গরম মসলার বাজার বেজায় গরম
কেরালার ভান্দানমিডু ও তামিলনাড়ুর বদিন্যকানু আড়তে আসা এলাচি চাষিরা অনেক মাস ধরেই বেজায় খুশি। সেখানে সাপ্তাহিক নিলামে মসলাটির দাম বাড়ছে আর বাড়ছে। ঢাকার শেয়ারবাজারের মতো রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙছে এলাচির দর। জুনের শেষে এক হাজার ৯৫০ রুপি ছুঁয়েছিল কেরালার বিখ্যাত অ্যালেপ্পি গ্রিন জাতের এলাচির কেজি। এমন দর কখনো দেখেনি কেউ।
লাগাতার দাম বাড়ছে। আগেও জোগান কমে গেলে দাম বাড়ত। তবে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও আমদানির কারণে সরবরাহ বাড়লে দু-চার মাসের মধ্যেই আবার কমে যেত। কিন্তু এবার হচ্ছে না। কারণ দুই বছর ধরে গুয়াতেমালায় এলাচি উৎপাদন মার খাচ্ছে। এল নিনোর প্রভাবে কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো অতিবৃষ্টি ও বন্যায় গুয়াতেমালার এলাচি চাষ বিঘ্নিত হওয়ায় ভারতীয় এলাচির এখন পোয়াবারো।
আগের কয়েক বছরে গুয়াতেমালা থেকে কম দামে রপ্তানি করা এলাচি বিশ্ববাজারে ভারতীয় এলাচির বারোটা বাজিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে সৌদি আরবের মানুষ এলাচি দিয়ে লাল চায় খায়, তাই সেটি এলাচির বড় বাজার। সেখানেও ভারতীয় এলাচি গুয়াতেমালার কাছে মার খেয়েছিল। এবার গুয়াতেমালার রপ্তানি কমায় ভারতীয় এলাচির চাহিদা সব বাজারেই বেড়েছে। তাই পর্যাপ্ত জোগানের অভাবে দামও চড়েছে।
ভারতে চলতি মৌসুমে এলাচি উৎপাদন নয় হাজার টনের বেশি। নিজেরা খেয়ে রপ্তানি করেছে এক হাজার ৭৫০ টনেরও বেশি। এর অনেকটা অবশ্যই এসেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা এক দশক ধরে গুয়াতেমালা যেতে শিখেছিলেন এলাচি আনতে। এবার সেখানে জোগান কমে যাওয়ায় বেশি দামে আনতে হচ্ছে ভারতসহ অন্য সূত্র থেকে। তাই এলাচির দর এত চড়া।
রমজান মাসের দুই সপ্তাহ পার হয়েছে, অনেকেই আগাম ঈদের বাজার শুরু করেছেন আর হতবাক হচ্ছেন এলাচির কেজি দুই হাজার ৯০০ টাকা দেখে। গত ঈদের আগে এলাচি ছিল এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে।
শুধু এলাচি নয়, লবঙ্গসহ অন্যান্য গরম মসলার বাজারও এবার বেজায় গরম। লবঙ্গ এবার ৮০০ টাকা কেজি, যা গতবারের প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।
এখানেও বৈরী প্রকৃতি। বিশ্বের অন্যতম লবঙ্গ উৎপাদক মাদাগাস্কারের চাষ লন্ডভন্ড হয়েছে পোকার আক্রমণে। দুই সপ্তাহ আগে খোদ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে, লুকাস্ট পোকার আক্রমণে লবঙ্গের ফলন বিপন্ন হয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে সাড়ে চার লাখ গ্রামীণ মালাগাছি চাষি পরিবার; যারা ধান, কফি ও লবঙ্গ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
লবঙ্গের বাজারে অবশ্য ভারতের প্রভার নেই। কারণ সে নিজেই আমদানি করে বেশির ভাগ চাহিদা মেটায়। তবে বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামী জানুয়ারিতে মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলের ফলন বাজারে না আসা পর্যন্ত বলা যাবে না লবঙ্গের কী হবে। বিশ্ববাজারে প্রতি টন লবঙ্গ জাতভেদে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে এখন। এই দর আর শুল্ক দিয়ে বর্তমান বাজারদর থেকে কম দামে লবঙ্গ বেচা সত্যিই কষ্টকর। তবে মসলার আমদানিতে ‘আন্ডার-ইনভয়েসিং ও মিস-ডিক্লারেশন’ করে আমদানি খরচ কমানো হয় অহরহ। তবে তার সুফল ক্রেতারা পাচ্ছেন না এবার।
মৌলভীবাজার ও খাতুনগঞ্জভিত্তিক গুটিকয়েক আমদানিকারক নিয়ন্ত্রণ করেন মসলার সরবরাহ ও মূল্য। তাদের অনেকেই আবার মসলা আনেন চীন ও দুবাইভিত্তিক মধ্যস্বত্বভোগী রপ্তানিকারকদের থেকে, যারা কিনা ভিয়েতনামের গোলমরিচ কিংবা ব্রাজিলের লবঙ্গের মজুদদার। তাদের মুনাফাও বাংলাদেশের ভোক্তাদের পকেট থেকে যায়।
শুধু ঈদ নয়, বাজার বলছে আমাদের গরম মসলার ভোগ বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে, মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ, মাংস, মিষ্টান্ন ভোগ বাড়ছে সারা বছর ধরে। ফলে বাজারও বাড়ছে। এই বাজারটি প্রায় শতভাগ আমদানিনির্ভর। তাই গুয়াতেমালায় এল নিনো বাংলাদেশে প্রভাব ফেলবে, মালাগাছির পোকা এ দেশের ক্রেতার পকেট কাটবে।
