ঝালকাঠিতে শিক্ষকের হাত-পা ভেঙে দিয়েছেন আ’লীগ নেতা
ঝালকাঠিতে
এক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে
দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সদর উপজেলা
চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খানের বিরুদ্ধে। এই সময় দুই নারীসহ আরও তিনজনকে
পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। সদর উপজেলার রামনগর বালুর মাঠ ও কীর্তিপাশা বাজারে
সোমবার রাত ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষকের নাম আবদুল লতিফ
মিয়া। তিনি গোবিন্দ ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অন্যরা
হলেন-কীর্তিপাশা বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাস, তার বোন রীনা দাস ও ভাবী
অঞ্জনা দাস। এদের মধ্যে দুই নারীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এবং আবদুল লতিফ
মাস্টার ও উত্তম দাসকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি
করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হামলায় লতিফ মাস্টারের হাত ও পায়ের হাড়
ভেঙে গেছে। উত্তম দাসের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। তবে
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান হোসেন। আহত ও
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রমানাথপুর স্কুলের কমিটি গঠন নিয়ে
বিরোধের জেরে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের রোনালসে রোড থেকে আবদুল লতিফ
মিয়াকে নিজের গাড়িতে করে নিয়ে যান সুলতান হোসেন খান ও তার লোকজন। লতিফ
মাস্টারকে রামনগর পুলিশ বক্সের সামনে একটি বালুর মাঠে নিয়ে হকিস্টিক ও লাঠি
দিয়ে বেধড়ক পেটান সুলতান এবং তার ক্যাডার হিসেবে পরিচিত রুবেল, মিলন,
বাশার ও জুয়েল গং। এতে তার হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে যায়। আহতাবস্থায় শিক্ষককে
গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কীর্তিপাশা বাজারে।
রাত ১০টার দিকে সেখানে গিয়ে
বাজারের ব্যবসায়ী উত্তম দাসকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টেনেহিঁচড়ে বের
করে হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন সুলতান ও তার লোকজন। উত্তম দাসের
চিৎকার শুনে বাজারের পাশেই তার বাড়ি থেকে ছুটে আসেন বোন রীনা দাস ও ভাবী
অঞ্জনা দাস। এ সময় তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে আহতদের নিজের গাড়িতে
করে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে যান সুলতান। পুলিশ আহতদেরকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে
পাঠায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুলতান হোসেন
খানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এরই মধ্যে প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়েছেন জেলা
আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আরিফ খান। তাই আরিফ খানের পক্ষের লোকজনকে দমনে
মাঠে নেমেছেন সুলতান। এরই জেরে শিক্ষক আবদুল লতিফ মিয়া ও ব্যবসায়ী উত্তম
দাসের সঙ্গে সুলতানের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি রমানাথপুর স্কুল কমিটির
নির্বাচন নিয়ে এ বিরোধ আরও চাঙ্গা হয়। আহত লতিফ মিয়া বলেন, আমরা চেয়েছি
রমানাথপুর স্কুলে ভোটের মাধ্যমে কমিটি হোক। সুলতান চাইছেন তার পছন্দের
প্রার্থীকে বিনা ভোটে সভাপতি ঘোষণা করতে। এ কারণেই আমাদের ওপর এ হামলা।
অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান
বলেন, আমি কাউকে মারধর করেনি। আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলেন লতিফ
মাস্টার ও উত্তম। এ খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাদের ওপর হামলা
চালিয়েছে বলে বলে শুনেছি।
No comments