স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট আজ
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে গতকাল ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে শোভাযাত্রা বের করেন স্বাধীনতাকামীরা। এএফপি |
স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকবে, নাকি স্বাধীন হবে, আজ বৃহস্পতিবার সেই রায় দেবেন স্কটিশরা। গতকাল বুধবার স্বাধীনতাকামীরা ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে এবং বিরোধিতাকারী ‘না’ ভোটের পক্ষে শেষ প্রচারণা চালান। শেষ মুহূর্তের বেশির ভাগ জনমত জরিপে ‘না’ ভোট এগিয়ে থাকার কথা বলা হলেও ব্যবধান খুবই কম। তাই দুই পক্ষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের। স্বাধীনতাকামী নেতা ও স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স স্যামন্ড গতকাল ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালান। শেষ দিনের প্রচারাভিযানে স্কটল্যান্ডের জনগণের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্যামন্ড বলেন, স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিলে তাঁরা নিজের হাতে ক্ষমতা পাবেন। সবাইকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্যামন্ড বলেন, ‘ভোটের জন্য কয়েক ঘণ্টা সময় ব্যয় করার মধ্য দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব নিজের হাতে চলে আসবে।...এটা আমাদের জন্য অসাধারণ একটা মুহূর্ত। স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যৎ—আমাদের দেশ, আমাদের হাতে।’ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ ও প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা এডওয়ার্ড মিলিব্যান্ড স্কটল্যান্ডকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একীভূত রাখার জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে আসছেন।
গতকালও তাঁরা বিভিন্নভাবে ‘না’ ভোটের জন্য প্রচারণা চালান। ক্যামেরনের দুঃস্বপ্ন: ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেন, গণভোটে ‘হ্যঁা’ ভোট জিততে যাচ্ছে—এমন দুঃস্বপ্ন দেখে মাঝরাতে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তিনি। ক্যামেরন আরও বলেন, জরিপে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’-এর ব্যবধান কেন এত কাছাকাছি, তা তাঁর বোধগম্য নয়। ক্যামেরন গতকাল হ্যাম্পশায়ারে এক অনুষ্ঠানে আবারও জানিয়ে দেন, গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলেও তিনি পদত্যাগ করবেন না। ক্যামেরন বলেন, ‘গণভোটের ব্যালট পেপারে আমার নাম থাকবে না। গণভোটে শুধু সিদ্ধান্ত হবে, স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকবে কি না। যুক্তরাজ্যের আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমেই আমার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।’ না ভোটই এগিয়ে: গত মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত তিনটি জনমত জরিপে দেখা যায়, ‘না’ ভোটই জয় পেতে চলেছে। ডেইলি েটলিগ্রাফ, ডেইলি মেইল ও স্কটসম্যান-এর প্রকাশিত এসব জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশই ‘না’ ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। বিপরীতে ৪৮ শতাংশ মত দিয়েছেন ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে। এই জরিপগুলোতে অবশ্য মনস্থির না করা ভোটারদের বাইরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন হিসাবে দেখা যায়, মনস্থির না করা ভোটার রয়েছেন অন্তত পাঁচ লাখ। ক্লিনটন ঐক্যের পক্ষে: এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গেই থাকা উচিত স্কটল্যান্ডের। এর মাধ্যমে তারা বিশ্বের কাছে ঐক্যের একটি ‘শক্তিশালী বার্তা’ পাঠাতে পারবে। এক বিবৃতিতে ক্লিনটন তাঁর এই অবস্থানের কথা জানান।
No comments