এমন যদি হতো! by সোহেল অটল
একটি পুরনো কৌতুক বলি।
এয়ারফোর্সের হেলিকপ্টারে দেশের তিন প্রধান রাজনীতিবিদ উঠেছেন। তিনজনই স্বনামধন্য। ধরলাম তাদের নাম যথাক্রমে ক, খ ও গ। পাইলট কো-পাইলটকে সাথে নিয়ে তিন রাষ্ট্রনেতাকে দেশ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন।
হেলিকপ্টার যখন ক-এর নির্বাচনী এলাকার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, ক এক শ’টা ১০ টাকার নোট নিচে ফেলে দিলেন। তা দেখে খ চেঁচিয়ে উঠলেন, করলেন কী? এতগুলো টাকা নষ্ট করে ফেললেন?
ক মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, আমার এলাকার এক শ’জন মানুষকে খুশি করলাম।
এরপর হেলিকপ্টার যখন খ-এর নির্বাচনী এলাকার ওপর দিয়ে উড়ছিলÑ খ তখন ১০ টাকার পাঁচ শ’টা নোট নিচে ফেলে দিলেন। আর মুচকি হেসে বললেনÑ আমার এলাকার পাঁচ শ’জন মানুষকে খুশি করলাম। শেষে হেলিকপ্টার গেল গ-এর নির্বাচনী এলাকায়। আকাশ থেকে ১০ টাকার এক হাজার নোট ছেড়ে দিয়ে গোঁফে হাত দিলেন গÑ আমার এলাকার এক হাজার মানুষকে খুশি করলাম! তিনজনের মুখেই তৃপ্তির হাসি।
দেশ ঘোরা শেষে পাইলট তিন রাজনীতিবিদকে নিয়ে গেলেন বঙ্গোপসাগর দেখাতে। সাগরের উত্তাল অংশে গিয়ে হেলিকপ্টার কাত করে তিন রাজনীতিবিদকে দিলেন ফেলে। কো-পাইলট চিৎকার দিয়ে উঠলÑ হায় হায়, করলেন কী ওস্তাদ!
পাইলট মুচকি হেসে জবাব দিলেনÑ দেশের সব মানুষকে খুশি করলাম!
কৌতুক কৌতুকই। নেহায়েত রস তৈরির খাতিরে কৌতুক বানানো হয়। তাই বলে কৌতুক বানানোর পেছনে বাস্তবের কোনো সূত্র থাকে না, তা নয়। বাস্তবের সূত্র ধরেই কৌতুক বানানো হয়। ওপরের কৌতুক দিয়ে বোঝানো হচ্ছেÑ এই তিন রাজনীতিবিদের ওপর দেশের সব মানুষ চরম বিরক্ত। তারা না থাকলেই বরং জনগণ খুশি হয়।
আসলেও কি তাই? কৌতুকের ব্যাপারটা আমাদের দেশের বিবেচনায় তুলনা করি। সে ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়ার কথা বাদই দিলাম। হুমু এরশাদও যদি না থাকেন, তবুও দেশের অনেক মানুষই হা-হুতাশ করবে তার জন্য। অনেকেই নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেবে। বড় বড় পোস্টার-ব্যানারে তাকে নিয়ে স্মরণসভা হবে। টকশোর আলোচনায় অনেকেই রুমাল দিয়ে চোখ মুছবেন আর বলবেনÑ তিনি বড় ভালো লোক ছিলেন! শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়া তো হুমু এরশাদের তুলনায় অসংখ্যগুণ অপরিহার্য। দেশের জন্য, দলীয় কর্মীদের জন্য।
কৌতুকের উপসংহার যতই নির্মম হোক, এই তিন নেতার একসাথে হেলিকপ্টার ভ্রমণের ব্যাপারটা কিন্তু ইতিবাচক। সত্যিই যদি তারা তিনজন মিলে একসাথে দেশ ভ্রমণে বের হতেন! আমাদের পাওয়ার শেষ থাকত না।
