বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে ‘আকাশে দেয়াল’ তুলবেন ট্রাম্প!
বৈশ্বিক
উষ্ণতা রোধে ‘আকাশে দেয়াল’ তৈরির বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়েছেন মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পদ্ধতিতে সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে
পৃথিবীতে আনা হবে। ক্ষতিকর কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানি
প্রকল্প চালু রাখতেই এই প্রকল্প বেছে নেয়া হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানীরা এই
প্রকল্পকে পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক বলে আখ্যা দিয়েছেন। এদিকে সাবেক মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দূষণবিরোধী পরিচ্ছন্ন জ্বালানি পরিকল্পনা ‘ক্লিন
পাওয়ার প্ল্যান’ বাতিল করে নতুন একটি নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন
ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ওই আদেশে স্বাক্ষর করতে পারেন তিনি। খবর
বিবিসি ও ইনডিপেনডেন্টের। মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন,
শিল্পকারখানা চালু রাখার সহজলভ্য উপায় কয়লা ও তেলভিত্তিক প্রকল্প কিংবা
জীবাশ্ম জ্বালানি। তবে জীবাশ্ম জ্বালানিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য
দায়ী মনে করা হয়। এ অবস্থায় বায়ুমণ্ডলের সুরক্ষা ও বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে
আকাশে দেয়াল তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে শূন্যে বিশেষ কায়দায়
বিশুদ্ধ পানির কণা ছিটিয়ে দেয়া হবে। একই সঙ্গে দূষণ প্রতিরোধক নানারকম
পদার্থ যেমন- সালফার ডাই-অক্সাইড উচ্চস্থানে বেলুনের সাহায্যে ছড়িয়ে দেয়া
হবে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা ‘জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং’। এতে পরিবেশের আরও
ক্ষতি হবে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড কেইথের নেতৃত্বে একদল
বিজ্ঞানী এই তথাকথিত আকাশে দেয়াল তৈরি বিষয়ে আগামী বছর পরীক্ষামূলক প্রকল্প
শুরু করতে যাচ্ছেন। গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘ গৃহীত কনভেনশন অনুযায়ী, প্রকৃতির
বিরুদ্ধে জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং করা উচিত হবে না। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক
ওবামা প্রশাসনের নেয়া পরিকল্পনা বাতিলে নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন নির্বাহী আদেশে ‘ক্লিন পাওয়ার
প্ল্যান’ বাতিল করা হচ্ছে যেটি অঙ্গরাজ্যগুলোকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির
প্রধান নিয়ামক কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাধ্য করত। নতুন নির্বাহী আদেশে পরিবেশ
সংরক্ষণ এজেন্সির অর্থ বরাদ্দও কমানো হবে।
তেল, গ্যাস ও কয়লা উৎপাদন
নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করে দেখা হবে। ট্রাম্প নির্বাচনের সময়
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কার্বন নিঃসরণবিরোধী ‘গ্রিন রুল’গুলো বাতিল করবেন।
কারণ তার মতে, এই আইনগুলো অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। নির্বাচনী প্রচারণার সময়
ট্রাম্প বলেছিলেন ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষর করা বৈশ্বিক
উষ্ণতা নিরসন চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবেন। হোয়াইট
হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন নীতিমালায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎকে কম দামে ও
নির্ভরযোগ্য উপায়ে সরবরাহ করা যাবে, যার মাধ্যমে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে
এবং নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে। তবে পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ও
সংস্থাগুলো বলেছে, এই নীতিমালা কার্যকর হলে দেশে ও বিদেশে মারাত্মক
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির
(ইপিএ) নতুন প্রধান স্কট প্র“ইট টেলিভিশন চ্যানেল এবিসির সাপ্তাহিক
অনুষ্ঠান ‘দিস উইকে’ বলেন, কয়লানির্ভর কর্মসংস্থান ফিরিয়ে আনতে ওবামার ২০১৫
সালের পরিচ্ছন্ন জ্বালানি পরিকল্পনা বাতিল করা হবে।
No comments