ব্যাংকের কাজ সহজ করছে কে? by শাকিলা হক
১৬ মে ২০১৯:
ব্যাংকে ব্যক্তিগত লেনদেন পরিচালনা সব সময়ই বেশ জটিল লাগে ২৫ বছরের ছাত্র
ইউয়ের। দক্ষিণ কোরিয়ার এই বাসিন্দা কোন ব্যাংকে গিয়ে কাজ করবেন, এটা ভাবতে
ভাবতেই মাথায় জট পাকিয়ে ফেলেন।
কারণ হলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর অন্তত ৬টি ব্যাংক হিসাব আছে। সেই সঙ্গে আছে গোটা কয়েক ক্রেডিট কার্ড। স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, এতগুলো ব্যাংক হিসাব কেন? উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যেখান থেকে ইউ বৃত্তি পান, সেই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত একটি ব্যাংকে তাঁর হিসাব আছে। যখন তিনি সামরিক বাহিনীতে ছিলেন, তখন আরেক ব্যাংকে হিসাব খুলেছিলেন, আরেকটি আছে পুরোনো চাকরির বেতনের হিসাব। এগুলো ছাড়া কয়েকটি নিষ্ক্রিয় ব্যাংক হিসাব আছে তাঁর।
এ ছাড়া গোটা কয়েক ব্যাংক কার্ড আছে ইউয়ের, যেগুলো কোনটি কখন কাজ করবে, তা মনে রাখতেই তাঁর অবস্থা কাহিল। যেমন একটা কার্ড তিনি কেবল করেছিলেন বোনাস পেতে। একদিন এক প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী এসে জানান, ৩০০ ডলার দিয়ে এই কার্ড করলে বোনাসস্বরূপ বাড়তি ১০০ ডলার পাবেন তিনি। আর তাই নিয়ে নেন ওই কার্ড। কাজে লেগেছে মাত্র একবার।
অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকেরা এত সব ব্যাংক হিসাব আর কার্ড কাছে রাখতে বেশ অভ্যস্ত। গড়ে প্রতি প্রাপ্তবয়স্কের এখানে ৫ দশমিক ২টি ব্যাংক হিসাব ও ৩ দশমিক ৬টি ক্রেডিট কার্ড আছে। তবে এটা ভাবা ঠিক হবে না যে সেবার মানে সেরা বলেই এত ব্যাংক হিসাব। এটাও নয় যে নানা ধরনের অফার দিচ্ছে ইনস্টিটিউশনগুলো। আসলে ব্যাংকের সেবা পরিচালিত হচ্ছে ব্যক্তিগত আগ্রহের চক্রে। যেমন ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে সে একটা কমিশন পাচ্ছে, আবার যে নিচ্ছে তাঁকে নানা ধরনের বোনাসের অফার দিয়ে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। কোনো চমকপ্রদ ব্যাংকিং সেবা কেউ পাচ্ছে না। বরং প্রায় অভিযোগের লম্বা লাইন দেখা যায় নিয়ন্ত্রক সংস্থায়। মোবাইল ব্যাংকের লেনদেন করে দেখা যায় গ্রাহককে এক কাজে ৩০ বার ক্লিক করতে হয়।
তবে কিছুদিন ধরে ডিজিটাল ব্যাংকিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অবশ্য অনেক ব্যাংক পুরোনো ব্যবস্থা দিয়েই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকে লক্ষ্য নিয়েছে এই ব্যাংক ব্যবস্থার সেবার মানে কিছুটা উন্নতি আনতে, জটিল হিসাব–নিকাশ বাদ দিয়ে আনন্দ নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার দিকে।
২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কমিশন (এফএসসি) ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি (ফিনটেক) বাধ্যতামূলক করে গ্রাহক সেবার মান বাড়াতে সচেষ্ট হয়। গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি নিয়ে আসে ভিভা রিপাবলিকা।
দন্তচিকিৎসক লি শেং গুন প্রথম ভিভা রিপাবলিকা তৈরি করেন ২০১৩ সালে। পরে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম ‘টস’ নিয়ে আসে ভিভা রিপাবলিকা। ‘টস’ হলো এমন একটি মোবাইল পেমেন্ট অ্যাপ, যার মাধ্যমে গ্রাহক তাঁর সব ব্যাংক হিসাব, কার্ড, ঋণের অবস্থা একটি প্ল্যাটফর্মে দেখতে পান, লেনদেন করতে পারেন। অর্থাৎ গ্রাহকের ব্যাংকিং কার্যক্রম বেশ গুছিয়ে দেয় টস। খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই অ্যাপ। এর জনপ্রিয়তা দেখেই আঁচ করা যায়, প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থা কতটা বিরক্তিকর ছিল। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ গ্রাহক আছে টসে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশ।
