নেপাল কি যুক্তরাষ্ট্রের চীন কৌশলের ঘুঁটি? by ডিং গং
অ্যাঙ্গো-নেপাল
যুদ্ধের (১৮১৪-১৬, এতে নেপাল হেরে গিয়েছিল) ফলে নেপালের দক্ষিণ দিকের
বিপুল পরিমাণ ভূমি ব্রিটিশদের কাছে ছেড়ে দিতে হয়েছিল।
ভারত দখল করার পরই ব্রিটেন ধীরে ধীরে নেপালে তার উচ্চাভিলাষ সম্প্রসারণ করতে থাকে। ব্রিটেনের বৃহত্তর কৌশলগত লক্ষ্য ছিল চীনের তিব্বতে যাওয়ার পথ পাওয়া এবং এর মাধ্যমে রাশিয়ার আগে ভূমিটি দখল করে নেয়া।
তবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তিব্বত আক্রমণ করতে গিয়ে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কিং রাজবংশের (১৬৪৪-১৯১১) কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন, হিমালয়ের ভূ-প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও ব্রিটিশ জাতীয় শক্তির পতনের কারণে শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা তিব্বত দখল করতে ব্যর্থ হয়।
১৯১৮ সালে শেষ হওয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ধীরে ধীরে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ১৯২৩ সালে নেপাল-ব্রিটেন চুক্তি সই হয়, নেপালকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ব্রিটেন।
ইতিহাসে নেপালের কৌশলগত অবস্থান দেখা যায়। বর্তমানে এটি চীনের কারণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, নেপালের নিকট প্রতিবেশী চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।
এর মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ) নেপালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান হারে জোর দেয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী মন্ত্রী ডেভিড জে র্যাঞ্জ ১৪ মে কাঠমান্ডুতে বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি থেকে নেপাল উপকৃত হবে। এই স্ট্র্যাটেজি অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করবে, যুক্তরাষ্ট্র ও নেপাল উভয়ের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এখনকার দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিকে চীনকে টার্গেট করে বা চীনকে দমন করার উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করছে না। বরং দাবি করছে, যে এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক। কিন্তু এই বক্তব্য অবাস্তব বলে মনে হয়। এই কৌশলের একমাত্র ফলাফল হতে পারে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে মার্কিন সামরিক সহযোগিতা বাড়ানো।
নেপাল কি এটাই চায়? দুই পরাশক্তি ভারত ও চীনের মাঝে থাকা নেপালের জরুরি প্রয়োজনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র অবগত। কিন্তু নেপালের প্রয়োজনের আলোকে যুক্তরাষ্ট্র তার নীতি নির্ধারণ করছে না।
ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকা বিবেচনা করলে বলতে হবে, নেপালের প্রয়োজন পরাশক্তিগুলোর মধ্যে আরো বেশি ভারসাম্য, এই পার্বত্য দেশটির উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে অনুকূল বহিরাগত রাজনৈতিক পরিবেশ। কিন্তু বর্তমানের দ্রুত বিশ্বায়নের মধ্যে সীমিত শক্তি দিয়ে নেপালের পক্ষে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে এ ধরনের ভারসাম্য বিধান করা কঠিন হবে। দেশটি তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনটিই গ্রহণ করতে পারে।
নেপালের জনমত সাধারণভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পুনঃনির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক। তারা আশা করছে, মোদির নীতি অব্যাহত থাকতে পারে। এসব নীতির মধ্যে রয়েছে নেপালে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, চীনের সাথে সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নয়ন। উভয়টিই নেপালের জন্য কল্যাণকর।
আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনের উন্নয়নের ফলে অন্য কোনো শক্তিকে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগত ব্যবস্থায় ঘুঁটি হিসেবে নেপালকে ব্যবহার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
চীনের উন্নয়ন নেপালকে কল্যাণের অংশীদার করেছে। চীনা প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ দেশটির জন্য নজিরবিহীন সুযোগ নিয়ে এসেছে আশপাশের ও বিশ্বের সাথে একে সংযুক্ত করার মাধ্যমে। নেপাল এখন আর বদ্ধ ও গরিব দেশ থাকবে না, বরং পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াকে সংযুক্তকারী কেন্দ্রে পরিণত হবে।
গত ২০০ বছর ধরে ব্রিটশ উপনিবেশবাদীরা নেপালের দিকে চলছে, তাদের পরবর্তী টার্গেট চীনের তিব্বত। কিন্তু ৫০০ বছর ধরে চলা পাশ্চাত্যের সম্প্রসারণ এখন চিরদিনের মতো অবসান হতে শুরু করেছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সমৃদ্ধ প্রতিবেশ সৃষ্টির চীনা নীতি নেপাল ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জনগণকে তাদের জীবনমান উন্নয়নের এরা সুযোগ দেবে।
