বর্ষপূর্তি বিশেষ: গ্লোবাল ফোর্থ এস্টেট কিংবা সাংবাদিকতার নতুন যুগ by বাধন অধিকারী
শাসকশ্রেণির
মতাদর্শ প্রচারের স্বার্থ থেকে উৎপত্তি হলেও বিকাশের একপর্যায়ে এসে
সংবাদমাধ্যম স্বীকৃত হয়েছে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ফোর্থ এস্টেট (চতুর্থ
স্তম্ভ) হিসেবে। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সরকারের তিনটি বিভাগের (আইন,
বিচার ও নির্বাহী বিভাগ) প্রতি ওয়াচ ডগের ভূমিকা পালনকারী হিসেবে দেখা হয়
সংবাদমাধ্যমকে। সে হিসেবে সংবাদমাধ্যমের ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক এলিটদের
বিপরীতে সাধারণ মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কথা। তবে আদতেও কি তা হয়? হয়
না। নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড হারম্যান তাদের ‘ম্যানুফ্যাকচারিং কনসেন্ট: দ্য
পলিটিক্যাল ইকোনমি অব ম্যাস মিডিয়া’ বইতে করপোরেট সংবাদমাধ্যমের চরিত্র
উন্মোচন করেছিলেন। মুনাফাভোগী সংবাদমাধ্যমগুলো কীভাবে স্ব-আরোপিত
সেন্সরশিপের মধ্য দিয়ে শাসকশ্রেণির পক্ষে ভূমিকা পালন করে তা দেখিয়েছিলেন
প্রচারণা মডেলের মধ্য দিয়ে। সব দেশেই সংবাদমাধ্যমের ‘ফোর্থ এস্টেট’ ভূমিকা
তাই প্রশ্নবিদ্ধ। স্বতন্ত্র ও ওয়াচডগ স্টেট/স্তম্ভ হিসেবে নয়, রাষ্ট্রের আর
তিনটি স্তম্ভের মতো করেই সংবাদমাধ্যমকে তাই রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবেই
অবতীর্ণ হতে দেখা যায়।
ইরাক যুদ্ধের কালে আমরা দেখতে বাধ্য হয়েছি ‘এমবেডেড জার্নালিজম’র নামে কী করে সাংবাদিকতা ক্ষমতাশালী মার্কিন রাষ্ট্র ও মিলিটারি করপোরেশনের ‘রক্ষিতা’য় রূপান্তরিত হয়েছিল। অবজারভার পত্রিকা ২০০৩ সালে হিসাব কষে দেখিয়েছিল ইরাক যুদ্ধের কাভারেজ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার মুনাফার পরিকল্পনা করেছে রয়টার্স। লন্ডনভিত্তিক নিউ স্টেটসম্যান পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে সাংবাদিক জন পিলজার পরিসংখ্যান হাজির করেছিলেন, ইরাক যুদ্ধের সময় বিবিসি’র যুদ্ধবিরোধী কাভারেজের হার ছিল ২ শতাংশ। গার্ডিয়ান পত্রিকার তথ্যানুসারে, ১৯৯১ সালে বিবিসি তার সংবাদকর্মীদের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর ছবি দেখানোর ব্যাপারে ‘সতর্ক’ থাকতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিছুদিন পরেই ১৯৯১ সালের ক্রিসমাসের আগে লন্ডনের মেডিক্যাল এডুকেশন ট্রাস্ট জানায়, ‘নিখুঁঁত আঘাত’ এবং এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় দুই লাখেরও বেশি ইরাকি নারী-পুরুষ-শিশু মারা গেছে। এই চরম সত্য সংক্রান্ত একটি সংবাদও বিবিসি প্রচার করেনি। কমবেশি সেই এমবেডেড বাস্তবতার মধ্যেই আমাদের মূলধারার সাংবাদিকতা ঘুরপাক খাচ্ছে এখনও।
ইরাক যুদ্ধ নিয়ে উইকিলিকস-এর ভূমিকা ছিল অনন্য। ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস করা গোপন নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরও ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়। অ্যাসাঞ্জ নথি ফাঁসের পর এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেই বলেছিলেন, ইরাক যুদ্ধের আগে থেকেই যে সত্য আড়ালের প্রচেষ্টা চলছে, দলিল ফাঁস করে দিয়ে সেই সত্যটিকেই মানুষের সামনে আনা হয়েছে। উইকিলিকস-এ মার্কিন সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিং কর্তৃক ফাঁস করে দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে শত শত বেসামরিক নাগরিক হত্যা করেছে। ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে ছিল একটি ভিডিও, যেখানে দেখা গেছে, ইরাকের বাগদাদে মার্কিন হেলিকপ্টার থেকে চালানো হামলায় কীভাবে বেসামরিক নাগরিকদের মরতে হয়েছে। ভিডিওতে একটি কণ্ঠকে বলতে শোনা গেছে, ‘সবাইকে জ্বালিয়ে দাও’। উইকিলিকস-এর উন্মোচন ছাড়া এসব কি আমরা জানতে পারতাম, ‘রক্ষিতা সাংবাদিকতা’র মধ্য দিয়ে?
