গাছ কাটা অনুমোদন-উন্নয়নের স্বার্থে সামান্য ছাড়
সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা_এমন সংবাদ শিরোনাম দেখে চমকে ওঠা অস্বাভাবিক নয়; কিন্তু পুরো সংবাদ পড়লে আশ্বস্ত হওয়া যায় যে, সবুজের সামান্য ক্ষতি আসলে সড়ক প্রশস্তকরণের স্বার্থে।
গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সংরক্ষিত শালবনের ওই গাছগুলো কাটা ছাড়া উপায় নেই। আমরা নিঃসন্দেহে যে কোনো ধরনের বিসবুজীকরণের বিপক্ষে। আমরা জানি, জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিপদ আমাদের সামনে এগিয়ে আসছে, তা মোকাবেলায় আরও গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। এও অজানা নয় যে, একটি দেশে ভূমির যে অনুপাতে বনাঞ্চল থাকতে হয়, আমরা তা থেকে পিছিয়ে আছি। সেই বিবেচনাতেই ২০১৫ সাল পর্যন্ত কোনো ধরনের গাছ না কাটার নীতিমালা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু উন্নয়ন ও জনস্বার্থও দেখতে হয় বৈকি। গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে সম্প্রসারণের জন্য কাজটি সেদিক থেকে অনিবার্য বাস্তবতা। সড়কের সংকীর্ণতার কারণে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ-বিড়ম্বনা ক্রমেই বাড়ছে। মন্ত্রিসভা সাধুবাদ পেতে পারে এই জন্য যে, একই বৈঠক থেকে সমপরিমাণ গাছ রোপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, সড়ক সম্প্রসারণে প্রয়োজনের বেশি একটি গাছও কাটা পড়বে না। এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতাই কাম্য। এ ধরনের প্রকল্পে একটার নামে দশটা গাছ কেটে বারো ভূতের ভোজে লাগানোর নজির আমাদের দেশে কম নয়। এ ক্ষেত্রে আমরা এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। পরিবেশগত স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় পরিবেশ ও বন এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিষয়টি সরাসরি তদারক করতে পারেন। মন্ত্রীদ্বয়ের উপস্থিতিও আমাদের বাড়তি স্বস্তি জোগাবে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোও এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে আশা করা যায়। কাটা বৃক্ষের ক্ষতিপূরণে যেসব চারা রোপণের সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা নিয়েছে, তার যথার্থ বাস্তবায়ন হলো কি-না, সেদিকেও আমাদের নজর থাকবে। উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশের ক্ষেত্রে সামান্য ছাড় বিশ্বে নজিরবিহীন নয়। কিন্তু সেই ক্ষতি যত দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে পূরণ করা যায়, ততই মঙ্গল।
No comments