ভারত দখল করার পরই ব্রিটেন ধীরে ধীরে নেপালে তার উচ্চাভিলাষ সম্প্রসারণ করতে থাকে। ব্রিটেনের বৃহত্তর কৌশলগত লক্ষ্য ছিল চীনের তিব্বতে যাওয়ার পথ পাওয়া এবং এর মাধ্যমে রাশিয়ার আগে ভূমিটি দখল করে নেয়া।
তবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তিব্বত আক্রমণ করতে গিয়ে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কিং রাজবংশের (১৬৪৪-১৯১১) কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন, হিমালয়ের ভূ-প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও ব্রিটিশ জাতীয় শক্তির পতনের কারণে শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা তিব্বত দখল করতে ব্যর্থ হয়।
১৯১৮ সালে শেষ হওয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ধীরে ধীরে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ১৯২৩ সালে নেপাল-ব্রিটেন চুক্তি সই হয়, নেপালকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ব্রিটেন।
ইতিহাসে নেপালের কৌশলগত অবস্থান দেখা যায়। বর্তমানে এটি চীনের কারণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, নেপালের নিকট প্রতিবেশী চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।
এর মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ) নেপালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান হারে জোর দেয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী মন্ত্রী ডেভিড জে র্যাঞ্জ ১৪ মে কাঠমান্ডুতে বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি থেকে নেপাল উপকৃত হবে। এই স্ট্র্যাটেজি অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করবে, যুক্তরাষ্ট্র ও নেপাল উভয়ের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এখনকার দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিকে চীনকে টার্গেট করে বা চীনকে দমন করার উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করছে না। বরং দাবি করছে, যে এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক। কিন্তু এই বক্তব্য অবাস্তব বলে মনে হয়। এই কৌশলের একমাত্র ফলাফল হতে পারে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে মার্কিন সামরিক সহযোগিতা বাড়ানো।
নেপাল কি এটাই চায়? দুই পরাশক্তি ভারত ও চীনের মাঝে থাকা নেপালের জরুরি প্রয়োজনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র অবগত। কিন্তু নেপালের প্রয়োজনের আলোকে যুক্তরাষ্ট্র তার নীতি নির্ধারণ করছে না।
ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকা বিবেচনা করলে বলতে হবে, নেপালের প্রয়োজন পরাশক্তিগুলোর মধ্যে আরো বেশি ভারসাম্য, এই পার্বত্য দেশটির উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে অনুকূল বহিরাগত রাজনৈতিক পরিবেশ। কিন্তু বর্তমানের দ্রুত বিশ্বায়নের মধ্যে সীমিত শক্তি দিয়ে নেপালের পক্ষে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে এ ধরনের ভারসাম্য বিধান করা কঠিন হবে। দেশটি তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনটিই গ্রহণ করতে পারে।
নেপালের জনমত সাধারণভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পুনঃনির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক। তারা আশা করছে, মোদির নীতি অব্যাহত থাকতে পারে। এসব নীতির মধ্যে রয়েছে নেপালে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, চীনের সাথে সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নয়ন। উভয়টিই নেপালের জন্য কল্যাণকর।
আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনের উন্নয়নের ফলে অন্য কোনো শক্তিকে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগত ব্যবস্থায় ঘুঁটি হিসেবে নেপালকে ব্যবহার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
চীনের উন্নয়ন নেপালকে কল্যাণের অংশীদার করেছে। চীনা প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ দেশটির জন্য নজিরবিহীন সুযোগ নিয়ে এসেছে আশপাশের ও বিশ্বের সাথে একে সংযুক্ত করার মাধ্যমে। নেপাল এখন আর বদ্ধ ও গরিব দেশ থাকবে না, বরং পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াকে সংযুক্তকারী কেন্দ্রে পরিণত হবে।
গত ২০০ বছর ধরে ব্রিটশ উপনিবেশবাদীরা নেপালের দিকে চলছে, তাদের পরবর্তী টার্গেট চীনের তিব্বত। কিন্তু ৫০০ বছর ধরে চলা পাশ্চাত্যের সম্প্রসারণ এখন চিরদিনের মতো অবসান হতে শুরু করেছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সমৃদ্ধ প্রতিবেশ সৃষ্টির চীনা নীতি নেপাল ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জনগণকে তাদের জীবনমান উন্নয়নের এরা সুযোগ দেবে।
No comments