ঢাকায় আর্মেনিয়ান গির্জা দেখভালের দায়িত্বে হিন্দু ও মুসলমানরা by শফিক রহমান
পুরান
ঢাকার চকবাজার এলাকার দোকানগুলো থেকে ভেসে আসা কেমিকেল ও পারফিউমের সৌরভ
গায়ে মেখে আর্মেনিয়ান স্ট্রীট ধরে একটু এগিয়ে গেলেই রাস্তার পাশ ঘেষে বড়
একটি গেট হাউজ। গেট হাউজটি পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে অষ্টাদশ শতকে
নির্মিত ‘চার্চ অব হলি রিজারেকেশন’। ঢাকায় ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যে কয়টি
স্থাপনা সগৌরবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে ১৭৮১ সালে
আর্মেনিয়ানদের নির্মিত এই চার্চটিও অন্যতম। স্থানীয়দের কাছে যেটি
‘আর্মেনিয়ান চার্চ’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে ঢাকায় আর কোন
আর্মেনিয়ান না থাকায় গির্জাটির দেখাশুনা এবং পরিচালনার দায়িত্ব বাংলাদেশি
হিন্দু ও মুসলমানদের হাতে।
তাদের একজন প্রায় ষাট বছর বয়সী শংকর ঘোষ। যিনি ৩২ বছরে ধরে যুক্ত আছেন চার্চটির পরিচর্যার সঙ্গে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে গির্জা-পালকের (ওয়ার্ডেন) অনুপস্থিতিতে তিনিই এখন চার্চটির দেখাশুনার দায়িত্বপালন করছেন। সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েকজন। তবে গত বছর দুয়েক হলো শংকর ঘোষদের কাজ ও চার্চটির তদারক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত জনৈক আর্মেনীয় আর্মেন আর্স্লেনিয়ান। ব্যবসার কাজে প্রায়ই তিনি ঢাকা আসেন। খোঁজ-খবর নেন। কার্যত তিনিই এখন চার্চটির ওয়ার্ডেন।
এর আগে সর্ব শেষ গির্জা-পালক (ওয়ার্ডেন) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মাইকেল জোসেফ মার্টিন। ১৯৪২ সালে তার বাবার পথ অনুসরণ করে তিনি বাংলাদেশের এই অংশে এসেছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে কানাডাতে মেয়েদের সঙ্গে বসবাস করছেন মার্টিন এবং এর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে আর্মেনীয়দের সম্পর্কের শেষ সূত্রটি হারিয়ে যায়। এর আগে তার অবর্তমানে কে এই গির্জার দেখাশোনার ভার নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সংস্থা এএফপি’কে মাইকেল জোসেফ মার্টিন বলেছিলেন, ঈশ্বর কখনোই এরকম একটি স্থানকে অরক্ষিত আর অযত্নে পড়ে থাকতে দিতে পারেন না।
এর আগে ১৯৯১ সালে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা নেফিয়েট স্টেফানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আর্মেনীয়দের সম্পর্কের শেষ সূত্রটি হারিয়ে যায়।
তাদের একজন প্রায় ষাট বছর বয়সী শংকর ঘোষ। যিনি ৩২ বছরে ধরে যুক্ত আছেন চার্চটির পরিচর্যার সঙ্গে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে গির্জা-পালকের (ওয়ার্ডেন) অনুপস্থিতিতে তিনিই এখন চার্চটির দেখাশুনার দায়িত্বপালন করছেন। সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েকজন। তবে গত বছর দুয়েক হলো শংকর ঘোষদের কাজ ও চার্চটির তদারক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত জনৈক আর্মেনীয় আর্মেন আর্স্লেনিয়ান। ব্যবসার কাজে প্রায়ই তিনি ঢাকা আসেন। খোঁজ-খবর নেন। কার্যত তিনিই এখন চার্চটির ওয়ার্ডেন।