একসাথে হেলিকপ্টারে না ঘুরলেও ফিবছর ঈদ এলে আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে সৌহার্দ্যচেতন বেড়ে ওঠে। শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। খালেদা জিয়া সেটা গ্রহণ করেন এবং ফিরতি শুভেচ্ছাও জানান। এসব যতই লোক দেখানো শুভেচ্ছা হোক, দেশনেতাদের দেখাদেখি এই সৌহার্দ্য সাধারণের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। এটা নিশ্চয়ই ইতিবাচক।
এয়ারফোর্সের হেলিকপ্টারে দেশের তিন প্রধান রাজনীতিবিদ উঠেছেন। তিনজনই স্বনামধন্য। ধরলাম তাদের নাম যথাক্রমে ক, খ ও গ। পাইলট কো-পাইলটকে সাথে নিয়ে তিন রাষ্ট্রনেতাকে দেশ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন।
হেলিকপ্টার যখন ক-এর নির্বাচনী এলাকার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল, ক এক শ’টা ১০ টাকার নোট নিচে ফেলে দিলেন। তা দেখে খ চেঁচিয়ে উঠলেন, করলেন কী? এতগুলো টাকা নষ্ট করে ফেললেন?
ক মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, আমার এলাকার এক শ’জন মানুষকে খুশি করলাম।
এরপর হেলিকপ্টার যখন খ-এর নির্বাচনী এলাকার ওপর দিয়ে উড়ছিলÑ খ তখন ১০ টাকার পাঁচ শ’টা নোট নিচে ফেলে দিলেন। আর মুচকি হেসে বললেনÑ আমার এলাকার পাঁচ শ’জন মানুষকে খুশি করলাম। শেষে হেলিকপ্টার গেল গ-এর নির্বাচনী এলাকায়। আকাশ থেকে ১০ টাকার এক হাজার নোট ছেড়ে দিয়ে গোঁফে হাত দিলেন গÑ আমার এলাকার এক হাজার মানুষকে খুশি করলাম! তিনজনের মুখেই তৃপ্তির হাসি।
দেশ ঘোরা শেষে পাইলট তিন রাজনীতিবিদকে নিয়ে গেলেন বঙ্গোপসাগর দেখাতে। সাগরের উত্তাল অংশে গিয়ে হেলিকপ্টার কাত করে তিন রাজনীতিবিদকে দিলেন ফেলে। কো-পাইলট চিৎকার দিয়ে উঠলÑ হায় হায়, করলেন কী ওস্তাদ!
পাইলট মুচকি হেসে জবাব দিলেনÑ দেশের সব মানুষকে খুশি করলাম!
কৌতুক কৌতুকই। নেহায়েত রস তৈরির খাতিরে কৌতুক বানানো হয়। তাই বলে কৌতুক বানানোর পেছনে বাস্তবের কোনো সূত্র থাকে না, তা নয়। বাস্তবের সূত্র ধরেই কৌতুক বানানো হয়। ওপরের কৌতুক দিয়ে বোঝানো হচ্ছেÑ এই তিন রাজনীতিবিদের ওপর দেশের সব মানুষ চরম বিরক্ত। তারা না থাকলেই বরং জনগণ খুশি হয়।
আসলেও কি তাই? কৌতুকের ব্যাপারটা আমাদের দেশের বিবেচনায় তুলনা করি। সে ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়ার কথা বাদই দিলাম। হুমু এরশাদও যদি না থাকেন, তবুও দেশের অনেক মানুষই হা-হুতাশ করবে তার জন্য। অনেকেই নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেবে। বড় বড় পোস্টার-ব্যানারে তাকে নিয়ে স্মরণসভা হবে। টকশোর আলোচনায় অনেকেই রুমাল দিয়ে চোখ মুছবেন আর বলবেনÑ তিনি বড় ভালো লোক ছিলেন! শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়া তো হুমু এরশাদের তুলনায় অসংখ্যগুণ অপরিহার্য। দেশের জন্য, দলীয় কর্মীদের জন্য।
