আকৃতিতে বড় হলেও মর্যাদায় খুবই ছোট by মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার
গণতন্ত্রকে
কার্যকর করতে যেসব প্রতিষ্ঠান অবদান রাখে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল
নির্বাচন কমিশন। কারণ, গণতন্ত্রে সরকার যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে
সে নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। এ কারণে গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে
নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দিয়ে গড়ে
তোলা হয়, যাতে কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ
করতে পারে। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন হলেও বাস্তবে
প্রতিষ্ঠানটি এ দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। পরিবর্তে, কমিশন
ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করতে স্বচ্ছন্দবোধ করছে।
নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতার প্রধান কারণ হল, কমিশনকে শক্তিশালী করতে
সরকারগুলোর উদ্যোগ না নেয়া। কমিশন গঠনের জন্য সংবিধান প্রয়োজনীয় আইন তৈরির
সুযোগ দিলেও ওই সুযোগ ব্যবহার না করে পরিবর্তে প্রতিটি সরকার মনপছন্দ
নতজানু ও হুকুমবরদার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিশন গঠন করে তাদের কাছ থেকে
আনুকূল্য নিয়ে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে চেয়েছে। বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচন
কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে মাত্রাভেদে বিতর্ক থাকলেও সাবেক হুদা এবং বর্তমান
রকিব কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে সর্বাধিক আলোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে। তবে এর
আগে বিচারপতি আজিজ কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এরই
মধ্যে গণমাধ্যমে রকিব কমিশনের যেসব বিতর্কিত ও সমালোচনাযোগ্য কর্মকাণ্ড
সম্পর্কে আলোচনা উপস্থাপিত হয়েছে, তার মধ্যে ডিসিসি নির্বাচন করতে না পারা,
ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণে পেশাদারিত্ব
প্রদর্শনে ব্যর্থতা, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে
বিলম্ব করে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা, নিজ কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও
সরকারদলীয় প্রশাসনের ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা,
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একমাত্র সরকারদলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র
প্রত্যাহারের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই নির্বাচিত ঘোষণা করা, সরকারি
প্ররোচনায় ভুইফোঁড় বিএনএফকে রেজিস্ট্রেশন দিতে বাড়তি আগ্রহ প্রদর্শন,
আরপিওর ৯১-ই ধারা বাতিলের আÍঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে তীব্র সমালোচনার মুখে
আবার তা বহাল রাখা, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে তিন বছরের দলীয়
সম্পৃক্ততার যোগ্যতা বাতিল করে দলগুলোকে মনোনয়ন বাণিজ্যের সুবিধা করে দেয়া
ইত্যাদি। মন্ত্রণালয়ের ওপর ইসির নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গেও রকিব কমিশন জনগণকে
টিনের বাক্সের বায়োস্কোপ দেখায়। উল্লেখ্য, হুদা কমিশন প্রদত্ত সুষ্ঠু
নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চারটি মন্ত্রণালয়ের ওপর কমিশনের নিয়ন্ত্রণ
প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রকিব কমিশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০১২
সালের জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সরকারের ওপর
নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে
যথেষ্ট ক্ষমতা দেয়া আছে। সরকার আন্তরিক থাকলে দলীয় বা নির্দলীয় যে ধরনের
সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’ অথচ,
এর তিন মাস পর মধ্য সেপ্টেম্বরে একই সিইসি ভিন্ন সুরে বলেন, ‘জাতীয়
নির্বাচনকালে শুধু চারটি নয়, সরকারের সব মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন কমিশনের
কর্তৃত্ব বজায় থাকতে হবে।’ এভাবে কমিশন একেক সময় একেক কথা বলে হেয় হয়েছে।
এসব বিষয় পুনরালোচনার পরিবর্তে এ প্রবন্ধে রকিব কমিশনের সাম্প্রতিক কিছু