এর আগে সর্ব শেষ গির্জা-পালক (ওয়ার্ডেন) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মাইকেল জোসেফ মার্টিন। ১৯৪২ সালে তার বাবার পথ অনুসরণ করে তিনি বাংলাদেশের এই অংশে এসেছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে কানাডাতে মেয়েদের সঙ্গে বসবাস করছেন মার্টিন এবং এর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে আর্মেনীয়দের সম্পর্কের শেষ সূত্রটি হারিয়ে যায়। এর আগে তার অবর্তমানে কে এই গির্জার দেখাশোনার ভার নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সংস্থা এএফপি’কে মাইকেল জোসেফ মার্টিন বলেছিলেন, ঈশ্বর কখনোই এরকম একটি স্থানকে অরক্ষিত আর অযত্নে পড়ে থাকতে দিতে পারেন না।
এর আগে ১৯৯১ সালে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা নেফিয়েট স্টেফানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আর্মেনীয়দের সম্পর্কের শেষ সূত্রটি হারিয়ে যায়।
ঢাকায় অষ্টাদশ শতকে নির্মিত আর্মেনিয়ান গির্জা ‘চার্চ অব হলি রিজারেকেশন’ |
ঢাকায়
আর্মেনিয়ানদের আগমনের সঠিক সময়টি না জানা গেলেও বাংলায় বিশেষ করে কলকাতায়
তাদের আগমন ঘটে ১৬৪৫ সালে। পরে তারা হুগলি, চুঁচুড়া, সায়দাবাদ (রাজধানী
মুর্শিদাবাদের উপকণ্ঠে একটি শহরতলি), মুর্শিদাবাদ, কাসিমবাজার এবং বাংলার
আরও কিছু বাণিজ্যকেন্দ্রে তাদের বসতি প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু তাদের শক্ত
ঘাঁটি ছিল ঢাকায়। মোঘল আমল ছাপিয়ে কোম্পানি আমল এবং ব্রিটিশ আমলেও
অর্থে-বিত্তে এবং প্রভাব-প্রতিপত্তিতে তারা ছিলেন শীর্ষে। বিশেষ করে
অষ্টাদশ শতকে লবণ ব্যবসা ছিলো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া দখলে। লবণ
উৎপাদন ও বিতরণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করতো কোম্পানি। আর পূর্ববঙ্গে লবণের
ঠিকাদারদের অধিকাংশই ছিলেন আর্মেনীয়রা। ঠিকাদারি ছাড়াও পান, পাট ও কাপড়ের
ব্যবসায় ছিলো তাদের কর্তৃত্ব। জমিদারীও ছিলো অনেকের।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮৭৪-৭৫ সালে ঢাকা পৌরসভার নয়জন কমিশনারের মধ্যে দুইজনই ছিলেন আর্মেনীয়। তারা হলেন জে জি এন পোগজ এবং এন পি পোগজ। এদের মধ্যে এন পি পোগজ যাঁর পুরো নাম নিকোলাস পিটার পোগজ ১৮৪৮ সালে ঢাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তখন স্কুলটির নাম ছিল পোগোজ অ্যাংলো-ভারনাকুলার স্কুল। শুরু থেকে তিন দফায় স্থানান্তর শেষে চিত্তরঞ্জন এভিনিউর বর্তমান ঠিকানায় থিতু হয়েছে। এটির এখনকার নাম পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ।
এছাড়া আরও প্রভাবশালী পরিবার হিসেবে যে কয়েকটি আর্মেনীয় পরিবারের নাম পাওয়া যায় সেগুলো হলো- আরাতুন, পানিয়াটি, স্টিফান, লুকাস, কোজা মাইকেল, মানুক, হার্নি, সিরকোর এবং সার্কিস। এসব ধনী আর্মেনীয়নরা ঢাকায় নিজেদের থাকার জন্য তৈরি করেছিলেন প্রাসাদতুল্য সব বাড়ি। যেমন ফরাসগঞ্জের বর্তমান রূপলাল হাউস ছিলো আরাতুনের। মানুক থাকতেন সদরঘাটে। বর্তমানে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) যে বাড়িতে সেটি ছিলো নিকি পোগজের। পরে আর্মেনিটোলায় নির্মিত হয়েছিলো ‘নিকি সাহেবের কুঠি’। আনন্দরায় স্ট্রিটে ছিলো স্টিফানের বাড়ি।
