হয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
১৩ জুন ওই হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি ধরে রাখতে গোলাহাটে বধ্যভূমিতে আজও গড়ে ওঠেনি কোনো স্মৃতির মিনার। তবু প্রজন্ম ’৭১ ও স্মরণিকা পরিষদ ওই বধ্যভূমিতে শহীদ স্মরণে অনুষ্ঠান করল সেদিন, জীবন উৎসর্গকারীদের শ্রদ্ধা জানাল তারা।
অঞ্জলি প্রদান ও পূজার মধ্য দিয়ে সৈয়দপুরের গোলাহাট বধ্যভূমিতে স্মরণ করা হলো শহীদদের।
প্রজন্ম ’৭১ ও স্মরণিকা পরিষদের আয়োজনে সেখানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্বজন হারানো তপন কুমার দাস, রতন আগরওয়ালা, নিজু আগরওয়ালা, সুশীল আগরওয়ালা প্রমুখ।
পরে সেখানে গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়। স্মরণিকা পরিষদের সভাপতি সুমিত আগরওয়ালা বলেন, গোলাহাট বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারিভাবে আজও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি ওই বধ্যভূমিতে জাতীয় মানের একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান।
একাত্তরের ১৩ জুন এমনই ঘটনা ঘটেছিল। প্রতারক পাকিস্তানি বাহিনী সৈয়দপুরের হিন্দু মাড়োয়ারিদের নিরাপদ আবাস ভারতে পৌঁছে দেওয়ার নামে সৈয়দপুর স্টেশনে জড়ো করে। একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। ট্রেনটি স্টেশনের প্লাটফর্মে দাঁড়ানো। সারি সারি মাড়োয়ারি হুড়মুড় করে উঠে বসছে ট্রেনে। এর আগে ২০ জন তরুণী আর নববধূকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায় বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী। পরে জানা যায়, ওই তরুণীদের সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে গিয়ে অফিসারদের উপহার দেওয়া হয়।
শ্যামলাল আগরওয়ালা সে দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। শ্যামলাল বললেন, ২৩ মার্চ রাত থেকে সৈয়দপুরে বাঙালি নিধন শুরু হয়ে যায়। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর সৈয়দপুরের বিহারিরা রক্তের হোলিখেলায় মেতে ওঠে। মহল্লায়-মহল্লায় ঢুকে নেতৃস্থানীয় বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এ অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিল শহরের মাড়োয়ারিপট্টির বাসিন্দারা।
২৪ মার্চ থেকে সৈয়দপুর শহরের বাঙালি পরিবারগুলো পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যদিও এর আগে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বিহারি-অধ্যুষিত এ শহরে অন্য রকম যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। তিনি আরও বললেন, মাড়োয়ারিদের এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা সৈয়দপুরে সমাজসেবী হিসেবে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন জনগণের মনে। এখানকার মাড়োয়ারি সমাজসেবী তুলসীরাম আগরওয়ালা ১৯১১ সালে সৈয়দপুরে একটি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ওই স্কুলের নামকরণ হয় তুলসীরাম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। বাবু তুলসীরামসহ যমুনাপ্রসাদ কেডিয়া, রামেশ্বর লাল আগরওয়ালাকে সৈয়দপুরের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ১২ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের অদূরে নিসবেতগঞ্জ বধ্যভূমিতে নিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। মাড়োয়ারিপট্টিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিহারিরা মাড়োয়ারিদের বাসায় বাসায় চালায় লুটতরাজ।
তিনি বললেন, সৈয়দপুর শহরে বিপুলসংখ্যক মাড়োয়ারি বসবাস করতেন। আর ছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক, যাঁরা ’৪৭-এর দেশ বিভাগের বহু আগেই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে এসেছিলেন।