সমালোচনাযোগ্য কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে কমিশনের হঠাৎ বাড়তি আগ্রহ দেখে সন্দেহ হয় যে, কমিশন হয়তো সরকারের অঘোষিত নির্দেশনায় সংসদ নির্বাচনে সেনা ব্যবহারে মনোযোগী হয়েছে। তা না হলে এ কমিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে নির্বাচনে সেনা ব্যবহারের প্রতি যে অনীহা দেখিয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল যে এরা হয়তো পুলিশ-বিজিবি দিয়ে সংসদ নির্বাচন করবে। কমিশন ডিসিসি নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণের পর রাজধানীর মতো সন্ত্রাসঅধ্যুষিত স্পর্শকাতর এলাকায় প্রতিদ্ব^ন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে অধিকাংশ সম্ভাব্য প্রার্থীর মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। সিইসি ২০১২ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আইন অনুযায়ী যা যা করা দরকার তা-ই করা হবে। এ কাজে পুলিশ বাহিনীই যথেষ্ট। প্রার্থীরা কেউ সেনা মোতায়েনের দাবি করলেও তাদের কথায় আমরা প্ররোচিত হব না। প্রয়োজনে ভিডিও ব্যবহার করা হবে। ভোটাররা সবকিছু সরাসরি দেখতে পেলে কেউ পেশিশক্তি ব্যবহারের সাহস পাবে না।’ পরে একই বছর অক্টোবরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় না করে সিইসি ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে করে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করার কথা বলে সমালোচিত হয়েছিলেন। একজন কলামিস্ট লিখেছিলেন, সিইসি খেলোয়াড়দের চেয়ে দর্শকদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ, নির্বাচনের মাঠের মূল খেলোয়াড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় না করে বিদেশী রাষ্ট্রদূত, যারা নির্বাচনের পর্যবেক্ষক, তাদের তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। সিইসির এহেন বক্তব্য এবং পরে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কতিপয় উপনির্বাচন এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের সেনা মোতায়েনের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশ বাহিনী দিয়ে ওই নির্বাচনগুলো সম্পন্ন করায় নাগরিক সম্প্রদায় ভেবেছিল, কমিশন সংসদ নির্বাচনেও সেনা মোতায়েন না করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনে বিজিবি ব্যবহার করে নির্বাচন করবে। কিন্তু দশম সংসদ নির্বাচনে এ নির্বাচন বয়কট করে বিরোধী দলগুলো একে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়ায় সরকারি আগ্রহে কমিশন কেবল সেনাবাহিনী ব্যবহারে উদ্যোগ নেয়নি, অন্য অনেক সংসদ নির্বাচনের চেয়ে অধিক সময়ের জন্য সেনাবাহিনী ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তা ছাড়া অন্যান্য নির্বাচনে সেনাবাহিনী কেবল নির্বাচনে শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকে; কিন্তু এবার দলগুলো একদলীয়, একতরফা ও অপর্যবেক্ষণযোগ্য ব্যতিক্রমী এ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার রাজনৈতিক আন্দোলনে থাকার কারণে সম্ভবত সরকারের অনুরোধে কমিশন সহিংসতা দমনের নামে পরোক্ষভাবে বিরোধীদলীয় আন্দোলন দমনে ব্যবহার করে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাদের কাজের পরিধি ঠিক করতে হবে। সরকারি প্রভাবে কমিশনের অনুরোধে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক আন্দোলন দমনে ব্যবহৃত হওয়া সেনাবাহিনীর উচিত হবে কিনা বা সেনাবাহিনীর সদস্যদের দিয়ে কমিশনের পুলিশ-আনসারের কাজ করানো যথার্থ হবে কিনা সে বিষয়ে যুগপৎ নির্বাচন কমিশন ও সেনাবাহিনীর ভাবার আছে। বিরোধী দল থেকে এরই মধ্যে একদলীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামিয়ে তাদের ভাষায় ‘সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