টস কেবল এতেই থেমে নেই; ডিজিটাল ব্যাংক গড়ে তুলতে লাইসেন্সের আবেদন করেছে তারা। তবে অন্য ব্যাংক কিন্তু টসকে হুমকি হিসেবে দেখছে না। বরং একটি অংশীদার হিসেবে দেখছে, যা গ্রাহকদের ক্রয়ের খরচ কমাচ্ছে। আসলে ব্যাংকিং খাতে প্রবেশকারী নতুন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই ব্যবহারকারীর নিয়মিত অনলাইন কার্যক্রমে ব্যাংকিং সেবাকে একীভূত করতে পারছে। একই সঙ্গে নিজেদের প্রযুক্তি সক্ষমতাকেও তারা ব্যাংকিং খাতে কাজে লাগাচ্ছে।
‘টসের’ মতো দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক আরেকটি অ্যাপ হলো ‘ব্যাংক সালাড’। টসের চেয়ে কিছুটা সংকীর্ণ এই অ্যাপ। ৪০ লাখ ব্যবহারকারী আছে। ব্যাংকিং সেবাকে একীভূত করলেও অর্থ প্রদান বা স্থানান্তরের কাজটা করে না।
আসলে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কনজিউমার ফিন্যান্সের দিকে ঝুঁকছে। বিশেষ করে এশিয়া অঞ্চলের প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো। চীনা টেক জায়ান্ট আলিবাবা ও টেনসেন্টের মতো নিজেদের বিশাল গ্রাহকের নেটওয়ার্ককে নতুন ব্যবসার কাজে লাগাচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ফেসবুক। প্রযুক্তি দুনিয়ায় হইচই তোলা ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনের মতো নিজস্ব মুদ্রা তৈরি করবে ফেসবুক। তবে ফেসবুকের এই ডিজিটাল ক্যাশ সিস্টেমের এখন পর্যন্ত কোনো নাম ঠিক হয়নি।
গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে এই দুই অ্যাপ। ব্যাংকিং মান ও সেবার ক্ষেত্রে গ্রাহকের নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। টস যদি ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পেয়ে যায়, এর প্রতিদ্বন্দ্বী হবে ‘কাকাও ব্যাংক’। দক্ষিণ কোরিয়ার ৯৪ শতাংশ মানুষ ‘কাকাও টক’ নামে একটি চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে। অনেকটা উইচ্যাটের মতো এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম । পরে এর সঙ্গে লেনদেনের বিষয়টি যুক্ত হয়েছে। সেটি হলো ‘কাকাও পে’। এর মাধ্যমে লেনদেন করা যায়। বর্তমানে ২ কোটি ৮০ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক আছে কাকাও পের। ২০১৮ সালে এই পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়।
ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কাকাও টকের এই সাফল্য অন্য ফিনটেক কোম্পানিগুলোকেও আগ্রহী করে তুলছে। ২০১৭ সালে এ কাকাও ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়। কাকাও টকের মাধ্যমে মূলত এ ব্যাংক পরিচালিত হতে থাকে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তাদের যোগাযোগ তালিকাতে (কাকাও টকে থাকা) থাকা মানুষের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতে পারে। এই ব্যাংক কাজ শুরু করেছে কয়েক মাস আগে। শুরু থেকেই সাফল্যের মুখ দেখেছে কাকাও ব্যাংক। ১৩ দিনে ২০ লাখ মানুষ এতে নিবন্ধন করে। ব্যাংকটি তাদের স্বয়ংক্রিয় গ্রাহকসেবার জন্য কাকাও টকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মার্চের হিসাব অনুযায়ী, কাকাও ব্যাংকের গ্রাহকসংখ্যা ৮৯ লাখ। অন্য ব্যাংকের সঙ্গে এর পার্থক্য হলো এর কোনো নির্দিষ্ট স্বয়ংক্রিয় টেলার মেশিন নেই। গ্রাহকেরা যেকোনো এটিএম থেকে অর্থ তুলতে ও জমা দিতে পারেন।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট, রয়টার্স, ব্যাংকিং টেক ডট কম।