করপোরেট সংবাদমাধ্যম সংবাদ নির্মাণে তার নিজস্ব মুনাফামুখীন দৃষ্টিভঙ্গি আর সামগ্রিক নব্য উদারবাদী বাজার ব্যবস্থার পক্ষে যে নিত্য প্রচারণা জারি রেখেছে একটি ক্রম-কর্তৃত্বতান্ত্রিক কর্তৃপক্ষীয় ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে, অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস তার বিপরীতে জনগণের মিডিয়া আকারে হাজির হওয়া এক অনন্য সংবাদপ্রতিষ্ঠান, যেখানে সংবাদসূত্র হতে পারেন বিশ্বের যে কেউ। আর নয়া যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধাকে সঙ্গে নিয়ে বৃহৎ পুঁজির কারবার না হওয়ার কারণে, আরও নির্দিষ্ট করে বললে করপোরেট মিডিয়ার মতো মুনাফামুখীন দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে থাকার কারণে উইকিলিকস-এর কোনও স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপের মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। সে কারণে করপোরেট মিডিয়া যেখানে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের নামে রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গে রূপান্তরিত হয়েছে, উইকিলিকস সেখানে আবির্ভূত হয়েছে ‘গ্লোবাল ফোর্থ এস্টেট হিসেবে’।
গ্লোবাল ফোর্থ এস্টেট বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে কথিত জাতীয় স্বার্থের বিরোধাত্মক সম্পর্কের প্রশ্ন। রাষ্ট্রপরিচালনাকারী ক্ষমতাশালীদের পক্ষ থেকে জাতীয় স্বার্থ আর জনস্বার্থকে এক করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। জাতীয় স্বার্থের অজুহাতেই জনগণের কাছ থেকে গোপন করা হয় জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তবে রাষ্ট্র যদি জনগণের হয়, জনগণ যদি রাষ্ট্রের মালিক হয়, তাহলে তাদের কাছে থেকে তথ্য গোপন করার নাম জাতীয় স্বার্থ হতে পারে কি? এই প্রশ্ন থেকেই উইকিলিকস-এর সাংবাদিকতার সূচনা। এই প্রশ্ন থেকেই উইকিলিকস-এর স্লোগান ‘উই ওপেন গভর্নমেন্ট। কথিত জনস্বার্থের বিপরীতে জনগণের স্বার্থকে সামনে এনে উইকিলিকস আমাদের সামনে নতুন দিনের সাংবাদিকতার নিশানা হয়ে হাজির হয়। জাতীয় স্বার্থের নামে সংঘটিত ইরাক আগ্রাসন, যুদ্ধবাজ অর্থনীতি, ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’র পেছনের রাজনীতিকে উন্মোচন করে অভাবনীয় সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে।
অগ্রসর প্রযুক্তির যুগে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ হিসেবে উইকিলিকস-এর কারিগরেরা এমন একটি যোগাযোগ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যেখানে কোনও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী প্রযুক্তি দক্ষতায় পৌঁছাতে পারে না। কে উইকিলিকসকে তথ্য দিলো, তা আজও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বের করা যায়নি। উইকিলিকস তার সংবাদসূত্রের শতভাগ গোপনীয়তা নিশ্চিত করে কোনও ধরনের সেন্সরশিপ ও তথ্যগত সম্পাদনা ছাড়া জনসম্মুখে হাজির করে। ইতিহাসকে