দশম সংসদ নির্বাচনের নামে কমিশন যে তামাশার আয়োজন করতে যাচ্ছে, তা সংসদীয় নির্বাচনের ইতিহাসে নতুন নজির সৃষ্টি করবে। ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে নির্বাচনের আগেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্ব^ন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে এ নির্বাচনকে একটি প্রহসনে পরিণত করেছে। বাকি ১৪৬ আসনের অনেক আসনেই আবার একই দলের দুই প্রার্থী বা কোথাও কোথাও নামসর্বস্ব ডামি প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। যেসব নির্বাচনী এলাকায় জাপার প্রার্থী রয়েছেন, তারা নির্বাচন করবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও রিটার্নিং অফিসার অজ্ঞাত কারণে তা প্রত্যাহার করেননি। অনেক ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারদের বিরুদ্ধে আরপিও বা কমিশনের নির্দেশনা না মেনে সরকারি দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল এ উপমহাদেশে সংসদ নির্বাচন হয় উৎসবীয় আমেজে। তার জন্য প্রয়োজন হয় এমন সুশীল পরিবেশ, যে পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সুস্থ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্বাচনী প্রচারণা করে নির্বিঘ্নে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ নির্বাচনের বেলায় এসবের কিছুই হচ্ছে না। এখানে না আছে উল্লেখযোগ্য প্রার্থী, না আছে নির্বাচনী পরিবেশ। সহিংস রাজনৈতিক আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ ও নির্বাচন প্রতিহত করার বিরোধীদলীয় জোটের ঘোষণার বিপরীতে সংবিধানের দোহাই দিয়ে অনেকটা জোর করে সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এ তথাকথিত নির্বাচনের আয়োজন করছে। রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালিত হয়, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে প্রার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে কমিশন কর্মকর্তারা প্রার্থী ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন, এ নির্বাচনে এসব কিছুই এখন পর্যন্ত (২৪-১২-১৩) হয়নি।
দশম সংসদ নির্বাচনের নামে রকিব কমিশন এমনই এক নির্বাচন করতে যাচ্ছে যে, নির্বাচনে কেবল ভোটার এবং প্রার্থীরাই আগ্রহ হারাননি, আগ্রহ হারিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও। এ নির্বাচন যথাযথভাবে এবং অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না মনে করে এরই মধ্যে ইইউ ও কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষণযোগ্য গণ্য না করে এ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই রকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আমেরিকাও। অন্যান্য দেশী-বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও যে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ দেখাবে এমনটা মনে হয় না। কিন্তু কমিশনের হয়তো তাতে কিছুই আসে যায় না। তা না হলে গ্লোবাল ভিলেজে বাস করে ইসি কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ কী করে বলেন, ‘ইইউ পর্যবেক্ষক না পাঠালে তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের এ সিদ্ধান্ত নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, দুয়েকটি প্রতিবেশী দেশ ব্যতীত প্রায় সব দেশ যদি এ নির্বাচনকে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে এমন নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারকে তারা কতটা সহযোগিতা দেবে সে বিষয়ে ভাবার আছে। আলোচ্য নির্বাচনটি এমনই এক ব্যতিক্রমী নির্বাচন, যে নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগেও অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেনি, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেনি, এমনকি প্রার্থীদের অনেকেই নিরাপত্তাজনিত কারণে এলাকায় না গিয়ে রাজধানীতে অবস্থান করছেন।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের সঙ্গে কমিশনের কোনো বিরোধ দেখা যায় না। সরকার যেভাবে চাইছে কমিশন যেন সেভাবেই তার কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও সরকারি দলের মন ভরছে না। সম্প্রতি কমিশন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের দেয়া হলফনামার তথ্য প্রকাশ করায় সরকারদলীয় প্রার্থীরা কমিশনের ওপর নাখোশ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন কমিশনের প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য প্রকাশ করাকে অযৌক্তিক মনে করছেন। তাতো তারা করবেনই। কারণ, পাঁচ বছরে দলীয় অনেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও নেতার শত শতগুণ বর্ধিত সম্পদের তথ্য প্রকাশ পেলে যে দলীয় প্রার্থীদর ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়, তা অনুধাবনের মতো জ্ঞান তো সরকারদলীয় নেতাদের