কারণ হলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর অন্তত ৬টি ব্যাংক হিসাব আছে। সেই সঙ্গে আছে গোটা কয়েক ক্রেডিট কার্ড। স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, এতগুলো ব্যাংক হিসাব কেন? উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যেখান থেকে ইউ বৃত্তি পান, সেই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত একটি ব্যাংকে তাঁর হিসাব আছে। যখন তিনি সামরিক বাহিনীতে ছিলেন, তখন আরেক ব্যাংকে হিসাব খুলেছিলেন, আরেকটি আছে পুরোনো চাকরির বেতনের হিসাব। এগুলো ছাড়া কয়েকটি নিষ্ক্রিয় ব্যাংক হিসাব আছে তাঁর।
এ ছাড়া গোটা কয়েক ব্যাংক কার্ড আছে ইউয়ের, যেগুলো কোনটি কখন কাজ করবে, তা মনে রাখতেই তাঁর অবস্থা কাহিল। যেমন একটা কার্ড তিনি কেবল করেছিলেন বোনাস পেতে। একদিন এক প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী এসে জানান, ৩০০ ডলার দিয়ে এই কার্ড করলে বোনাসস্বরূপ বাড়তি ১০০ ডলার পাবেন তিনি। আর তাই নিয়ে নেন ওই কার্ড। কাজে লেগেছে মাত্র একবার।
অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকেরা এত সব ব্যাংক হিসাব আর কার্ড কাছে রাখতে বেশ অভ্যস্ত। গড়ে প্রতি প্রাপ্তবয়স্কের এখানে ৫ দশমিক ২টি ব্যাংক হিসাব ও ৩ দশমিক ৬টি ক্রেডিট কার্ড আছে। তবে এটা ভাবা ঠিক হবে না যে সেবার মানে সেরা বলেই এত ব্যাংক হিসাব। এটাও নয় যে নানা ধরনের অফার দিচ্ছে ইনস্টিটিউশনগুলো। আসলে ব্যাংকের সেবা পরিচালিত হচ্ছে ব্যক্তিগত আগ্রহের চক্রে। যেমন ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে সে একটা কমিশন পাচ্ছে, আবার যে নিচ্ছে তাঁকে নানা ধরনের বোনাসের অফার দিয়ে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। কোনো চমকপ্রদ ব্যাংকিং সেবা কেউ পাচ্ছে না। বরং প্রায় অভিযোগের লম্বা লাইন দেখা যায় নিয়ন্ত্রক সংস্থায়। মোবাইল ব্যাংকের লেনদেন করে দেখা যায় গ্রাহককে এক কাজে ৩০ বার ক্লিক করতে হয়।
তবে কিছুদিন ধরে ডিজিটাল ব্যাংকিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অবশ্য অনেক ব্যাংক পুরোনো ব্যবস্থা দিয়েই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকে লক্ষ্য নিয়েছে এই ব্যাংক ব্যবস্থার সেবার মানে কিছুটা উন্নতি আনতে, জটিল হিসাব–নিকাশ বাদ দিয়ে আনন্দ নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার দিকে।
২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কমিশন (এফএসসি) ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি (ফিনটেক) বাধ্যতামূলক করে গ্রাহক সেবার মান বাড়াতে সচেষ্ট হয়। গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি নিয়ে আসে ভিভা রিপাবলিকা।
দন্তচিকিৎসক লি শেং গুন প্রথম ভিভা রিপাবলিকা তৈরি করেন ২০১৩ সালে। পরে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম ‘টস’ নিয়ে আসে ভিভা রিপাবলিকা। ‘টস’ হলো এমন একটি মোবাইল পেমেন্ট অ্যাপ, যার মাধ্যমে গ্রাহক তাঁর সব ব্যাংক হিসাব, কার্ড, ঋণের অবস্থা একটি প্ল্যাটফর্মে দেখতে পান, লেনদেন করতে পারেন। অর্থাৎ গ্রাহকের ব্যাংকিং কার্যক্রম বেশ গুছিয়ে দেয় টস। খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই অ্যাপ। এর জনপ্রিয়তা দেখেই আঁচ করা যায়, প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থা কতটা বিরক্তিকর ছিল। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ গ্রাহক আছে টসে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশ।