তারা ‘অতীত’ থেকে টেনে বের করে বর্তমানে স্থাপিত করেছে। সত্যিকারের সাংবাদিকতার অপরাধেই যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র-ডেনমার্ক-ইকুয়েডরের বিচারিক সন্ত্রাসের বলি হচ্ছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের মধ্য দিয়ে হ্যাকিং ও গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে বিচারিক হত্যাকান্ডের মুখোমুখি করতে তৎপর ক্ষমতাশালীরা। তার সুরক্ষার প্রশ্ন আজ সাংবাদিকতার সুরক্ষার প্রশ্ন হিসেবে হাজির হয়েছে।
ইরাক যুদ্ধের কালে আমরা দেখতে বাধ্য হয়েছি ‘এমবেডেড জার্নালিজম’র নামে কী করে সাংবাদিকতা ক্ষমতাশালী মার্কিন রাষ্ট্র ও মিলিটারি করপোরেশনের ‘রক্ষিতা’য় রূপান্তরিত হয়েছিল। অবজারভার পত্রিকা ২০০৩ সালে হিসাব কষে দেখিয়েছিল ইরাক যুদ্ধের কাভারেজ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার মুনাফার পরিকল্পনা করেছে রয়টার্স। লন্ডনভিত্তিক নিউ স্টেটসম্যান পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে সাংবাদিক জন পিলজার পরিসংখ্যান হাজির করেছিলেন, ইরাক যুদ্ধের সময় বিবিসি’র যুদ্ধবিরোধী কাভারেজের হার ছিল ২ শতাংশ। গার্ডিয়ান পত্রিকার তথ্যানুসারে, ১৯৯১ সালে বিবিসি তার সংবাদকর্মীদের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর ছবি দেখানোর ব্যাপারে ‘সতর্ক’ থাকতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিছুদিন পরেই ১৯৯১ সালের ক্রিসমাসের আগে লন্ডনের মেডিক্যাল এডুকেশন ট্রাস্ট জানায়, ‘নিখুঁঁত আঘাত’ এবং এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় দুই লাখেরও বেশি ইরাকি নারী-পুরুষ-শিশু মারা গেছে। এই চরম সত্য সংক্রান্ত একটি সংবাদও বিবিসি প্রচার করেনি। কমবেশি সেই এমবেডেড বাস্তবতার মধ্যেই আমাদের মূলধারার সাংবাদিকতা ঘুরপাক খাচ্ছে এখনও।
ইরাক যুদ্ধ নিয়ে উইকিলিকস-এর ভূমিকা ছিল অনন্য। ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস করা গোপন নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরও ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়। অ্যাসাঞ্জ নথি ফাঁসের পর এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেই বলেছিলেন, ইরাক যুদ্ধের আগে থেকেই যে সত্য আড়ালের প্রচেষ্টা চলছে, দলিল ফাঁস করে দিয়ে সেই সত্যটিকেই মানুষের সামনে আনা হয়েছে। উইকিলিকস-এ মার্কিন সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিং কর্তৃক ফাঁস করে দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে শত শত বেসামরিক নাগরিক হত্যা করেছে। ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে ছিল একটি ভিডিও, যেখানে দেখা গেছে, ইরাকের বাগদাদে মার্কিন হেলিকপ্টার থেকে চালানো হামলায় কীভাবে বেসামরিক নাগরিকদের মরতে হয়েছে। ভিডিওতে একটি কণ্ঠকে বলতে শোনা গেছে, ‘সবাইকে জ্বালিয়ে দাও’। উইকিলিকস-এর উন্মোচন ছাড়া এসব কি আমরা জানতে পারতাম, ‘রক্ষিতা সাংবাদিকতা’র মধ্য দিয়ে?