রয়েছে। সে কারণে আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন সমন্বয় উপকমিটি ২২ ডিসেম্বর সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে তাদের আপত্তি জানান। সিইসি এ আপত্তি আমলে না নিয়ে জোর গলায় বলতে পারতেন, প্রার্থীরা যদি অবৈধভাবে বিত্ত-বৈভবের মালিক না হন, তাহলে হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের তালিকা প্রকাশে তাদের অসুবিধা কোথায়? কিন্তু সরকারের প্রতি নতজানু সিইসি মহোদয় তা বলতে পারেননি। তিনি আওয়ামী লীগের উল্লিখিত আপত্তি আমলে নিয়ে কমিশনারদের সঙ্গে সলাপরামর্শ করে কীভাবে হলফনামার তথ্য প্রকাশ বন্ধ করা যায় তার উপায় অনুসন্ধান করছেন। সিইসির এমন নমনীয় ভূমিকায় অনেক দুর্নীতিবাজ এমপি খুশি হয়েছেন এবং পাঁচ বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া যেসব এমপির হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের তালিকা এখনও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি তারা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।
নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর একটি বড় দলের প্রধানকে বাড়ি থেকে র্যাব কেন এবং কীভাবে তুলে নিয়ে গেল এবং কমিশন এ ব্যাপারে কীভাবে নীরব থাকল সে রহস্যের উন্মোচন প্রয়োজন। কমিশন এমনই নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করেছে যে, নির্বাচনের আইন-শৃংখলা বৈঠকে যোগদানের জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ডিসি-এসপিদের পুলিশ প্রটেকশনে ঢাকায় আসতে হয়েছে। প্রথমবার ভোটার হওয়া লাখ লাখ তরুণ ভোটারকে ভোটবঞ্চিত করে কমিশন তাদের মন ভেঙে দিয়েছে। এভাবে রকিব কমিশনের কর্মকাণ্ড খুঁটিয়ে পরখ করে বলা যায়, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিশন অতীতের সব কমিশনের চেয়ে আকৃতিতে বড় হলেও সাহসিকতা, স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও মর্যাদার দিক থেকে এ কমিশন সব কমিশনের চেয়ে ছোট। এ কমিশন যদি দশম সংসদ নির্বাচন করে ফেলতে পারে, তাহলে সংসদীয় নির্বাচনের ইতিহাসে তা একটি নিকৃষ্ট নির্বাচনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে কমিশনের হঠাৎ বাড়তি আগ্রহ দেখে সন্দেহ হয় যে, কমিশন হয়তো সরকারের অঘোষিত নির্দেশনায় সংসদ নির্বাচনে সেনা ব্যবহারে মনোযোগী হয়েছে। তা না হলে এ কমিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে নির্বাচনে সেনা ব্যবহারের প্রতি যে অনীহা দেখিয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল যে এরা হয়তো পুলিশ-বিজিবি দিয়ে সংসদ নির্বাচন করবে। কমিশন ডিসিসি নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণের পর রাজধানীর মতো সন্ত্রাসঅধ্যুষিত স্পর্শকাতর এলাকায় প্রতিদ্ব^ন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে অধিকাংশ সম্ভাব্য প্রার্থীর মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। সিইসি ২০১২ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আইন অনুযায়ী যা যা করা দরকার তা-ই করা হবে। এ কাজে পুলিশ বাহিনীই যথেষ্ট। প্রার্থীরা কেউ সেনা মোতায়েনের দাবি করলেও তাদের কথায় আমরা প্ররোচিত হব না। প্রয়োজনে ভিডিও ব্যবহার করা হবে। ভোটাররা সবকিছু সরাসরি দেখতে পেলে কেউ পেশিশক্তি ব্যবহারের সাহস পাবে না।’ পরে একই বছর অক্টোবরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় না করে সিইসি ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে করে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার না করার কথা বলে সমালোচিত হয়েছিলেন। একজন কলামিস্ট লিখেছিলেন, সিইসি খেলোয়াড়দের চেয়ে দর্শকদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ, নির্বাচনের মাঠের মূল খেলোয়াড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় না করে বিদেশী রাষ্ট্রদূত, যারা নির্বাচনের পর্যবেক্ষক, তাদের তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। সিইসির এহেন বক্তব্য এবং পরে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কতিপয় উপনির্বাচন এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের সেনা মোতায়েনের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশ বাহিনী দিয়ে ওই নির্বাচনগুলো সম্পন্ন করায় নাগরিক