টস কেবল এতেই থেমে নেই; ডিজিটাল ব্যাংক গড়ে তুলতে লাইসেন্সের আবেদন করেছে তারা। তবে অন্য ব্যাংক কিন্তু টসকে হুমকি হিসেবে দেখছে না। বরং একটি অংশীদার হিসেবে দেখছে, যা গ্রাহকদের ক্রয়ের খরচ কমাচ্ছে। আসলে ব্যাংকিং খাতে প্রবেশকারী নতুন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই ব্যবহারকারীর নিয়মিত অনলাইন কার্যক্রমে ব্যাংকিং সেবাকে একীভূত করতে পারছে। একই সঙ্গে নিজেদের প্রযুক্তি সক্ষমতাকেও তারা ব্যাংকিং খাতে কাজে লাগাচ্ছে।
‘টসের’ মতো দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক আরেকটি অ্যাপ হলো ‘ব্যাংক সালাড’। টসের চেয়ে কিছুটা সংকীর্ণ এই অ্যাপ। ৪০ লাখ ব্যবহারকারী আছে। ব্যাংকিং সেবাকে একীভূত করলেও অর্থ প্রদান বা স্থানান্তরের কাজটা করে না।
আসলে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কনজিউমার ফিন্যান্সের দিকে ঝুঁকছে। বিশেষ করে এশিয়া অঞ্চলের প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো। চীনা টেক জায়ান্ট আলিবাবা ও টেনসেন্টের মতো নিজেদের বিশাল গ্রাহকের নেটওয়ার্ককে নতুন ব্যবসার কাজে লাগাচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে ফেসবুক। প্রযুক্তি দুনিয়ায় হইচই তোলা ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনের মতো নিজস্ব মুদ্রা তৈরি করবে ফেসবুক। তবে ফেসবুকের এই ডিজিটাল ক্যাশ সিস্টেমের এখন পর্যন্ত কোনো নাম ঠিক হয়নি।
গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে এই দুই অ্যাপ। ব্যাংকিং মান ও সেবার ক্ষেত্রে গ্রাহকের নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। টস যদি ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পেয়ে যায়, এর প্রতিদ্বন্দ্বী হবে ‘কাকাও ব্যাংক’। দক্ষিণ কোরিয়ার ৯৪ শতাংশ মানুষ ‘কাকাও টক’ নামে একটি চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে। অনেকটা উইচ্যাটের মতো এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম । পরে এর সঙ্গে লেনদেনের বিষয়টি যুক্ত হয়েছে। সেটি হলো ‘কাকাও পে’। এর মাধ্যমে লেনদেন করা যায়। বর্তমানে ২ কোটি ৮০ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক আছে কাকাও পের। ২০১৮ সালে এই পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়।
ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কাকাও টকের এই সাফল্য অন্য ফিনটেক কোম্পানিগুলোকেও আগ্রহী করে তুলছে। ২০১৭ সালে এ কাকাও ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়। কাকাও টকের মাধ্যমে মূলত এ ব্যাংক পরিচালিত হতে থাকে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তাদের যোগাযোগ তালিকাতে (কাকাও টকে থাকা) থাকা মানুষের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতে পারে। এই ব্যাংক কাজ শুরু করেছে কয়েক মাস আগে। শুরু থেকেই সাফল্যের মুখ দেখেছে কাকাও ব্যাংক। ১৩ দিনে ২০ লাখ মানুষ এতে নিবন্ধন করে। ব্যাংকটি তাদের স্বয়ংক্রিয় গ্রাহকসেবার জন্য কাকাও টকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মার্চের হিসাব অনুযায়ী, কাকাও ব্যাংকের গ্রাহকসংখ্যা ৮৯ লাখ। অন্য ব্যাংকের সঙ্গে এর পার্থক্য হলো এর কোনো নির্দিষ্ট স্বয়ংক্রিয় টেলার মেশিন নেই। গ্রাহকেরা যেকোনো এটিএম থেকে অর্থ তুলতে ও জমা দিতে পারেন।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট, রয়টার্স, ব্যাংকিং টেক ডট কম।
No comments