‘জোগালি’ মাসুদের এথেন্স জয়
এথেন্স থেকে বাহরাইন হয়ে ঢাকা হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর। সাড়ে সাত ঘণ্টার বিমান ভ্রমণের ক্লান্তি ছিল মাসুদ রানার চোখেমুখে। সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের রহস্য উপন্যাসের কোনো নায়ক নন, বাস্তবেই এখন নায়ক স্পেশাল অলিম্পিকে সোনাজয়ী ২০ বছরের যুবক। কাল ভোরে মাসুদকে যখন ফুলের তোড়া দিচ্ছিলেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী, তাঁর বাবা লোকমান মণ্ডল তখন বগুড়ায় রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করতেই মা কুলসুম বেগমের উত্তর, ‘হ। টিভিতে দেখছি আমার মাসুদরে। কী যে খুশি লাগছে।’ খুশি লাগারই কথা। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মাসুদকে দিয়ে যখন কিছুই হবে না ভেবেছিল প্রতিবেশীরা, তখনই সে দেখিয়ে দিল দেশকে সেও কিছু দিতে পারে!
মাসুদের এই প্রাপ্তির আড়ালে আছে এক করুণ গল্প। মাসুদ একজন নির্মাণশ্রমিক। বাবা লোকমান মণ্ডলের হাত ধরে সে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজে ঢোকেন। অভাবের সংসারে বাবার সঙ্গে মাসুদকেও প্রতিদিন রড-সিমেন্ট মাথায় তুলতে হয়, ইট ভাঙতে হয়। এমনকি স্পেশাল অলিম্পিকের অনুশীলন ক্যাম্পে বিকেএসপিতে যোগ দেওয়ার আগে বন্ধুদের সঙ্গেও জোগালির কাজ করতে হয়েছে ঢাকায়।
বাড়ি গাইবান্ধা হলেও মাসুদরা এখন বগুড়ায় থাকেন। অভাবের কারণে মাসুদের বাবা যখন কোনো দিশা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তখনই সপরিবারে চলে আসেন বগুড়ায়। সেটা বছর পাঁচেক আগের কথা। বাবার সঙ্গে কাজে গেলেও মাসুদের ইচ্ছে হতো স্কুলে যেতে। স্কুলের পোশাকে, বইয়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পাশ দিয়ে সমবয়সীরা গেলে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। কিন্তু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো স্কুলই তাঁকে ভর্তি করতে চাইত না। সেই কষ্টের কথা বলছিলেন মা কুলসুম বেগম, ‘ছেলের পড়াশোনার আগ্রহ দেখে স্কুলে নিয়ে যাই। কিন্তু প্রতিবন্ধী বলে কেউ ওকে নিতে চাইত না। পরে এক দারোগা সাহেবের বউয়ের পরামর্শে আমি বগুড়ায় প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করি ওকে। এরপর ঢাকা থেকে একদিন বড় স্যাররা আসেন। ওনারা আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে তোমার ছেলে কি খেলাধুলা পারে? আমি বললাম, ও তো ভালো সাঁতরাতে পারে। বাড়ির পাশে নদীতে ভালোই সাঁতরায়। এরপরই ওরা ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়।’
বাকি গল্পটা এখন ইতিহাস। সুইড স্কুলের সহায়তায় প্রশিক্ষণ নিয়ে এথেন্স স্পেশাল অলিম্পিকে গিয়েও ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে বাংলাদেশের হয়ে জেতে প্রথম সোনা। ২০০৭ সাংহাই গেমসেও এই ইভেন্টে রুপা জেতেন মাসুদ। কোচ গোলাম মোস্তফা মাসুদের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী, ‘ওর সঠিক পরিচর্যা হলে ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে ছেলেটা। এথেন্সে ওর পারফরম্যান্স ছিল দারুণ।’ জোগালির কাজ মোটেও ভালো লাগে না মাসুদের। পড়াশোনাতেই বেশি আগ্রহ। কাল ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে জানালেন, ‘আমি কাজ করতে চাই না, পড়তে চাই।’ কিন্তু মাসুদের পরিবারের যে অবস্থা তাতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। মাসুদের মায়ের দাবি, গতবার রুপা জেতার পর মাত্র ২ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এবারও কি ওই রকম একটা সংবর্ধনা আর নামমাত্র মূল্যের পুরস্কার জুটবে মাসুদের ভাগ্যে?
