মূলধনি মুনাফার ওপর কর কমাতে বিকল্প প্রস্তাব
আগামী ২০১০-১১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মূলধনি মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের স্বার্থে এ প্রস্তাব সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নেতারা।
তাঁরা বলেছেন, শুরুতেই এত উচ্চ হারে কর নেওয়া হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবে। এতে বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই প্রস্তাবিত করহারের পরিবর্তে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। প্রস্তাব দুটিতে বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান এক বছরের কম সময়ের জন্য বিনিয়োগ করবে, তাদের লভ্যাংশের ওপর ৫ শতাংশ এবং এক বছরের বেশি সময়ের বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের ওপর ৩ শতাংশ হারে কর আরোপ করা যেতে পারে।
রাজধানীর মতিঝিলে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কার্যালয়ে গতকাল সোমবার আয়োজিত বাজেট-উত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে বিএমবিএর নেতারা এসব দাবি ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএমবিএর সভাপতি আরিফ খান। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, সদস্য মোহাম্মদ এ হাফিজ ও আহসান উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরিফ খান বলেন, পুঁজিবাজারের সুষুম অবস্থা বজায় রাখতে মার্চেন্ট ব্যাংকের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু বাজেটে মূলধনি মুনাফার ওপর যে হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। এতে বাজারের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, সরকার তাঁদের বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বাড়বে। এর ফলে বাজারের অস্থিতিশীলতাও কমবে।
বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউসে এক লাখ টাকা লেনদেনের ওপর ২৫ টাকা বা ০.০২৫ শতাংশ হারে উৎসে আয়কর নেওয়া হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তা চার গুণ বাড়িয়ে লাখে ১০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আরিফ খান বলেন, বিষয়টি বহাল থাকলে বাজারের অগ্রগতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে উৎসে করের হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোম্পানির শেয়ারের অভিহিত মূল্যের অতিরিক্ত বা প্রিমিয়ামের ওপর ৩ শতাংশ হারে কর আরোপের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে। বলা হয়, এর ফলে নতুন কোম্পানি বাজারে আসতে নিরুৎসাহিত হবে। কারণ, প্রিমিয়ামের টাকা কোম্পানির মুনাফা নয়, মূলধনের অংশ। আর মূলধনের ওপর করারোপ করা যায় না।
No comments