কৌতুকের উপসংহার যতই নির্মম হোক, এই তিন নেতার একসাথে হেলিকপ্টার ভ্রমণের ব্যাপারটা কিন্তু ইতিবাচক। সত্যিই যদি তারা তিনজন মিলে একসাথে দেশ ভ্রমণে বের হতেন! আমাদের পাওয়ার শেষ থাকত না।
একসাথে হেলিকপ্টারে না ঘুরলেও ফিবছর ঈদ এলে আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে সৌহার্দ্যচেতন বেড়ে ওঠে। শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। খালেদা জিয়া সেটা গ্রহণ করেন এবং ফিরতি শুভেচ্ছাও জানান। এসব যতই লোক দেখানো শুভেচ্ছা হোক, দেশনেতাদের দেখাদেখি এই সৌহার্দ্য সাধারণের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। এটা নিশ্চয়ই ইতিবাচক।
সভা-সেমিনারে আমাদের দুই রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়া অনবরত একে অপরের খুঁত ধরার চেষ্টা করেন। নানান বাক্যবাণে একে অপরকে আঘাত করেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন এমন যদি দেখা যায়Ñ তারা একে অন্যের প্রশংসা করছেন! জনসভায় খালেদা জিয়া বলছেনÑ ‘হ্যাঁ, হাসিনা তো আমার ছোট বোনের মতো। পলিটিক্সটাও ও ভালো বোঝে। আমার সময় আইনশৃঙ্খলার যে বাজে অবস্থা ছিল, তা এখন নেই। হাসিনা দেশটা ভালোই চালাচ্ছে। ও আরো কয়েক বছর ক্ষমতায় থাকুক। ও থাকা আর আমি থাকা তো একই কথা! ছোট বোন না!’
কিংবা শেখ হাসিনা বলছেনÑ ‘খালেদা আপার রান্নার হাত মাশাআল্লাহ! গত শুক্রবার গেছিলাম ওনার বাসায়। সরিষাবাটা দিয়ে ইলিশ রান্না করেছিলেন। উহ,স্বাদটা এখনো জিহ্বায় লেগে আছে। আর ভাবছি, এবার ক্ষমতাটা ওনার হাতে ছেড়ে দেবো। উনি মুরব্বি মানুষ, আর আমিও টানা কয়েক বছর ক্ষমতায় থাকলাম। বোরিং লাগছে এখন!’
হা হা হা। আমাদের দুই নেত্রী যদি এসবও করেন, তাও কৌতুকই মনে হবে সাধারণের কাছে। কারণ, সাধারণ মানুষ খুব ভালো করেই জানেÑ তেলে আর জলে মিশ খায় না। আর রাজনীতিবিদদের কাছে অতটা ভালো আচরণ সাধারণ মানুষ আশাও করে না। আশা করার মতো বিশ্বস্ততা রাজনীতিবিদেরা অর্জন করতে পারেননি।
শুরুর কৌতুকের একটা লেজ আছে। সেটা বলে শেষ করি।
তো, বঙ্গোপসাগরে পড়ে তিন রাষ্ট্রনেতা কোনো রকমে ঢেউয়ের বাড়ি খেতে খেতে কূলে উঠলেন। এরপর বেহুঁশ হয়ে তীরে পড়ে থাকলেন। দীর্ঘক্ষণ পর ক ও খ হুঁশ ফিরলে দেখলেনÑ এক জেলে গ-কে কবর দেয়ার চেষ্টা করছে! কিন্তু গ তখনো জীবিত! দু’জন আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠলেনÑ এই করো কী? উনি তো মরেননি!
থতমত খেয়ে জেলে উত্তর দিলোÑ মরেন নাই? ক্যামনে বিশ্বাস করি! রাজনীতিবিদদের কোনো বিশ্বাস নেই!
No comments