সম্প্রদায় ভেবেছিল, কমিশন সংসদ নির্বাচনেও সেনা মোতায়েন না করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনে বিজিবি ব্যবহার করে নির্বাচন করবে। কিন্তু দশম সংসদ নির্বাচনে এ নির্বাচন বয়কট করে বিরোধী দলগুলো একে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়ায় সরকারি আগ্রহে কমিশন কেবল সেনাবাহিনী ব্যবহারে উদ্যোগ নেয়নি, অন্য অনেক সংসদ নির্বাচনের চেয়ে অধিক সময়ের জন্য সেনাবাহিনী ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তা ছাড়া অন্যান্য নির্বাচনে সেনাবাহিনী কেবল নির্বাচনে শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকে; কিন্তু এবার দলগুলো একদলীয়, একতরফা ও অপর্যবেক্ষণযোগ্য ব্যতিক্রমী এ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করার রাজনৈতিক আন্দোলনে থাকার কারণে সম্ভবত সরকারের অনুরোধে কমিশন সহিংসতা দমনের নামে পরোক্ষভাবে বিরোধীদলীয় আন্দোলন দমনে ব্যবহার করে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাদের কাজের পরিধি ঠিক করতে হবে। সরকারি প্রভাবে কমিশনের অনুরোধে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক আন্দোলন দমনে ব্যবহৃত হওয়া সেনাবাহিনীর উচিত হবে কিনা বা সেনাবাহিনীর সদস্যদের দিয়ে কমিশনের পুলিশ-আনসারের কাজ করানো যথার্থ হবে কিনা সে বিষয়ে যুগপৎ নির্বাচন কমিশন ও সেনাবাহিনীর ভাবার আছে। বিরোধী দল থেকে এরই মধ্যে একদলীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামিয়ে তাদের ভাষায় ‘সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
দশম সংসদ নির্বাচনের নামে কমিশন যে তামাশার আয়োজন করতে যাচ্ছে, তা সংসদীয় নির্বাচনের ইতিহাসে নতুন নজির সৃষ্টি করবে। ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে নির্বাচনের আগেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্ব^ন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে এ নির্বাচনকে একটি প্রহসনে পরিণত করেছে। বাকি ১৪৬ আসনের অনেক আসনেই আবার একই দলের দুই প্রার্থী বা কোথাও কোথাও নামসর্বস্ব ডামি প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। যেসব নির্বাচনী এলাকায় জাপার প্রার্থী রয়েছেন, তারা নির্বাচন করবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও রিটার্নিং অফিসার অজ্ঞাত কারণে তা প্রত্যাহার করেননি। অনেক ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারদের বিরুদ্ধে আরপিও বা কমিশনের নির্দেশনা না মেনে সরকারি দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল এ উপমহাদেশে সংসদ নির্বাচন হয় উৎসবীয় আমেজে। তার জন্য প্রয়োজন হয় এমন সুশীল পরিবেশ, যে পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সুস্থ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্বাচনী প্রচারণা করে নির্বিঘ্নে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ নির্বাচনের বেলায় এসবের কিছুই হচ্ছে না। এখানে না আছে উল্লেখযোগ্য প্রার্থী, না আছে নির্বাচনী পরিবেশ। সহিংস রাজনৈতিক আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ ও নির্বাচন প্রতিহত করার বিরোধীদলীয় জোটের ঘোষণার বিপরীতে সংবিধানের দোহাই দিয়ে অনেকটা জোর করে সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এ তথাকথিত নির্বাচনের আয়োজন করছে। রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালিত হয়, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে প্রার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে কমিশন কর্মকর্তারা প্রার্থী ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন, এ নির্বাচনে এসব কিছুই এখন পর্যন্ত (২৪-১২-১৩) হয়নি।