আর শহরের যে এলাকাটিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আর্মেনিয়ানদের বসবাস ছিল সেটি পরিচিতি পায় ‘আর্মেনিটোলা’ হিসেবে। যার পূর্ব নাম ছিল ‘মহল্লা আলে আবু সাঈদ’। ওই এলাকাতেই গীর্জা নির্মাণ এবং তাদের কবরস্থানের জন্য জমি দান করেন আগা মিনাস ক্যাটচিক নামের এক আর্মেনীয়। ১৭৮১ সালে আর্মেনিয়ান এপোস্টলিক চার্চের অধীনে নির্মিত এই গির্জাটি লম্বায় সাড়ে সাতশো ফুট। আমের্নীয়দের নিজস্ব স্থাপত্য রীতি অনুসরণ করে নির্মিত চারদিকে উচু প্রাচীরবেষ্টিত এ গির্জার প্রবেশ পথটি (গেট হাউজ) বিশাল ও কারুকার্যময়। গির্জার পেছনটা পুর্বদিকে এবং সম্মুখের অংশটি পশ্চিম দিকে। ২০০ ফিট উচু অত্যন্ত আকর্ষণীয় মিনারটি চারস্তরে বিভক্ত। গির্জার ভেতরে মঞ্চের ওপর যিশু খ্রিস্টের বিশাল ছবি এবং যারা প্রার্থনা করতে যেতেন তাদের বসার জন্য রয়েছে সুন্দর কারুকার্যময় স্থান। এছাড়া রয়েছে ওপরে ওঠার জন্য সুদৃশ্য প্যাচানো কাঠের একটি সিঁড়ি। গির্জাটির প্রবেশ পথ ৪টি এবং জানালা ১৭টি।
১৮৩৭ সালে গির্জার পশ্চিম পার্শ্বে একটি ক্লক টাওয়ার নির্মাণ করা হয়। যেটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন জোহানস কারু পিয়েত সার্কিস। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে টাওয়ারটি ভেঙে যায়। পরে সেটা আর মেরামত করা হয়নি। যদিও এর আগেই ১৮৮০ সালের দিকে গীর্জার ওই বিখ্যাত ঘরিটি বন্ধ হয়ে যায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮৭৪-৭৫ সালে ঢাকা পৌরসভার নয়জন কমিশনারের মধ্যে দুইজনই ছিলেন আর্মেনীয়। তারা হলেন জে জি এন পোগজ এবং এন পি পোগজ। এদের মধ্যে এন পি পোগজ যাঁর পুরো নাম নিকোলাস পিটার পোগজ ১৮৪৮ সালে ঢাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তখন স্কুলটির নাম ছিল পোগোজ অ্যাংলো-ভারনাকুলার স্কুল। শুরু থেকে তিন দফায় স্থানান্তর শেষে চিত্তরঞ্জন এভিনিউর বর্তমান ঠিকানায় থিতু হয়েছে। এটির এখনকার নাম পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ।
এছাড়া আরও প্রভাবশালী পরিবার হিসেবে যে কয়েকটি আর্মেনীয় পরিবারের নাম পাওয়া যায় সেগুলো হলো- আরাতুন, পানিয়াটি, স্টিফান, লুকাস, কোজা মাইকেল, মানুক, হার্নি, সিরকোর এবং সার্কিস। এসব ধনী আর্মেনীয়নরা ঢাকায় নিজেদের থাকার জন্য তৈরি করেছিলেন প্রাসাদতুল্য সব বাড়ি। যেমন ফরাসগঞ্জের বর্তমান রূপলাল হাউস ছিলো আরাতুনের। মানুক থাকতেন সদরঘাটে। বর্তমানে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) যে বাড়িতে সেটি ছিলো নিকি পোগজের। পরে আর্মেনিটোলায় নির্মিত হয়েছিলো ‘নিকি সাহেবের কুঠি’। আনন্দরায় স্ট্রিটে ছিলো স্টিফানের বাড়ি।
আর শহরের যে এলাকাটিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আর্মেনিয়ানদের বসবাস ছিল সেটি পরিচিতি পায় ‘আর্মেনিটোলা’ হিসেবে। যার পূর্ব নাম ছিল ‘মহল্লা আলে আবু সাঈদ’। ওই এলাকাতেই গীর্জা নির্মাণ এবং তাদের কবরস্থানের জন্য জমি দান করেন আগা মিনাস ক্যাটচিক নামের এক আর্মেনীয়। ১৭৮১ সালে আর্মেনিয়ান এপোস্টলিক চার্চের অধীনে নির্মিত এই গির্জাটি লম্বায় সাড়ে সাতশো ফুট। আমের্নীয়দের নিজস্ব স্থাপত্য রীতি অনুসরণ করে নির্মিত চারদিকে উচু প্রাচীরবেষ্টিত এ গির্জার প্রবেশ পথটি (গেট হাউজ) বিশাল ও কারুকার্যময়। গির্জার পেছনটা পুর্বদিকে এবং সম্মুখের অংশটি পশ্চিম দিকে। ২০০ ফিট উচু অত্যন্ত আকর্ষণীয় মিনারটি চারস্তরে বিভক্ত। গির্জার ভেতরে মঞ্চের ওপর যিশু খ্রিস্টের বিশাল ছবি এবং যারা প্রার্থনা করতে যেতেন তাদের বসার জন্য রয়েছে সুন্দর কারুকার্যময় স্থান। এছাড়া রয়েছে ওপরে ওঠার জন্য সুদৃশ্য প্যাচানো কাঠের একটি সিঁড়ি। গির্জাটির প্রবেশ পথ ৪টি এবং জানালা ১৭টি।