তবে সব পণ্যেরই বিকল্প সূত্র থাকে। তার সঙ্গে আমদানিকারকদের যোগাযোগে ভূমিকা রাখতে পারে সরকার আর নজরদারি করতে পারে যাতে আমদানিমূল্যের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি না হয় গরম মসলা।
লাগাতার দাম বাড়ছে। আগেও জোগান কমে গেলে দাম বাড়ত। তবে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও আমদানির কারণে সরবরাহ বাড়লে দু-চার মাসের মধ্যেই আবার কমে যেত। কিন্তু এবার হচ্ছে না। কারণ দুই বছর ধরে গুয়াতেমালায় এলাচি উৎপাদন মার খাচ্ছে। এল নিনোর প্রভাবে কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো অতিবৃষ্টি ও বন্যায় গুয়াতেমালার এলাচি চাষ বিঘ্নিত হওয়ায় ভারতীয় এলাচির এখন পোয়াবারো।
আগের কয়েক বছরে গুয়াতেমালা থেকে কম দামে রপ্তানি করা এলাচি বিশ্ববাজারে ভারতীয় এলাচির বারোটা বাজিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে সৌদি আরবের মানুষ এলাচি দিয়ে লাল চায় খায়, তাই সেটি এলাচির বড় বাজার। সেখানেও ভারতীয় এলাচি গুয়াতেমালার কাছে মার খেয়েছিল। এবার গুয়াতেমালার রপ্তানি কমায় ভারতীয় এলাচির চাহিদা সব বাজারেই বেড়েছে। তাই পর্যাপ্ত জোগানের অভাবে দামও চড়েছে।
ভারতে চলতি মৌসুমে এলাচি উৎপাদন নয় হাজার টনের বেশি। নিজেরা খেয়ে রপ্তানি করেছে এক হাজার ৭৫০ টনেরও বেশি। এর অনেকটা অবশ্যই এসেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা এক দশক ধরে গুয়াতেমালা যেতে শিখেছিলেন এলাচি আনতে। এবার সেখানে জোগান কমে যাওয়ায় বেশি দামে আনতে হচ্ছে ভারতসহ অন্য সূত্র থেকে। তাই এলাচির দর এত চড়া।
রমজান মাসের দুই সপ্তাহ পার হয়েছে, অনেকেই আগাম ঈদের বাজার শুরু করেছেন আর হতবাক হচ্ছেন এলাচির কেজি দুই হাজার ৯০০ টাকা দেখে। গত ঈদের আগে এলাচি ছিল এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে।
শুধু এলাচি নয়, লবঙ্গসহ অন্যান্য গরম মসলার বাজারও এবার বেজায় গরম। লবঙ্গ এবার ৮০০ টাকা কেজি, যা গতবারের প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।
এখানেও বৈরী প্রকৃতি। বিশ্বের অন্যতম লবঙ্গ উৎপাদক মাদাগাস্কারের চাষ লন্ডভন্ড হয়েছে পোকার আক্রমণে। দুই সপ্তাহ আগে খোদ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে, লুকাস্ট পোকার আক্রমণে লবঙ্গের ফলন বিপন্ন হয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে সাড়ে চার লাখ গ্রামীণ মালাগাছি চাষি পরিবার; যারা ধান, কফি ও লবঙ্গ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
লবঙ্গের বাজারে অবশ্য ভারতের প্রভার নেই। কারণ সে নিজেই আমদানি করে বেশির ভাগ চাহিদা মেটায়। তবে বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামী জানুয়ারিতে মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলের ফলন বাজারে না আসা পর্যন্ত বলা যাবে না লবঙ্গের কী হবে। বিশ্ববাজারে প্রতি টন লবঙ্গ জাতভেদে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে এখন। এই দর আর শুল্ক দিয়ে বর্তমান বাজারদর থেকে কম দামে লবঙ্গ বেচা সত্যিই কষ্টকর। তবে মসলার আমদানিতে ‘আন্ডার-ইনভয়েসিং ও মিস-ডিক্লারেশন’ করে আমদানি খরচ কমানো হয় অহরহ। তবে তার সুফল ক্রেতারা পাচ্ছেন না এবার।
মৌলভীবাজার ও খাতুনগঞ্জভিত্তিক গুটিকয়েক আমদানিকারক নিয়ন্ত্রণ করেন মসলার সরবরাহ ও মূল্য। তাদের অনেকেই আবার মসলা আনেন চীন ও দুবাইভিত্তিক মধ্যস্বত্বভোগী রপ্তানিকারকদের থেকে, যারা কিনা ভিয়েতনামের গোলমরিচ কিংবা ব্রাজিলের লবঙ্গের মজুদদার। তাদের মুনাফাও বাংলাদেশের ভোক্তাদের পকেট থেকে যায়।
শুধু ঈদ নয়, বাজার বলছে আমাদের গরম মসলার ভোগ বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে, মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ, মাংস, মিষ্টান্ন ভোগ বাড়ছে সারা বছর ধরে। ফলে বাজারও বাড়ছে। এই বাজারটি প্রায় শতভাগ আমদানিনির্ভর। তাই গুয়াতেমালায় এল নিনো বাংলাদেশে প্রভাব ফেলবে, মালাগাছির পোকা এ দেশের ক্রেতার পকেট কাটবে।
তবে সব পণ্যেরই বিকল্প সূত্র থাকে। তার সঙ্গে আমদানিকারকদের যোগাযোগে ভূমিকা রাখতে পারে সরকার আর নজরদারি করতে পারে যাতে আমদানিমূল্যের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি না হয় গরম মসলা।
No comments