দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের তাণ্ডব- নৈতিকতার চরম ধস রোধ করতে হবে
গত মঙ্গলবার নয়া দিগন্তসহ বিভিন্ন পত্রিকায় একটি খবরÑ কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রামে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে সহোদর দুই বোনকে।
তাদের
ভাইকে গাছে বেঁধে রেখে দুর্বৃত্তরা এটা ঘটিয়েছে। একই দিনের কোনো কোনো
পত্রিকায় আরেকটি খবরÑ মুন্সীগঞ্জে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে এক কিশোরীকে
দুর্বৃত্তরা খুন করেছে। দুই হাত বাঁধা অবস্থায় তার লাশ একটি বিলে পড়ে
থাকতে দেখা যায়। এই দু’টি খবর নমুনা মাত্র। বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে দেখা
যাচ্ছে, প্রতিদিনই পত্রিকায় কয়েকটি খবর নারী ধর্ষণ, অপহরণ, পাশবিক
নির্যাতন ও হত্যার। গত কয়েক দিনে সংঘটিত এজাতীয় ঘটনার কয়েকটি হলোÑ
রাজধানীতে কাজী অফিসে কথিত প্রেমিক কর্তৃক কলেজছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপ, আরেক
তথাকথিত প্রেমিক কর্তৃক মেডিক্যাল ছাত্রীকে রেললাইনে ফেলে হত্যা, তোপখানা
রোডের একটি ভবন থেকে চরম নির্যাতিত কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার, গাজীপুরের
কাপাসিয়ায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মী কর্তৃক গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন ও ধর্ষণ,
টাঙ্গাইলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গরিবের মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও
অমানুষিক নির্যাতন, রংপুরে বিয়ের লোভ দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ,
সিরাজগঞ্জে যৌতুকলোভী স্বামী কর্তৃক তরুণী স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি।
রংপুরের ঘটনায় আসামিপক্ষ ধর্ষিতার বাড়িতে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি
দিয়েছে। কিছু দিন আগে ফরিদপুরের একটি গ্রামে সাধারণ ঘরের এক কিশোরীকে জনৈক
বখাটে যুবক দিনের পর দিন উত্ত্যক্ত করার একপর্যায়ে মেয়েটিকে জীবন দিতে
হলো। এ ঘটনা মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের সুবাদে জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি
করেছিল। কিছু দিন আগে রাজধানীর বিমানবন্দরের অদূরে, ব্র্যাকের কিনিকে
ধর্মভীরু মহিলা ডাক্তারের হত্যাকাণ্ড আরো মর্মান্তিক। একই প্রতিষ্ঠানের
জনৈক কর্মচারী সম্ভ্রম লুটতে ব্যর্থ হয়ে তাকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। এ
ঘটনাটি মিডিয়ায় তেমন গুরুত্ব না পাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন জেগেছে।
আজকাল পত্রিকার পাতা খুললেই প্রতিদিন নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ, যৌন হয়রানির কারণে আত্মহত্যা, স্বামী বা প্রেমিক কর্তৃক এসিড নিক্ষেপ ও খুন, ইত্যাদি মারাত্মক অপরাধের খবর দেখা যায়। এজাতীয় ঘটনার ওপর রিপোর্ট, ছবি, সম্পাদকীয়, নিবন্ধ, চিঠি, ফিচার প্রভৃতি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ ও পাশবিক হয়ে উঠেছে, তার প্রমাণ শিশুধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং কথিত প্রেমিকদের হাতে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা। গণধর্ষণের মতো চরম বর্বরতার নজির এখন ব্যাপক। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, প্রতিবেশী, খুব পরিচিত এমন লোকজনেরও পশুপ্রবৃত্তির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী নারীরা। ধর্ষণের পর হত্যা এবং লাশ বিকৃত ও ভস্মীভূত করতে নরপশুরা দ্বিধা করছে না। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো, অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষক, অপহরণকারী ও নির্যাতনকারী দুর্বৃত্তদের নারী সহযোগী রয়েছে, যারা এসব জঘন্য অপরাধ সংঘটনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। কোথাও কোথাও বয়স্ক লোকজনও শিশু-কিশোরীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনে মেতে উঠছে। ধর্ষিতা, নির্যাতিতা কিংবা অপহৃতার পরিবার মামলা করলে তারা হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে এজাতীয় ভয়াবহ অপরাধের মামলা না নিয়ে সংশ্লিষ্ট নরপশুদের বাঁচাতে ব্যতিব্যস্ত থাকে। অনেক সময় মোড়ল-মাতবররা সালিশের নামে কৌশলে অপরাধীদের বাঁচিয়ে উল্টো নির্যাতিত নারীর পরিবারকে লাঞ্ছিত করছে। এ অবস্থায় প্রকাশ্যে নারী অপহরণ এবং ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটাতে ও দুর্বৃত্তরা ভয় পাচ্ছে না।
এত আইনকানুন, লেখালেখি, বক্তৃতা-বিবৃতি সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি তো হচ্ছেই না, বরং যৌন অপরাধ তথা নারীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলেছে। যারা এসব অপকর্মে লিপ্ত, তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পর্কিতÑ হয় নেতাকর্মী, নতুবা সে মহলের আশীর্বাদপুষ্ট ঘনিষ্ঠজন। এবার ক্ষমতাসীন দলের একটি উপজেলা সভাপতি কর্তৃক ধর্ষণের খবরও পত্রিকায় এসেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা জানা যায়নি।
