চলে গেলেন ম্যান্ডেলার সহযোগী কাথরাদা
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তিপ্রতিম নেতা প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলার সহযোগী আহমেদ কাথরাদা গতকাল মঙ্গলবার মারা গেছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের যে কারাগারে দীর্ঘদিন বন্দী ছিলেন, সেখানে কাথরাদাও ১৮ বছর আটক ছিলেন। ম্যান্ডেলার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) নেতা আহমেদ কাথরাদার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার একজন কড়া সমালোচক ছিলেন। দেশটির বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু সরকারের শাসনামলে কাথরাদা দীর্ঘ মোট ২৬ বছর কারাগারে কাটান। জনপ্রিয় এই নেতা ‘আংকল ক্যাথি’ নামেও পরিচিত ছিলেন। কাথরাদার প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁকে এই মাসের শুরুতে জোহানেসবার্গের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় কাথরাদার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। স্থানীয় সময় গতকাল ভোর ছয়টায় তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে ফাউন্ডেশন। প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা জানান, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কাথরাদাকে শেষবিদায় জানানো হবে। এর আগ পর্যন্ত তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার শান্তিতে নোবেলজয়ী ধর্মযাজক ডেসমন্ড টুটু বলেন,
দেশটির দীর্ঘ বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কাথরাদা দারুণ সহায়তা করেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন টুটু। কাথরাদার মা-বাবা ভারত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের সুইজার-রেনেক শহরে ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়সে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন কাথরাদা। তখন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ কমিউনিস্ট লীগের কর্মী হিসেবে প্রচারপত্র বিলি করতেন। ১৯৬৪ সালে ম্যান্ডেলাসহ বর্ণবাদবিরোধী শীর্ষস্থানীয় সাতজন নেতার সঙ্গে কাথরাদাও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। রোবেন দ্বীপের কারাগারে ১৮ বছর ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮২ সালে তাঁকে পোলসমোর কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ১৯৮৯ সালে তিনি মুক্তি পান। বেশ কিছু কেলেঙ্কারির কারণে জ্যাকব জুমার সমালোচনা করে গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে কাথরাদা তাঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
No comments