১৮৩৭ সালে গির্জার পশ্চিম পার্শ্বে একটি ক্লক টাওয়ার নির্মাণ করা হয়। যেটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন জোহানস কারু পিয়েত সার্কিস। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে টাওয়ারটি ভেঙে যায়। পরে সেটা আর মেরামত করা হয়নি। যদিও এর আগেই ১৮৮০ সালের দিকে গীর্জার ওই বিখ্যাত ঘরিটি বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকার আর্মেনিটোলায় আর্মেনিয়ান গির্জার অভ্যন্তরভাগ |
ইতিহাস
বিবেচনায় গির্জাটির গুরুত্ব বাড়ছে দেশি-বিদেশি নানা পেশার লোকদের কাছে।
প্রতিনিয়ত তারা ভীর করছেন গির্জার প্রাঙ্গণ, বারান্দা ও হল ঘরে। কেউ কাঠের
প্যাচানো সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় গির্জাটির
প্রার্থনা কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়েছে। চলতি ২০১৯ সালে সর্বশেষ
প্রার্থনা হয়েছে জানুয়ারি মাসে এবং দীর্ঘ ৫৫ বছর পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এক
ক্যাথলিক দম্পতির বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এর আগে সর্বশেষ ১৯৬৪ সালে
আর্মেনিয়ান চার্চে বিবাহ অনুষ্ঠান হয়েছিলো।
বর্তমানে চার্চটির কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো ‘মাইকেল জোসেফ মার্টিন ফুড প্রোগ্রাম’। এ কর্মসূচির আওতায় মাসের প্রতি শুক্রবার স্থানীয় ক্ষুধার্ত গরিবদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয় এবং শিশুদের দেয়া হয় দুধ। ২০১৬ সাল থেকে এ কর্মসূচি চালু রয়েছে।
চার্চটিতে অনিয়মিত যে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় তা করান ঢাকার তেজগাঁওয়ের রোমান ক্যাথলিক পুরোহিতরা। জানা গেছে, আর্মেনীয়রা ঢাকায় থিতু হওয়ার শুরুর দিকে তারা তেজগাঁওয়ের ওই রোমান ক্যাথলিকদের হলি রোজারি চার্চ (Holy Rosary Church) ব্যাবহার করতেন এবং তার পাশেই মৃত আর্মেনীয়দের কবর দেয়া হতো। হলি রোজারি চার্চটি নির্মিত হয় ১৬৭৭ সালে।
পরে আর্মেনিটোলায় গির্জাটি নির্মিত হওয়ায় আর্মেনিয়ানদের ধর্মানুষ্ঠান পালন সহজ হয় এবং কবরস্থান সমস্যারও সমাধান হয়। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে গির্জাটির উত্তর, পূর্ব দিকে এবং দক্ষিণ অংশের প্রাঙ্গণ এমনকি বারান্দার মেঝেতেও প্রচুর সমাধিফলক। অধিকাংশ এপিটাফ বা স্মৃতিফলকে উদ্ধৃত রয়েছে ধর্মগ্রন্থের বাণী, মৃতের নাম-পরিচয়, জন্ম-মৃত্যুর সাল ও তারিখ। এক্ষেত্রে বারান্দার গা ঘেষে থাকা যে স্মৃতিফলকটি সবার নজর কাড়ে সেটি হলো এভিয়েটর গ্রেগরির সমাধি (Avietter Gregory)। তিনি ছিলেন ওই সময়ে ঢাকার সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। স্মৃতিফলক অনুযায়ী ১০৮ বছর ৪ মাস ৪ দিন বয়সে মারা যান তিনি। স্মৃতিফলকে লেখা রয়েছে, “To the Memory of Avietter Gregory ESQre 9th May 1862 at Dacca of which was an old resident at the advanced age of 108 years 4 months and 4 days.”