মুঠোফোনে যোগাযোগ করতেই মা কুলসুম বেগমের উত্তর, ‘হ। টিভিতে দেখছি আমার মাসুদরে। কী যে খুশি লাগছে।’ খুশি লাগারই কথা। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মাসুদকে দিয়ে যখন কিছুই হবে না ভেবেছিল প্রতিবেশীরা, তখনই সে দেখিয়ে দিল দেশকে সেও কিছু দিতে পারে!
মাসুদের এই প্রাপ্তির আড়ালে আছে এক করুণ গল্প। মাসুদ একজন নির্মাণশ্রমিক। বাবা লোকমান মণ্ডলের হাত ধরে সে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজে ঢোকেন। অভাবের সংসারে বাবার সঙ্গে মাসুদকেও প্রতিদিন রড-সিমেন্ট মাথায় তুলতে হয়, ইট ভাঙতে হয়। এমনকি স্পেশাল অলিম্পিকের অনুশীলন ক্যাম্পে বিকেএসপিতে যোগ দেওয়ার আগে বন্ধুদের সঙ্গেও জোগালির কাজ করতে হয়েছে ঢাকায়।
বাড়ি গাইবান্ধা হলেও মাসুদরা এখন বগুড়ায় থাকেন। অভাবের কারণে মাসুদের বাবা যখন কোনো দিশা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তখনই সপরিবারে চলে আসেন বগুড়ায়। সেটা বছর পাঁচেক আগের কথা। বাবার সঙ্গে কাজে গেলেও মাসুদের ইচ্ছে হতো স্কুলে যেতে। স্কুলের পোশাকে, বইয়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পাশ দিয়ে সমবয়সীরা গেলে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। কিন্তু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো স্কুলই তাঁকে ভর্তি করতে চাইত না। সেই কষ্টের কথা বলছিলেন মা কুলসুম বেগম, ‘ছেলের পড়াশোনার আগ্রহ দেখে স্কুলে নিয়ে যাই। কিন্তু প্রতিবন্ধী বলে কেউ ওকে নিতে চাইত না। পরে এক দারোগা সাহেবের বউয়ের পরামর্শে আমি বগুড়ায় প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করি ওকে। এরপর ঢাকা থেকে একদিন বড় স্যাররা আসেন। ওনারা আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে তোমার ছেলে কি খেলাধুলা পারে? আমি বললাম, ও তো ভালো সাঁতরাতে পারে। বাড়ির পাশে নদীতে ভালোই সাঁতরায়। এরপরই ওরা ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়।’
বাকি গল্পটা এখন ইতিহাস। সুইড স্কুলের সহায়তায় প্রশিক্ষণ নিয়ে এথেন্স স্পেশাল অলিম্পিকে গিয়েও ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে বাংলাদেশের হয়ে জেতে প্রথম সোনা। ২০০৭ সাংহাই গেমসেও এই ইভেন্টে রুপা জেতেন মাসুদ। কোচ গোলাম মোস্তফা মাসুদের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী, ‘ওর সঠিক পরিচর্যা হলে ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে ছেলেটা। এথেন্সে ওর পারফরম্যান্স ছিল দারুণ।’ জোগালির কাজ মোটেও ভালো লাগে না মাসুদের। পড়াশোনাতেই বেশি আগ্রহ। কাল ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে জানালেন, ‘আমি কাজ করতে চাই না, পড়তে চাই।’ কিন্তু মাসুদের পরিবারের যে অবস্থা তাতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল। মাসুদের মায়ের দাবি, গতবার রুপা জেতার পর মাত্র ২ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এবারও কি ওই রকম একটা সংবর্ধনা আর নামমাত্র মূল্যের পুরস্কার জুটবে মাসুদের ভাগ্যে?
No comments