মূল্যবোধের চরম বিপর্যয়, নৈতিকতার নিদারুণ অভাব এবং অভাবনীয় চারিত্রিক অবক্ষয় আজকের এ অবস্থার কারণ। আইনের কড়াকড়ি এবং প্রশাসনের ত্বরিত পদক্ষেপ অবশ্যই জরুরি। তবে যৌন অপরাধের হিড়িক আর ধর্ষণের মহামারী রোধে এটা পর্যাপ্ত নয়। সর্বপ্লাবী অশ্লীলতার প্রতিরোধও সেই সাথে অপরিহার্য। সংস্কৃতি, ফ্যাশন, আধুনিকতা ও প্রগতির নামে নানাভাবে অশালীনতা ও অসভ্যতার জোয়ার চলছে। এর পেছনে রয়েছে সরকার ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগ, প্রভাব কিংবা অনুমোদন। এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি ক্রমাগত মানবিক মূল্যবোধকে হত্যা করে পাশবিক প্রবৃত্তি জোরদার করে চলেছে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে বিশেষত তরুণ ও যুবকদের মাঝে নীতিনৈতিকতার গুরুত্ব জাগ্রত করতে হবে। অপরাধ ও পাপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি থাকা অপরিহার্য। পরকালের চূড়ান্ত বিচারের ভয় না থাকলে ইহকালের প্রচলিত বিচার যৌন অপরাধসহ অন্যায়-অনাচারের মূলোৎপাটনে অপ্রতুল বলে প্রমাণিত হয়েছে।
আজকাল পত্রিকার পাতা খুললেই প্রতিদিন নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ, যৌন হয়রানির কারণে আত্মহত্যা, স্বামী বা প্রেমিক কর্তৃক এসিড নিক্ষেপ ও খুন, ইত্যাদি মারাত্মক অপরাধের খবর দেখা যায়। এজাতীয় ঘটনার ওপর রিপোর্ট, ছবি, সম্পাদকীয়, নিবন্ধ, চিঠি, ফিচার প্রভৃতি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ ও পাশবিক হয়ে উঠেছে, তার প্রমাণ শিশুধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং কথিত প্রেমিকদের হাতে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা। গণধর্ষণের মতো চরম বর্বরতার নজির এখন ব্যাপক। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, প্রতিবেশী, খুব পরিচিত এমন লোকজনেরও পশুপ্রবৃত্তির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী নারীরা। ধর্ষণের পর হত্যা এবং লাশ বিকৃত ও ভস্মীভূত করতে নরপশুরা দ্বিধা করছে না। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো, অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষক, অপহরণকারী ও নির্যাতনকারী দুর্বৃত্তদের নারী সহযোগী রয়েছে, যারা এসব জঘন্য অপরাধ সংঘটনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। কোথাও কোথাও বয়স্ক লোকজনও শিশু-কিশোরীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনে মেতে উঠছে। ধর্ষিতা, নির্যাতিতা কিংবা অপহৃতার পরিবার মামলা করলে তারা হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে এজাতীয় ভয়াবহ অপরাধের মামলা না নিয়ে সংশ্লিষ্ট নরপশুদের বাঁচাতে ব্যতিব্যস্ত থাকে। অনেক সময় মোড়ল-মাতবররা সালিশের নামে কৌশলে অপরাধীদের বাঁচিয়ে উল্টো নির্যাতিত নারীর পরিবারকে লাঞ্ছিত করছে। এ অবস্থায় প্রকাশ্যে নারী অপহরণ এবং ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটাতে ও দুর্বৃত্তরা ভয় পাচ্ছে না।
এত আইনকানুন, লেখালেখি, বক্তৃতা-বিবৃতি সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি তো হচ্ছেই না, বরং যৌন অপরাধ তথা নারীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলেছে। যারা এসব অপকর্মে লিপ্ত, তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পর্কিতÑ হয় নেতাকর্মী, নতুবা সে মহলের আশীর্বাদপুষ্ট ঘনিষ্ঠজন। এবার ক্ষমতাসীন দলের একটি উপজেলা সভাপতি কর্তৃক ধর্ষণের খবরও পত্রিকায় এসেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা জানা যায়নি।
মূল্যবোধের চরম বিপর্যয়, নৈতিকতার নিদারুণ অভাব এবং অভাবনীয় চারিত্রিক অবক্ষয় আজকের এ অবস্থার কারণ। আইনের কড়াকড়ি এবং প্রশাসনের ত্বরিত পদক্ষেপ অবশ্যই জরুরি। তবে যৌন অপরাধের হিড়িক আর ধর্ষণের মহামারী রোধে এটা পর্যাপ্ত নয়। সর্বপ্লাবী অশ্লীলতার প্রতিরোধও সেই সাথে অপরিহার্য। সংস্কৃতি, ফ্যাশন, আধুনিকতা ও প্রগতির নামে নানাভাবে অশালীনতা ও অসভ্যতার জোয়ার চলছে। এর পেছনে রয়েছে সরকার ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগ, প্রভাব কিংবা অনুমোদন। এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি ক্রমাগত মানবিক মূল্যবোধকে হত্যা করে পাশবিক প্রবৃত্তি জোরদার করে চলেছে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে বিশেষত তরুণ ও যুবকদের মাঝে নীতিনৈতিকতার গুরুত্ব জাগ্রত করতে হবে। অপরাধ ও পাপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি থাকা অপরিহার্য। পরকালের চূড়ান্ত বিচারের ভয় না থাকলে ইহকালের প্রচলিত বিচার যৌন অপরাধসহ অন্যায়-অনাচারের মূলোৎপাটনে অপ্রতুল বলে প্রমাণিত হয়েছে।
No comments