ওখানেই রয়েছে পোগজ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সেই নিকোলাস পিটার পোগজের সমাধি। এছাড়া জনৈক ক্যাটচিক আভেটিক থমাসের (Chtchick Avietick Thomas) সমাধির ওপর তাঁর স্ত্রী কলকাতা থেকে কিনে এনে বসিয়েছিলেন সুন্দর এক মূর্তি, যা এখনো টিকে আছে। এপিটাফে তিনি তার স্বামীকে উল্লেখ করেছেন, “A fond wife’s tribute to her deeply mourned and best of husbands Chtchick Avietick Thomas.” #
বর্তমানে চার্চটির কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো ‘মাইকেল জোসেফ মার্টিন ফুড প্রোগ্রাম’। এ কর্মসূচির আওতায় মাসের প্রতি শুক্রবার স্থানীয় ক্ষুধার্ত গরিবদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয় এবং শিশুদের দেয়া হয় দুধ। ২০১৬ সাল থেকে এ কর্মসূচি চালু রয়েছে।
চার্চটিতে অনিয়মিত যে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় তা করান ঢাকার তেজগাঁওয়ের রোমান ক্যাথলিক পুরোহিতরা। জানা গেছে, আর্মেনীয়রা ঢাকায় থিতু হওয়ার শুরুর দিকে তারা তেজগাঁওয়ের ওই রোমান ক্যাথলিকদের হলি রোজারি চার্চ (Holy Rosary Church) ব্যাবহার করতেন এবং তার পাশেই মৃত আর্মেনীয়দের কবর দেয়া হতো। হলি রোজারি চার্চটি নির্মিত হয় ১৬৭৭ সালে।
পরে আর্মেনিটোলায় গির্জাটি নির্মিত হওয়ায় আর্মেনিয়ানদের ধর্মানুষ্ঠান পালন সহজ হয় এবং কবরস্থান সমস্যারও সমাধান হয়। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে গির্জাটির উত্তর, পূর্ব দিকে এবং দক্ষিণ অংশের প্রাঙ্গণ এমনকি বারান্দার মেঝেতেও প্রচুর সমাধিফলক। অধিকাংশ এপিটাফ বা স্মৃতিফলকে উদ্ধৃত রয়েছে ধর্মগ্রন্থের বাণী, মৃতের নাম-পরিচয়, জন্ম-মৃত্যুর সাল ও তারিখ। এক্ষেত্রে বারান্দার গা ঘেষে থাকা যে স্মৃতিফলকটি সবার নজর কাড়ে সেটি হলো এভিয়েটর গ্রেগরির সমাধি (Avietter Gregory)। তিনি ছিলেন ওই সময়ে ঢাকার সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। স্মৃতিফলক অনুযায়ী ১০৮ বছর ৪ মাস ৪ দিন বয়সে মারা যান তিনি। স্মৃতিফলকে লেখা রয়েছে, “To the Memory of Avietter Gregory ESQre 9th May 1862 at Dacca of which was an old resident at the advanced age of 108 years 4 months and 4 days.”
ওখানেই রয়েছে পোগজ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সেই নিকোলাস পিটার পোগজের সমাধি। এছাড়া জনৈক ক্যাটচিক আভেটিক থমাসের (Chtchick Avietick Thomas) সমাধির ওপর তাঁর স্ত্রী কলকাতা থেকে কিনে এনে বসিয়েছিলেন সুন্দর এক মূর্তি, যা এখনো টিকে আছে। এপিটাফে তিনি তার স্বামীকে উল্লেখ করেছেন, “A fond wife’s tribute to her deeply mourned and best of husbands Chtchick Avietick Thomas.” #
No comments