খালেদার বক্তব্যে হতাশা, বিস্ময় by রিয়াদুল করিম
বিএনপির
চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলন শেষ। তাঁর গুলশান কার্যালয়ের সামনেই অপেক্ষা
করছিলেন বিএনপি ও ছাত্রদলের অনেক নেতা-কর্মী। ভেতরে ঢোকার সুযোগ ছিল না
তাঁদের। কার্যালয় থেকে বের হতেই ছাত্রদলের পরিচিত কয়েকজন নেতা-কর্মী ঘিরে
ধরলেন। জানতে চাইলেন, চেয়ারপারসন কী আলটিমেটাম দিয়েছেন? কী কর্মসূচি
দিয়েছেন? কর্মসূচি ৫ জানুয়ারি সমাবেশ, সারা দেশে বিক্ষোভ। কোনো আলটিমেটাম
নেই—এমন উত্তর শুনে তাঁদের চোখেমুখে হতাশার ভাব স্পষ্ট হয়ে উঠল। একজন
বলেই বসলেন, ‘তাহলে কী হলো?’ আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়ার বক্তব্যে নেতা-কর্মীদের অনেকেই হতাশ হয়েছেন। ছাত্রদলের
সম্পাদক পর্যায়ের একজন নেতা গুলশান কার্যালয়ের সামনে এই প্রতিবেদককে
বলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন খালেদা জিয়া এবার একটি আলটিমেটাম দিয়ে কঠোর
কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন। কিন্তু তা না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের অনেক
নেতা-কর্মী হতাশ হবেন বলে তাঁর ধারণা। আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের
প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘হরতালের কর্মসূচিতে বিএনপির
কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে থাকেন।’ এ কথা শুনে ছাত্রদলের সম্পাদক পর্যায়ের ওই
নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরই গালাগাল দিতে শুরু করেন। ছাত্রদলের
নেতা-কর্মীদের মতো বিএনপির চেয়ারপারসনের বক্তব্যে হতাশ ও বিস্মিত হয়েছেন
খোদ দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেক নেতা। হতাশ শরিক দলের নেতারাও।
খালেদা জিয়ার আজকের বক্তব্যে মূল বিষয় ছিল মূলত সংকট সমাধানের লক্ষ্যে
সাত দফা প্রস্তাবনা (আসলে প্রস্তাব)। কিন্তু যেসব প্রস্তাব তিনি উপস্থাপন
করেছেন, তা মূলত নির্বাচনী সমঝোতার পর আশা করা যায়। যেখানে সরকার বার বার
আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে, সেখানে বিএনপির প্রধানের এমন
প্রস্তাব কেন, তা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেকেই বিস্মিত।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার পাশেই ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এমন একজন
সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘ম্যাডামের বক্তব্যে আমরা নিজেরাও কনফিউজড
(বিভ্রান্ত)। বক্তব্যের পর আমরা নিজেরা অনেকে এটি নিয়ে আলোচনা করেছি। উনি
যেভাবে কথা বলছিলেন, এগুলো তো নির্বাচনের প্রাক্কালের কথা। নির্বাচন কী খুব
কাছাকাছি সময়ে হচ্ছে? তবে আমি মনে করি না মার্চ, এপ্রিল বা ভেরি নিয়ার
ফিউচার ইলেকশন হচ্ছে। জাতিসংঘের মতো বড় কোনো শক্তি কী নির্বাচনের ব্যবস্থা
করছে? আন্তর্জাতিক বিশ্ব পরিস্থিতি সে কথা বলছে না।’
স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ সভায় এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি স্থায়ী কমিটির আরও কয়েকজন সদস্যের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁরাও এ বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানতেন না। খালেদা জিয়ার বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক একটি দলের শীর্ষ একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হতাশ। উনি কী কর্মসূচি দিলেন? ওনার কাছে তো জাতি অনেক বড় প্রত্যাশা করে ছিল। কিন্তু উনি কি ওই কর্মসূচি দিতে পারছেন?’ তিনি মনে করেন, হামলা-মামলা থেকে রক্ষা পেতে খালেদা জিয়া নরম সুরে কথা বলছেন। এতে আন্দোলন যে গতি পেতে শুরু করেছিল, তাতে ভাটা পড়ার আশঙ্কা আছে বলে তিনি মনে করেন।
স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ সভায় এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি স্থায়ী কমিটির আরও কয়েকজন সদস্যের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁরাও এ বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানতেন না। খালেদা জিয়ার বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক একটি দলের শীর্ষ একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হতাশ। উনি কী কর্মসূচি দিলেন? ওনার কাছে তো জাতি অনেক বড় প্রত্যাশা করে ছিল। কিন্তু উনি কি ওই কর্মসূচি দিতে পারছেন?’ তিনি মনে করেন, হামলা-মামলা থেকে রক্ষা পেতে খালেদা জিয়া নরম সুরে কথা বলছেন। এতে আন্দোলন যে গতি পেতে শুরু করেছিল, তাতে ভাটা পড়ার আশঙ্কা আছে বলে তিনি মনে করেন।
No comments