ব্যাংককে বিরোধীদের বাঙ্কার কর্মসূচি
থাইল্যান্ডে সরকার পতন আন্দোলন দমিয়ে দিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর বিক্ষিপ্তভাবে চোরাগোপ্তা হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। শনিবার রাজধানী ব্যাংককের প্রাণকেন্দ্র চামাই মারুচেট ব্রিজের বিক্ষোভ শিবিরে মধ্যরাতের হামলায় একজনের মৃত্যুর পর রোববার ফের হামলা চালানো হয়েছে। রোববার মাক খাওয়ান র্যাংসান ব্রিজ নামের বিক্ষোভকারীদের আরেকটি শিবির লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পাঁচজন আহত হয়। এ ঘটনার পর থেকেই নিজেদের জানমালের নিরাপত্তায় ব্যাংককে বাঙ্কার বা দুর্গ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিরোধীরা। বিক্ষোভকারীদের প্রতিটি অবস্থান শিবিরে এই ‘বাঙ্কার’ কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয়েছে। তবে স্বাভাবিক অর্থে বাঙ্কার বলতে যা বোঝায় এটি তা নয়। এর জন্য তারা কোনো খনন কর্মসূচি শুরু করেনি। পরিবর্তে আশ্রয় শিবির ঘিরে বালির বস্তার বড় বড় প্রাচীর তৈরি করছে বিরোধীরা। রাজধানীর উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোতে প্রাথমিকভাবে এই বাঙ্কার তৈরি করা হবে। আততায়ীদের হামলা আরও বাড়লে পরবর্তীতে আরও নিরাপত্তা প্রতিরোধ ব্যবস্থার পরিকল্পনা হাতে নেবে বিরোধীরা। প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বিবৃতি মোতাবেক,
রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অজ্ঞাত এক মোটরসাইকেল আরোহী মাক খাওয়ান ব্যাংসান ব্রিজ থেকে ইউনাইটেড ন্যাশন বিল্ডিং’র উদ্দেশে চলমান র্যালি লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-প্রধান কর্নেল সাঙ্গাপাল ওয়াথানাচাই বলেন, বিক্ষোভকারীদের উস্কে দেয়ার জন্য তৃতীয় কোনো শক্তি এই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এদিকে থাই সরকারি চাকরিজীবীদের সংগঠন ‘দ্য সিভিল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অব থাইল্যান্ড’ রোববার বিরোধীদের সঙ্গে একাÍতা ঘোষণা করে সরকারবিরোধীদের সংস্কার আন্দোলনের সমর্থন জানিয়েছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডে সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধাগুলো এলিট শ্রেণী থেকে নামিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা এবং জনগণের মাঝখান থেকে রাজনৈতিক নেতা থাকার প্রথাটির সংস্কার করতে হবে। জনগণ যেন সরাসরি সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে তাদের অভাব-অভিযোগ তুলে ধরতে পারে সে পথ খোলা রাখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর থেকে রাজনীতিবিদদের অবৈধ হস্তক্ষেপ দূর করতে হবে। তারা যেন সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
No comments