দশম সংসদ নির্বাচনের নামে রকিব কমিশন এমনই এক নির্বাচন করতে যাচ্ছে যে, নির্বাচনে কেবল ভোটার এবং প্রার্থীরাই আগ্রহ হারাননি, আগ্রহ হারিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও। এ নির্বাচন যথাযথভাবে এবং অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না মনে করে এরই মধ্যে ইইউ ও কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষণযোগ্য গণ্য না করে এ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই রকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আমেরিকাও। অন্যান্য দেশী-বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও যে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ দেখাবে এমনটা মনে হয় না। কিন্তু কমিশনের হয়তো তাতে কিছুই আসে যায় না। তা না হলে গ্লোবাল ভিলেজে বাস করে ইসি কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ কী করে বলেন, ‘ইইউ পর্যবেক্ষক না পাঠালে তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের এ সিদ্ধান্ত নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, দুয়েকটি প্রতিবেশী দেশ ব্যতীত প্রায় সব দেশ যদি এ নির্বাচনকে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে এমন নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারকে তারা কতটা সহযোগিতা দেবে সে বিষয়ে ভাবার আছে। আলোচ্য নির্বাচনটি এমনই এক ব্যতিক্রমী নির্বাচন, যে নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগেও অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেনি, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেনি, এমনকি প্রার্থীদের অনেকেই নিরাপত্তাজনিত কারণে এলাকায় না গিয়ে রাজধানীতে অবস্থান করছেন।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের সঙ্গে কমিশনের কোনো বিরোধ দেখা যায় না। সরকার যেভাবে চাইছে কমিশন যেন সেভাবেই তার কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও সরকারি দলের মন ভরছে না। সম্প্রতি কমিশন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের দেয়া হলফনামার তথ্য প্রকাশ করায় সরকারদলীয় প্রার্থীরা কমিশনের ওপর নাখোশ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন কমিশনের প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য প্রকাশ করাকে অযৌক্তিক মনে করছেন। তাতো তারা করবেনই। কারণ, পাঁচ বছরে দলীয় অনেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও নেতার শত শতগুণ বর্ধিত সম্পদের তথ্য প্রকাশ পেলে যে দলীয় প্রার্থীদর ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়, তা অনুধাবনের মতো জ্ঞান তো সরকারদলীয় নেতাদের রয়েছে। সে কারণে আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন সমন্বয় উপকমিটি ২২ ডিসেম্বর সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে তাদের আপত্তি জানান। সিইসি এ আপত্তি আমলে না নিয়ে জোর গলায় বলতে পারতেন, প্রার্থীরা যদি অবৈধভাবে বিত্ত-বৈভবের মালিক না হন, তাহলে হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের তালিকা প্রকাশে তাদের অসুবিধা কোথায়? কিন্তু সরকারের প্রতি নতজানু সিইসি মহোদয় তা বলতে পারেননি। তিনি আওয়ামী লীগের উল্লিখিত আপত্তি আমলে নিয়ে কমিশনারদের সঙ্গে সলাপরামর্শ করে কীভাবে হলফনামার তথ্য প্রকাশ বন্ধ করা যায় তার উপায় অনুসন্ধান করছেন। সিইসির এমন নমনীয় ভূমিকায় অনেক দুর্নীতিবাজ এমপি খুশি হয়েছেন এবং পাঁচ বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া যেসব এমপির হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের তালিকা এখনও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি তারা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।
নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর একটি বড় দলের প্রধানকে বাড়ি থেকে র্যাব কেন এবং কীভাবে তুলে নিয়ে গেল এবং কমিশন এ ব্যাপারে কীভাবে নীরব থাকল সে রহস্যের উন্মোচন প্রয়োজন। কমিশন এমনই নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করেছে যে, নির্বাচনের আইন-শৃংখলা বৈঠকে যোগদানের জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ডিসি-এসপিদের পুলিশ প্রটেকশনে ঢাকায় আসতে হয়েছে। প্রথমবার ভোটার হওয়া লাখ লাখ তরুণ ভোটারকে ভোটবঞ্চিত করে কমিশন তাদের মন ভেঙে দিয়েছে। এভাবে রকিব কমিশনের কর্মকাণ্ড খুঁটিয়ে পরখ করে বলা যায়, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিশন অতীতের সব কমিশনের চেয়ে আকৃতিতে বড় হলেও সাহসিকতা, স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা ও মর্যাদার দিক থেকে এ কমিশন সব কমিশনের চেয়ে ছোট। এ কমিশন যদি দশম সংসদ নির্বাচন করে ফেলতে পারে, তাহলে সংসদীয় নির্বাচনের ইতিহাসে তা একটি নিকৃষ্ট নির্বাচনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
No comments