সাগরেই বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি -নিশ্চিত করেছে এয়ারএশিয়া : ৩ মৃতদেহ উদ্ধার : আরোহী ছিল ১৬২
(সুরাবায়ার
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ নিখোঁজ উড়োজাহাজটির স্বজনেরা
ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়ার খবর শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন l ছবি: রয়টার্স) শেষ
পর্যন্ত এয়ারএশিয়া ইন্দোনেশিয়ার উধাও বিমানের পরিণতি জানা গেল। সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে বিধ্বস্তই হয়েছে এটি।
ঘটনার তৃতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার সাগর থেকে বিমানটির তিন যাত্রীর মৃতদেহ
উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংখ্যাটি
৪০ উল্লেখ করা হয়েছিল। খবর বিবিসি ও এএফপির। ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী
জানায়, নিখোঁজ ফ্লাইট কিউজেড৮৫০১-এর অনুসন্ধান অভিযান চলার মধ্যে বোর্নিও
দ্বীপের কাছে জাভা সাগরে ভাসমান কিছু ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ওই লাশগুলো
পাওয়া গেছে। উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও মৃতদেহের খোঁজ মেলার পর
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সংস্থার প্রধান বামবাং
সোয়েলিসতিয়ো রাজধানী জাকার্তায় একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। টিভিতে তাঁর
বক্তব্য প্রচারের সময় সাগরে ভাসমান ধ্বংসাবশেষ এবং একটি লাশের ছবি দেখানো
হয়। এ দৃশ্য দেখে সুরাবায়া বিমানবন্দরে চরম উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষমাণ নিখোঁজ
আরোহীদের স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সংবাদ সম্মেলনের পর ইন্দোনেশিয়ার
নৌবাহিনীর মুখপাত্র মানাহান সিমোরাঙ্গকির জানান, উদ্ধারকারী একটি
যুদ্ধজাহাজে ৪০টির বেশি মৃতদেহ তোলা হয়েছে। এ সংখ্যা বাড়ছে। উদ্ধারকর্মীরা
বাকি লাশগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বামবাং সোয়েলিসতিয়ো
পরে নিশ্চিত করেছেন, সংখ্যাটি ৪০ নয়, ৩। এয়ারএশিয়া কর্তৃপক্ষ গতকাল রাতে এক
বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, জাভা সাগরে ভাসমান যে ধ্বংসাবশেষ মিলেছে, তা
তাদেরই নিখোঁজ বিমানের। আর যে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁরা ওই
বিমানেরই যাত্রী। এ সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টনি
ফার্নান্দেজ এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারের জন্য আমার
হৃদয় দুঃখভারাক্রান্ত।’ এর আগে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সংস্থার প্রধান
বামবাং সোয়েলিসতিয়ো বলেন, তিনি ‘৯৫ ভাগ নিশ্চিত’, সাগরে যেসব ধ্বংসাবশেষ
দেখা গেছে, তা নিখোঁজ বিমানেরই। পানির নিচে একটি ছায়াও শনাক্ত করা হয়েছে।
এটি দেখতে নিখোঁজ বিমানের আকৃতির মতোই। সোয়েলিসতিয়ো জানান,
ধ্বংসস্তূপের সন্ধান মেলার স্থানে অভিযানে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হচ্ছে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে বিমানের বড় অংশগুলো রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে
পাঠানো হচ্ছে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ জাহাজ। সোমবারই
সোয়েলিসতিয়ো বলেছিলেন, অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে
ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বেসামরিক
বিমান পরিবহন সংস্থার কর্মকর্তা জোকো মুরজাতমোজো বলেন, বোর্নিও
দ্বীপের কালিমান্তান প্রদেশের অদূরে সাগরে বিমানের দরজার মতো দেখতে অংশ
পাওয়া গেছে। গত রোববার ১৬২ জন আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া শহর
থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ওড়ার ঘণ্টা খানেক পর নিখোঁজ হয় এয়ারবাস এ৩২০-২০০
উড়োজাহাজটি। তল্লাশির আওতা বাড়িয়ে গতকাল জল ও স্থলের ১৩টি জোনে
অনুসন্ধান চালানো হয়।
No comments