করপোরেট সংবাদমাধ্যম সংবাদ নির্মাণে তার নিজস্ব মুনাফামুখীন দৃষ্টিভঙ্গি আর সামগ্রিক নব্য উদারবাদী বাজার ব্যবস্থার পক্ষে যে নিত্য প্রচারণা জারি রেখেছে একটি ক্রম-কর্তৃত্বতান্ত্রিক কর্তৃপক্ষীয় ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে, অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস তার বিপরীতে জনগণের মিডিয়া আকারে হাজির হওয়া এক অনন্য সংবাদপ্রতিষ্ঠান, যেখানে সংবাদসূত্র হতে পারেন বিশ্বের যে কেউ। আর নয়া যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধাকে সঙ্গে নিয়ে বৃহৎ পুঁজির কারবার না হওয়ার কারণে, আরও নির্দিষ্ট করে বললে করপোরেট মিডিয়ার মতো মুনাফামুখীন দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে থাকার কারণে উইকিলিকস-এর কোনও স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপের মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। সে কারণে করপোরেট মিডিয়া যেখানে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের নামে রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গে রূপান্তরিত হয়েছে, উইকিলিকস সেখানে আবির্ভূত হয়েছে ‘গ্লোবাল ফোর্থ এস্টেট হিসেবে’।
গ্লোবাল ফোর্থ এস্টেট বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে কথিত জাতীয় স্বার্থের বিরোধাত্মক সম্পর্কের প্রশ্ন। রাষ্ট্রপরিচালনাকারী ক্ষমতাশালীদের পক্ষ থেকে জাতীয় স্বার্থ আর জনস্বার্থকে এক করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। জাতীয় স্বার্থের অজুহাতেই জনগণের কাছ থেকে গোপন করা হয় জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তবে রাষ্ট্র যদি জনগণের হয়, জনগণ যদি রাষ্ট্রের মালিক হয়, তাহলে তাদের কাছে থেকে তথ্য গোপন করার নাম জাতীয় স্বার্থ হতে পারে কি? এই প্রশ্ন থেকেই উইকিলিকস-এর সাংবাদিকতার সূচনা। এই প্রশ্ন থেকেই উইকিলিকস-এর স্লোগান ‘উই ওপেন গভর্নমেন্ট। কথিত জনস্বার্থের বিপরীতে জনগণের স্বার্থকে সামনে এনে উইকিলিকস আমাদের সামনে নতুন দিনের সাংবাদিকতার নিশানা হয়ে হাজির হয়। জাতীয় স্বার্থের নামে সংঘটিত ইরাক আগ্রাসন, যুদ্ধবাজ অর্থনীতি, ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’র পেছনের রাজনীতিকে উন্মোচন করে অভাবনীয় সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে।
অগ্রসর প্রযুক্তির যুগে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ হিসেবে উইকিলিকস-এর কারিগরেরা এমন একটি যোগাযোগ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যেখানে কোনও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী প্রযুক্তি দক্ষতায় পৌঁছাতে পারে না। কে উইকিলিকসকে তথ্য দিলো, তা আজও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বের করা যায়নি। উইকিলিকস তার সংবাদসূত্রের শতভাগ গোপনীয়তা নিশ্চিত করে কোনও ধরনের সেন্সরশিপ ও তথ্যগত সম্পাদনা ছাড়া জনসম্মুখে হাজির করে। ইতিহাসকে তারা ‘অতীত’ থেকে টেনে বের করে বর্তমানে স্থাপিত করেছে। সত্যিকারের সাংবাদিকতার অপরাধেই যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র-ডেনমার্ক-ইকুয়েডরের বিচারিক সন্ত্রাসের বলি হচ্ছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের মধ্য দিয়ে হ্যাকিং ও গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে বিচারিক হত্যাকান্ডের মুখোমুখি করতে তৎপর ক্ষমতাশালীরা। তার সুরক্ষার প্রশ্ন আজ সাংবাদিকতার সুরক্ষার প্রশ্ন হিসেবে হাজির হয়েছে।
No comments