১৯৭১-এর ৫ জুন পাকিস্তানি বাহিনী মাইকে ঘোষণা শুরু করে। ওই ঘোষণায় বলা হয়, যাঁরা হিন্দু মাড়োয়ারি তাঁদের নিরাপদ স্থান ভারতে পৌঁছে দেওয়া হবে। একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই ট্রেনটি ১৩ জুন সকালে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চিলাহাটি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের জলপাইগুড়িতে পৌঁছাবে। এ ঘোষণায় মাড়োয়ারিপট্টিতে স্বস্তি নেমে আসে। রজনীর মতো সবাই বাঁচার স্বপ্নে বিভোর হন। শুরু হয় লুটের পর বাদবাকি যা ছিল তা-ই নিয়ে গোছগাছ।
১৩ জুন রেলওয়ে স্টেশনে ঠিকই আসে বিশেষ ট্রেনটি। সৈয়দপুর রেল-কারখানা থেকে ট্রেন র্যাকটি সকাল আটটায় স্টেশনের প্লাটফর্মে এসে দাঁড়ায়। গাদাগাদি করে বসতে থাকেন বৃদ্ধ-যুবক, তরুণ-শিশু ও সকল পর্যায়ের নারীরা। ওই ট্রেন থেকে কমপক্ষে ২০ জন তরুণীকে নামিয়ে নেয় পাকিস্তানি বাহিনী। তাঁদের মিলিটারি জিপে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে।
১০টায় ট্রেন ছাড়ল। সেই ট্রেনে যাত্রী হয়েছিলেন সে সময়ের টগবগে যুবক তপন কুমার দাস কাল্ঠু। তিনি বললেন, ট্রেন ছাড়ার পর আমরা স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু ধপাধপ ট্রেনের সব জানালা-দরজা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ জানতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু এক ধরনের ভীতি সেই প্রশ্নটি করতে দেয়নি নিজের অজান্তেই।
বিনোদ আগরওয়ালা কিছু বলতে পারছিলেন না। কণ্ঠ তাঁর বাষ্পরুদ্ধ। তবু তাঁর কথার সারমর্ম থেকে বোঝা গেল, ট্রেনটা দুই মাইলের মতো পথ অতিক্রম করেছে। খুব ধীরে চলছিল ট্রেনটি। শহরের গোলাহাটের কাছে আসতেই থেমে গেল বিশেষ ট্রেনটি। এরপর কম্পার্টমেন্টের একটা দরজা খুলে গেল। ওই দরজা দিয়ে কম্পার্টমেন্টে ঢুকল কয়েকজন বিহারি, ওদের হাতে চকচকে রামদা। একইভাবে প্রতিটি কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়ে রামদা হাতে বিহারিরা। বাইরে উঁকি দিতেই দেখা গেল পাকিস্তানি বাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে, সবার হাতে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র। পালাবার পথ নেই। এ সময় বিহারিরা চিৎকার করে বলে উঠল, ‘মালাউনকা বাচ্চা! তুমলোগকো মারনে কি লিয়ে সারকারকা কিমতি গোলি কিউ খারচ্ কারু?’ অর্থাৎ বিধর্মীর বাচ্চা! তোদের মারার জন্য সরকারের মূল্যবান বুলেট কেন খরচ করব? এই বলে এলোপাতাড়ি রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে ট্রেন থেকে একজন একজন করে বের করে। ওই হত্যাযজ্ঞের নাম দেওয়া হয় অপারেশন খরচাখাতা।
পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন খরচাখাতায় ৪৩৭ জন নিরীহ হিন্দু মাড়োয়ারিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাযজ্ঞ থেকে কোনোরকমে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান প্রায় ১০ জন যুবক। তাঁরা ট্রেন থেকে নেমে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে দিনাজপুর হয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
১৩ জুন ওই হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি ধরে রাখতে গোলাহাটে বধ্যভূমিতে আজও গড়ে ওঠেনি কোনো স্মৃতির মিনার। তবু প্রজন্ম ’৭১ ও স্মরণিকা পরিষদ ওই বধ্যভূমিতে শহীদ স্মরণে অনুষ্ঠান করল সেদিন, জীবন উৎসর্গকারীদের শ্রদ্ধা জানাল তারা।
অঞ্জলি প্রদান ও পূজার মধ্য দিয়ে সৈয়দপুরের গোলাহাট বধ্যভূমিতে স্মরণ করা হলো শহীদদের।
প্রজন্ম ’৭১ ও স্মরণিকা পরিষদের আয়োজনে সেখানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্বজন হারানো তপন কুমার দাস, রতন আগরওয়ালা, নিজু আগরওয়ালা, সুশীল আগরওয়ালা প্রমুখ।
পরে সেখানে গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়। স্মরণিকা পরিষদের সভাপতি সুমিত আগরওয়ালা বলেন, গোলাহাট বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারিভাবে আজও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি ওই বধ্যভূমিতে জাতীয় মানের একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান।
No comments